Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গুলিতে জখম বৃদ্ধা

বাদুড়িয়ার মাগুরুতি-শ্রীরামপুর গ্রামের ঘটনায় জখম গৌরীবালা সর্দারের চিকিৎসা চলছে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে। এই ঘটনায় আরও দু’জন আহত হয়েছেন।

চিকিৎসাধীন: হাসপাতালে বৃদ্ধা। — নিজস্ব চিত্র

চিকিৎসাধীন: হাসপাতালে বৃদ্ধা। — নিজস্ব চিত্র

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০৪:০৪
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচনে রক্ত ঝরার হাত থেকে রেহাই মিলল না পঁচাত্তর বছরের বৃদ্ধারও।

বাদুড়িয়ার মাগুরুতি-শ্রীরামপুর গ্রামের ঘটনায় জখম গৌরীবালা সর্দারের চিকিৎসা চলছে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে। এই ঘটনায় আরও দু’জন আহত হয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল থেকে বসিরহাটের ১০টি ব্লকের বেশির ভাগ বুথে ছাপ্পা ভোট দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল শুরু হয়। সকাল থেকে বাদুড়িয়ার মাগুরুতি শ্রীরামপুর জুনিয়র হাইস্কুলে ঠিকঠাকই ভোট চলছিল। বেলা ১টা নাগাদ হঠাৎ একদল দুষ্কৃতী গুলি-বোমা ছুড়তে ছুড়তে বুথের দখল নেয়।

গ্রামের মানুষ প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে পড়লেও পরে একজোট হতে শুরু করেন। গণ্ডগোলের মধ্যে নাতি পড়ে থাকতে পারে মনে করে গৌরীবালা ঘটনাস্থলের দিকে এগোচ্ছিলেন। গুলি এসে লাগে তাঁর গলায়। রক্তাক্ত বৃদ্ধাকে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখে গ্রামের মানুষ আরও খেপে যান। তাঁরা দুষ্কৃতীদের তাড়া করলে তারা দু’টি বাইক ফেলে পালায়। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী সেই দু’টি বাইকে আগুন ধরিয়ে দেন। বুথ থেকে ভোট বাক্স এবং ব্যালট-সহ অন্যান্য সরঞ্জাম রাস্তায় এনে ফেলে তাতেও আগুন লাগিয়ে দেন। তৃণমূল প্রার্থীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে, এই অভিযোগে গ্রামের মানুষ প্রার্থীর বাড়িও ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে বাদুড়িয়া থানার ওসি বাপ্পা মিত্র বিশাল পুলিশ নিয়ে গ্রামে গিয়ে প্রথমে উত্তেজিত জনতার ঘেরাওয়ের মুখে পড়েন। পরে জনতা শান্ত হয়।

চিকিৎসক সর্বজিৎ সরকার বলেন, ‘‘গুলি ওই বৃদ্ধার শিরদাঁড়া এবং খাদ্যনালীর মাঝে আটকে রয়েছে। দ্রুত অস্ত্রোপচার দরকার। আরজিকর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।’’

এ দিন বসিরহাটের মাটনিয়ায় ছাপ্পা ভোট মারা হচ্ছে, এই অভিযোগে ক্ষুব্ধ জনতা ভোটবাক্স পুকুরের জলে ফেলে দেয়। বাদুড়িয়ার মামুদপুর গ্রামে ছাপ্পা ভোট হচ্ছে বলে গ্রামের মানুষ পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। সীমান্তবর্তী জয়নগর গ্রামে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলেও অভিযোগ। গ্রামের একাংশের দাবি, দুষ্কৃতীরা বোমা-গুলি ছুড়ে বুথ দখল করে ছাপ্পা মারে।

এ বিষয়ে জেলা কংগ্রেসের (গ্রামীণ) সভাপতি অমিত মজুমদার বলেন, ‘‘এ দিন তৃণমূল সর্বত্র বোমা-গুলি ছুড়ে ভোট লুঠ করেছে। পুনর্নির্বাচনের দাবি করে আমরা নির্বাচন কমিশনকে ফ্যাক্স পাঠিয়েছি।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি হাজারিলাল সরকার বলেন, ‘‘সর্বত্র তৃণমূলের লোকজন দুষ্কৃতীদের দিয়ে ভোট লুঠ করিয়েছে। তাই পুনরায় ভোটের দাবি করছি।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভোটের নামে এমন প্রহসন আগে কখনও বাংলার মানুষ দেখেনি।’’

সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিশ আলি অবশ্য বলেন, ‘‘বিরোধীদের জন্য ছোটখাটো দু’একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও ভোট এমনিতে সুষ্ঠু ভাবেই হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE