ঐতিহ্যবাহী: বনগাঁ হাইস্কুল প্রাঙ্গণ (বাঁ দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
নান্দনিকতা ও আধুনিকতার মেলবন্ধনে তৈরি হয়েছে বনগাঁ হাইস্কুলের পরিকাঠামো। ২৮ জানুয়ারি স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান। ২৯ জানুয়ারি, রবিবার পুনর্মিলন উৎসব। প্রাক্তনীরা অনেকেই আসছেন দেশ-বিদেশ থেকে।
শিক্ষাদানের চেনা ছকের বাইরে বনগাঁ হাইস্কুল স্থানীয় ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন এখানকার মানুষ। ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত শহর বনগাঁয় ১৮৬৪ সালে ‘মিডল ইংলিশ স্কুল’ নামে আত্মপ্রকাশ করেছিল স্কুলটি। ১৮৮৬ সালে হয় ‘হায়ার ইংলিশ।’ সার্ধশতবর্ষ পেরিয়ে সেই স্কুল আজ স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত।
ক্লাসে ঢোকার মুখে অপু-দুর্গা, সর্বজয়ার ছবি। এঁকেছে নবম শ্রেণির কৃষ্ণার্জুন বিশ্বাস। ক্লাসঘরের বাইরের দেওয়ালে সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৬টি বইয়ের প্রচ্ছদ। ২৫টি শ্রেণিকক্ষের নাম বিভূতিভূষণের লেখা বইয়ের নামে— পথের পাঁচালি, ইছামতী, মৌরীফুল, আরণ্যক, চাঁদের পাহাড়...। স্কুলের প্রাক্তনী বিভূতিভূষণকে এ ভাবেই স্কুলের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছেন পরবর্তী প্রজন্মের ছাত্র-শিক্ষকেরা।
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রার্থনা-চত্বরে গড়া হয়েছে ‘অনুবর্তন’ মঞ্চ। সমৃদ্ধ সংগ্রহশালায় রয়েছে পথের পাঁচালির পাণ্ডুলিপি। আধুনিক পাঠদানের জন্য রয়েছে আলাদা ঘর, কম্পিউটার ল্যাব, স্মার্ট ক্লাস-রুম। প্রিয় ‘হেড স্যর’ জগদীশচন্দ্র ইন্দ্রের স্মৃতিতে তৈরি হয়েছে বাতানুকূল অডিটোরিয়াম। বাৎসরিক অনুষ্ঠানে কাঁঠালতলায় রামমোহন, নজরুল ও এপিজে আব্দুল কালামের মূর্তি উন্মোচন ও পুরস্কার বিতরণ করবেন সুনীল দে, সুদীন চট্টোপাধ্যায়ের মতো শিক্ষাবিদেরা। প্রাক্তন ছাত্রদের পত্রিকা ‘পক্ষপুট’ উদ্বোধন করবেন সাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুমদার।
দেশ-বিদেশের নানা প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন এই স্কুলের কৃতীরা। নানা পেশার পাশাপাশি বনগাঁর অধুনা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অনেকেই এই স্কুলের প্রাক্তনী। তাঁদের মধ্যে আছেন গোপাল শেঠ, দেবদাস অধিকারী, শঙ্কর আঢ্যেরাও। পুনর্মিলন উৎসবের অনুষ্ঠানে থাকার ইচ্ছে আছে বলে জানালেন তিন জনই। ভিয়েতনাম থেকে সমাবর্তনে যোগ দিতে আসছেন রিপন সাহা। বললেন, ‘‘দেশের টান তো রয়েছেই, মনে হয় স্কুলের উপরেও টান দিন দিন বাড়ছে।’’
উৎসবের খুঁটিনাটি দেখছেন দীপাঞ্জয়, সুশোভন, সুজিত, রতন, জয়দীপ রায়ের মতো প্রাক্তনীরা। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়ার জন্য মুখিয়ে সকলে। আর এক প্রাক্তনী অনুপম চক্রবর্তী জানালেন, ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপেও দাদা, বন্ধুদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। সবাই চাইছে কিছুটা সময় বের করে যেন হাজির থাকতে পারে অনুষ্ঠানে। ‘স্কুল, বন্ধু আর আড্ডা’ নিয়ে কথা বলতে আসছেন চন্দ্রিল ভট্টাচার্য।
স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি প্রসেনজিৎ ঘোষ এবং প্রধান শিক্ষক কুণাল দে— দু’জনেই এই স্কুলের ছাত্র। জানালেন, উৎসবের দিনে স্কুলে এলেই মিলবে ‘সারপ্রাইজ গিফট’!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy