Advertisement
E-Paper

গ্রামে ঢুকে গুলি চালিয়ে সঙ্গীকে নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা

দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়াল গোপালনগরের গ্রামে। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়ে গ্রামবাসীদের হাতে আটক এক দুষ্কৃতীকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তার সাগরেদরা। মারধর করে কয়েকজনকে। একটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুর হয়েছে এক গ্রামবাসীর মোটরবাইকও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৬
গ্রামে মোতায়েন পুলিশ।ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

গ্রামে মোতায়েন পুলিশ।ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়াল গোপালনগরের গ্রামে। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়ে গ্রামবাসীদের হাতে আটক এক দুষ্কৃতীকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তার সাগরেদরা। মারধর করে কয়েকজনকে। একটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুর হয়েছে এক গ্রামবাসীর মোটরবাইকও। পরে বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায়ের নেতৃত্বে গোপালনগর ও বনগাঁ থানার পুলিশ এলাকায় যায়। গ্রেফতার করা হয়েছে ২ জনকে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলি ও একটি গুলির খোল উদ্ধার করেছে। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। আপাতত এলাকায় পুলিশ পিকেট বসেছে।

বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সুন্দরপুর দক্ষিণপাড়ার ঘটনা। কিন্তু কেন দুষ্কৃতীদের এ হেন আক্রোশের সাক্ষী থাকল গ্রাম?

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে কলেজ ছাত্র অতনু রায় বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে ফোনে মায়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তাঁর মা থাকেন ভিনরাজ্যে। অভিযোগ, রাস্তা দিয়ে তখন কয়েকজন মদ্যপ যুবক মোটরবাইকে যাচ্ছিল। অতনুকে তারা অত রাতে ফোনে কথা বলতে দেখে সন্দেহ করে, ওই যুবক তাদের গতিবিধি সম্পর্কে পুলিশকে খবর দিচ্ছে।

ওই মদ্যপ ব্যক্তিরা গরু পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। তারা অতনুকে প্রথমে গালিগালাজ করে। ওই যুবক বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, তিনি পুলিশের সঙ্গে নয়, নিজের মায়ের সঙ্গে কথা বলছেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা!

দুষ্কৃতীরা অতনুকে মারধর করে। তাঁর বাবা অশোকবাবু ও এলাকার লোকজন ছুটে আসেন। তা দেখে এক মদ্যপ পালিয়ে যায়। একজনকে এলাকার লোকজন ধরে ফেলে। তাকে মারধর করে একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়।

এ দিকে, সেই খবর পেয়ে ওই দুষ্কৃতীর সঙ্গীসাথীরা হই হই করে ঢুকে পড়ে গ্রামে। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। গ্রামবাসীদের দাবি, প্রায় ৬ রাউন্ড গুলি ছোড়ে গুন্ডাবাহিনী। পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, ২ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

এ দিকে, দুষ্কৃতীদের ওই মূর্তি দেখে ভয়ে গ্রামবাসীরা যে যে দিকে পারেন ছুট লাগান। আটকে রাখা সঙ্গীকে কোনও রকম প্রতিরোধ ছাড়াই ছাড়িয়ে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, সে সময়ে তারা অতনুর জ্যাঠা, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মী অনন্ত রায়-সহ কয়েকজনকে মারধরও করে। হামলা চালানো হয় অশোকবাবুর বাড়িতে। বারান্দার বেড়া ও দরজা ভেঙে দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ আসে। শুরু হয় তল্লাশি। রাতেই সফিকুল মোল্লা ও নুর আলম বিশ্বাস নামে দুই দুষ্কৃতীকে এলাকা থেকে ধরা হয় বলে জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, গ্রামবাসীর চোখে-মুখে আতঙ্ক। এক দোকানদার জানালেন, সন্ধ্যার পরে আর দোকান খুলে রাখার সাহস নেই। দুষ্কৃতীরা এই এলাকায় এতটাই বেপরোয়া। বাসিন্দারা অনেকে জানালেন, পুলিশ চলে গেলে তারা ফের আসবে বলে শাসিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

গরু পাচারকে কেন্দ্র করে গোপালনগর এলাকা বহু দুষ্কৃতী তাণ্ডবের সাক্ষী। তবে ইদানীং দিনের আলোয় পাচার কমেছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় মানুষজন। কিন্তু দুষ্কৃতীদের উৎপাত পুরোপুরি কমেনি। রাতের দিকে পাচার এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। এক যুবকের কথায়, ‘‘পাচারকারীরা কিছু দিন আগেও এলাকায় বোমা ফাটিয়েছে। এক গাড়ি চালককে মারধর করেছে।’’

স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘রাজনৈতিক মদতে দুষ্কৃতীরা শান্ত এলাকাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। পুলিশকে বলা হয়েছে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য।’

Anti Socials Village Firing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy