মূর্তি বায়না দিতে এসেছিলেন একটি ক্লাব থেকে। কিন্তু দাম শুনেই পিছু হাঁটলেন তাঁরা। বেশির ভাগই এখন এমনটাই হচ্ছে বলে জানান শিল্পীরা।
জিনিসের দাম বেড়েছে। শিল্পীরা যেমন খরচ করে প্রতিমা তৈরি করছেন সেই অনুযায়ী দাম পাচ্ছেন না ডায়মন্ড হারবার মহকুমার শিল্পীরা।
কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন ব্লকে শিল্পীরা প্রতিমা তৈরি করছেন। এ বার তা যাবে বিভিন্ন গ্রামের মণ্ডপে মণ্ডপে। ইতিমধ্যে বায়নাও দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু একটু বেশি দাম চাইলেও ক্লাবকর্তাদের মুখ ভাড় হচ্ছে বলে দাবি শিল্পীদের।
প্রতিমা শিল্পীরা জানান, আগের বছরও প্রতিমা ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় দেওয়া গিয়েছে। কিন্তু এ বার সেই প্রতিমা আরও দু-তিন হাজার টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
শিল্পীরা জানান, প্রতিমা তৈরির মূল উপকরণ মাটি। আগের বছর লরি পিছু আড়াই হাজার টাকায় মাটি মিলেছে। এ বারে সেই মাটি লরি পিছু সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। পাটের দড়ির দাম ছিল কিলো প্রতি ৮০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। পাটের দামও বেড়ে গিয়েছে। বাঁশের দাম হয়েছে ২০০ টাকা। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে খড়ের দামও। তা ছাড়া প্রতিমা তৈরির শ্রমিক ও শিল্পীদের মজুরিও বেড়ে গিয়েছে। ফলে প্রতিমার দামও বেড়েছে।
ফলতার ফতেপুর গ্রামের প্রতিমা শিল্পী রতন চিত্রকর প্রায় তিরিশ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করছেন। তাঁর তৈরি প্রতিমা বিদেশেও পাড়ি দিয়েছে বহুবার। এ বারে তিনি ৮০টি ঠাকুর তৈরি করছেন। মাস চারেক আগে থেকেই ২৫ জন শ্রমিক ও শিল্পী তাঁর কারখানায় কাজ করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিমার দাম না বাড়ালে এ বারে পেরে উঠতাম না। সব জিনিসেরই তো দাম বাড়ছে। ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় আট লক্ষ টাকা লোন নেওয়া হয়েছে।’’
তবে দাম বাড়াটা যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না ক্লাবকর্তারা। একই কথা শোনালেন মন্দিরবাজারের এক প্রতিমা শিল্পী জয়দের খামারুও। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু কাঁচামাল কেন রং থেকে প্রতিমার সাজ সবকিছুরই দাম বেড়েছে।’’
একই মণ্ডপে বছরের পর বছর প্রতিমা পাঠানো হয়। তাঁদের সঙ্গে আর কতই বা দরাদরি করা যায়।