গভীর রাতে বাড়িতে চড়াও হয়ে এক মহিলাকে কুপিয়ে খুনের ঘটনা ঘটল হাবরার খারো এলাকায়। নিহতের নাম কল্যাণী বৈরাগী (৪৫)। তাঁর স্বামী ভবেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে আরজিকর হাসপাতালে।
কল্যাণীদেবীর ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে কালীরাম বিশ্বাস ও তিলক বিশ্বাস নামে স্থানীয় দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, পুরনো একটি খুনের বদলা নিতেই কল্যাণীকে খুন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে খারো এলাকার বাসিন্দা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র নৃপেন মণ্ডলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছিল। দিন কয়েক পরে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে একটি কলাবাগানে মাটি খুঁড়ে নৃপেনের দেহ উদ্ধার হয়।
ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ কল্যাণী ও তাঁর দুই নাবালক ছেলেকে গ্রেফতার করে। ধরা পড়ে এলাকার দুষ্কৃতী নিউটন মণ্ডলও। নাবালক দুই ভাইকে সল্টলেকের জুভেনাইল কোর্টে তোলা হয়েছিল। তাদের হোমে পাঠানো হয়েছিল। কল্যাণী কয়েক মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান। পরবর্তী সময়ে বাড়ি ফেরেন সকলে। সেই মামলা আজও চলছে। কিন্তু এলাকার মানুষ কল্যাণী ও তার দুই ছেলের গ্রামে ফিরে আসাটা মেনে নিতে পারেননি। পাড়ার কোনও পরিবারে তাদের সঙ্গে সম্পর্কও রাখত না। বিভিন্ন সময়ে এলাকার মানুষের সঙ্গে বিবাদ বাধত কল্যাণীদের।
অভিযোগ, পুরনো শক্রুতার জেরেই এলাকার চারজন বুধবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ কল্যাণীর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে ঘর থেকে টেনে বের করে এনে ভোজালি দিয়ে কোপায়। পুলিশকে তাঁর এক ছেলে জানিয়েছে, দুই ভাই বিশ্বজিৎ ভয়ে পালায়। মায়ের উপরে হামলা ঠেকাতে গেলে তাদের বাবাকেও কোপানো হয়।
পুলিশ রাতেই কল্যাণী ও ভবেনকে উদ্ধার করে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আনে। কিন্তু কল্যাণীর দেহে ততক্ষণে প্রাণ নেই।
বৃহস্পতিবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করায় বাসিন্দাদের ক্ষোভ আছে। মিথ্যা মামলায় তাদের ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেন অনেকেই। ধৃতেরাও পুলিশকে জানিয়েছে, তারা কোনও ভাবেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, নৃপেনকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের চরম শাস্তি চেয়েছেন তাঁরা। ওই রাগেই কল্যাণীকে খুন করা হল পুলিশের অনুমান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy