নিউটাউনে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলেন নদিয়ার যুবক সৌমিত্র রায়। সমস্ত নথি এবং সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মামলার ছ’মাসের মধ্যে সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক। বুধবার তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল বারাসত পকসো আদালত। পাশাপাশি, দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নিউটাউনে লোহাপুল খাল সংলগ্ন ঝোপে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয় তাকে। ঘটনার তদন্ত শুরু করে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ মেলে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বোনের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় গৌরাঙ্গনগরের বাসিন্দা ওই কিশোরী। বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে মায়ের উদ্দেশে একটি চিঠি লেখে অভিমানী মেয়ে। জগৎপুরের কাছে গিয়ে রাগ ভাঙে তার। ক্লান্তও হয়ে পড়েছিল হাঁটতে হাঁটতে। বাড়ি ফেরার জন্য একটি টোটো ধরেছিল সে। ওই টোটোটি চালাচ্ছিলেন সৌমিত্র।
মেয়েটিকে নিশ্চিন্তে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে টোটোয় তোলেন যুবক। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হয়নি কিশোরীর। পরের দিন, ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে ১৪ বছরের মেয়েটির অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার হয়। ঊর্ধ্বাঙ্গে ছিল নীল-খয়েরি রঙের হুডি।
পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। রক্তের দাগও মেলে। তদন্তে নেমে ৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয় ওই টোটোচালককে। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘আদালতে মেডিক্যাল রিপোর্ট, ডিজিটাল, টেকনিক্যাল এবং বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স-সহ একগুচ্ছ প্রমাণ পেশ করা হয়। তাতে ধর্ষণ এবং খুনে সৌমিত্র রায়ের যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে। বুধবার তার সাজা ঘোষণা হল।’’
আরও পড়ুন:
পুলিশ জানিয়েছে, নিউটাউন, বাগুইআটি-সহ বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে টোটোচালকের সন্ধান পায় তারা। ধারাবাহিক জেরায় অপরাধের কথা কবুল করেন অভিযুক্ত। তিনি জানান, মেয়েটিকে টোটোতে উঠিয়ে নিউটাউনের একাধিক এলাকা ঘুরে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন লোহাপুল এলাকায়। সেখানেই পুরো কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন। সেখানে নাবালিকাকে ধর্ষণ ও হত্যা করে সৌমিত্র।
জানা গিয়েছে, সৌমিত্র ওরফে রাজ নামে ওই যুবক আদতে নদিয়া জেলার রানাঘাটের বাসিন্দা। নিউটাউনের আদর্শপল্লি এলাকায় বাড়িভাড়া নিয়ে থাকতেন।