Advertisement
E-Paper

উৎসবে মেতেছে শিল্পাঞ্চল, নাজেহাল পুলিশ কর্তারা

পানিহাটি থেকে নৈহাটি ডিসেম্বর পড়তেই শুরু হয়ে গিয়েছে শহরভিত্তিক নানা উৎসব। বইমেলা, খাদ্যমেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছে। সোদপুর, বরাহনগরে সার্কাস দেখার ভিড় তো আছেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২১

যানজট, দূষণ, মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যার জনপদ উত্তর শহরতলির ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। গঙ্গাপারের এই হেরিটেজ শিল্পাঞ্চলের আনাচে কানাচে ডাচ থেকে বৃটিশদের শাসনকালের স্মৃতি চিহ্নও অনেক। এমনিতেই জনসংখ্যা বেশি। তার মধ্যে শীতের মরসুমে এখানেই বাড়তি ভিড় জমিয়েছে মেলা, উৎসব, পিকনিক আর দর্শনীয় জায়গাগুলি দেখতে আসা মানুষেরা। যা সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন পুলিশ কর্তারা।

পানিহাটি থেকে নৈহাটি ডিসেম্বর পড়তেই শুরু হয়ে গিয়েছে শহরভিত্তিক নানা উৎসব। বইমেলা, খাদ্যমেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছে। সোদপুর, বরাহনগরে সার্কাস দেখার ভিড় তো আছেই।

বড়দিনে ব্যারাকপুরের গঙ্গার ঘাট সংলগ্ন পার্ক, গির্জাগুলিতে প্রায় ৮ লক্ষ মানুষের ভিড় হয়েছিল বলে পুলিশ-প্রশাসনের দাবি। সেখানে এক সপ্তাহ বা পনেরো দিন ধরে চলা এই ধরনের মেলাগুলিতে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষের বাড়তি ভিড়ে খাবি খাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন। প্রতিদিনই ভিআইপি, ভিভিআইপি’দের ঘিরে যে ভিড় থাকছে, তা সামলাতে হচ্ছে। কখনও মন্ত্রী তো কখনও মুম্বইয়ের খ্যাতনামা শিল্পীদের ভিড়।

বুধবার নৈহাটি উৎসবে আশা ভোঁসলেকে দেখতে স্টেশনের বাইরের রাস্তায় দীর্ঘ লাইন পড়ে। টিকিট বা আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়া ঢোকার অনুমতি ছিল না কারও। তাই জায়েন্ট স্ক্রিনের সামনে হামলে পড়েন লোকজন। কে কার পা মাড়িয়ে দিচ্ছে, কার কনুইয়ের গুঁতোয় কার নাক ফেটে রক্ত বেরোচ্ছে— তা নিয়ে পুলিশের কাছে নালিশ হয়। মূলত শাসকদলের নেতা, মন্ত্রীদের পৃষ্ঠপোষকতায় হওয়া এই উৎসব বা মেলাগুলিতে পরষ্পরকে টক্কর দেওয়ারও প্রবণতা থাকে। কে কত বড়মাপের অভিনেতা বা শিল্পী আনলেন, কোন মেলা বা উৎসবে দৈনিক কত ভিড় হল— এ সব নিয়ে চলে ঠান্ডা লড়াই। আর তাতেই ধুলো, ধোঁওয়ায় ঢাকা প্রায় ৪৭ লক্ষ বাসিন্দার এই শিল্পাঞ্চলে নাভিঃশ্বাস ওঠার জোগাড় হয়।

ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের বিদায়ী পুলিশ কমিশনার সুব্রত মিত্র বলেন, ‘‘এমনিতেই এত আবাসন হচ্ছে, শিল্পাঞ্চলে জনসংখ্যা বাড়ছে। তার উপরে পুজোর ভিড় কাটতে না কাটতেই ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গঙ্গার ধারে নানা দর্শনীয় জায়গা ও পিকনিকের জন্য ভিড় হয়। মেলা ও উৎসবগুলি প্রায় একই সঙ্গে চলে। বাইরে থেকেও প্রচুর লোক আসেন। নজরদারি বাড়াতে হয়।’’ মেলার ভিড়ে ট্রেন, বাসে ভিড় বাড়ে। চুরি ও পকেটমারির ঘটনাও এই সময়ে বেশি ঘটে।

এমনিতেই শীতে ধুলোর পরিমাণ বেশি হয়। গাড়ির সংখ্যা বাড়তে থাকায় ধুলো আর ধোঁওয়ায় সীসার পরিমাণও বেড়েছে। ব্যারাকপুরের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ দীপঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘শীতের সময়ে সব থেকে বেশি নাক-কান-গলার সংক্রমণ হয়। মেলাগুলিতেও পায়ে পায়ে ধুলো ওড়ে। নাক, মুখ ঢেকে কেউ তো আর ঘোরে না। ফলে অসুস্থতা বাড়ে।’’

ধুলো ঢাকতে পুরসভাগুলি জলের ট্যাঙ্ক পাঠানোর কথা জানিয়েছে। ব্যারাকপুরের পুরপ্রধান উত্তম দাস, হালিশহরের অংশুমান রায়রা বলেন, ‘‘মেলা কমিটিকে আমরা সব সময়েই মাঠে জল ছিটানোর কথা বলি। সে জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তাও দেওয়া হয়।’’

কিন্তু বাস্তবটা হল, শহরতলির বাসিন্দারা ছাড়াও আশপাশের জেলাগুলি থেকে এখানকার মেলাতে প্রচুর লোক আসে। জল ছিটোলেও লক্ষ লোকের ভিড়ে মুহূর্তে মাঠ ফের ধুলোময় হয়। ভিড়ের মধ্যে জল ছিটিয়ে ধুলো তাড়ানোর উপায় থাকে না বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

Barrackpore New Year Celebration Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy