Advertisement
E-Paper

‘সন্ত্রাস’ নিয়ে সচেতন করতে বন্‌ধ হাবড়ায়

বিজেপির এই ‘সন্ত্রাস’ সম্পর্কে মানুষকে ওয়াকিবহাল করতে শনিবার হাবড়া১ ব্লকের বেড়গুম ১ এবং ২ পঞ্চায়েত এলাকায় সকাল ৬টা থেকে বারো ঘণ্টার বন‌্ধ ডাকে তৃণমূল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৮ ০১:০৮
সুনসান: বন্ধ দোকানপাট। ছবি: সুজিত দুয়ারি

সুনসান: বন্ধ দোকানপাট। ছবি: সুজিত দুয়ারি

ভোটের দিন হামলায় প্রাণ গিয়েছে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী বিপ্লব সরকারের। ওই ঘটনায় তৃণমূলের অভিযোগের আঙুল বিজেপির দিকে। হাবড়ায় সব মিলিয়ে ভোটের দিন খুন হয়েছেন তৃণমূলের ৩ জন। সব ক্ষেত্রেই বিজেপিকে দায়ী করছেন তৃণমূল নেতারা। বিজেপির এই ‘সন্ত্রাস’ সম্পর্কে মানুষকে ওয়াকিবহাল করতে শনিবার হাবড়া১ ব্লকের বেড়গুম ১ এবং ২ পঞ্চায়েত এলাকায় সকাল ৬টা থেকে বারো ঘণ্টার বন‌্ধ ডাকে তৃণমূল।

এলাকায় নির্বিবাদী মানুষ বলেই পরিচিত ছিল বিপ্লবের। সরাসরি দলের মিটিং-মিছিলেও তেমন দেখা যেত না। বাসিন্দারা অনেকেই এই খুনের ঘটনা মানতে পারছেন না। তৃণমূল যে মৌনী মিছিল করেছে এ দিন, সেখানে বহু অরাজনৈতিক মুখও চোখে পড়েছে। এলাকায় দোকানপাট খোলেনি। গাড়ি চলাচলও বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি এখনও থমথমে। জামতলায় হাবড়া-বসিরহাট সড়কও কিছুক্ষণের জন্য অবরোধ করা হয়।

তৃণমূলের হাবড়া ১ ব্লক কমিটির সভাপতি অজিত সাহা বলেন, ‘‘আমরা পাল্টা খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। না হলে সব ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতেই পারতাম। মানুষকে শুধু বিজেপির সন্ত্রাস সম্পর্কে সচেতন করতেই এই বন‌্ধ।’’ দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছে তৃণমূল।

সন্ত্রাস, খুনের অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে চলেছে বিজেপি। দলের বারাসত জেলা সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ জনরোষে বেড়গুমে তৃণমূল প্রার্থী খুন হয়েছেন। এলাকার মানুষ সবই জানেন। অথচ আমাদের দোষারোপ করা হচ্ছে। জেলার মন্ত্রী আমাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য করে পরিবেশ অশান্ত করেছেন।’’

বিরোধীদের পাল্টা অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা দিতে তাঁদের প্রার্থীদেরই বাধা দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। সর্বত্র প্রার্থী দেওয়া যায়নি সে কারণেই। ভোটের দিন শাসকদলের দুষ্কৃতীরা অবাধে বুথ দখল করে ছাপ্পা দিয়েছে। এমনকী, ভোট গণনাকেন্দ্রের মধ্যেও কারচুপি করা হয়েছে বলে বিজেপির অভিযোগ।

এক দিকে যখন বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে হাবড়ায় বন‌্ধ ডাকছে তৃণমূল, সে দিনই যশুরে তৃণমূলের দুই কর্মীকে পিটিয়ে খুনের ঘটনার তদন্তভার হাতে পেল সিআইডি।

ভোটের দিন এখানে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছিল ওই দু’জনের। সিআইডির একটি প্রতিনিধি দল এ দিন যশুরে যেখানে খুন হয়েছিলেন দু’জন, সেই এলাকা ঘুরে দেখেন। কথা বলেন নিহত উজ্জ্বল শূর ও সুশীল দাসের পরিবারের সঙ্গে।

মুখ্যমন্ত্রী নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন। শনিবার উজ্জ্বলের স্ত্রী লিপি বলেন, ‘‘২ লক্ষ টাকা দিয়ে আর কত দিন চলবে। একটা কাজ পেলে বরং খেয়ে-পরে বাঁচতে পারব।’’ কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

সুশীলের দিদি সন্ধ্যা বিশ্বাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, তিনি যেন দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করেন।’’

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে সিআইডি তদন্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। দলের হাবড়া ১ ব্লক সভাপতি অজিত সাহা বলেন, ‘‘জোড়া খুনে বিজেপি সক্রিয় ভাবে জড়িত বলে আমরা অভিযোগ করেছিলাম।’’

বিজেপির জেলা সহ সভাপতি বিপ্লব হালদারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সিআইডি কেন, আমরা চাই ঘটনার সিবিআই তদন্ত হোক, যাতে প্রকৃত সত্য সামনে আসে। জনরোষেই ওদের মৃত্যু হয়েছে, সেটা সকলেই জানা দরকার।’’

West Bengal Panchayat Elections 2018 Strike Poll Violence TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy