Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Arjun Singh

Arjun Singh: বেসুরো অর্জুন কি বিদ্রোহী হয়ে উঠছেন, দলের পাঁচ ‘ত্রুটি’ বলে অন্দরের কথা আনলেন প্রকাশ্যে

পাটশিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে অর্জুনের। এই আবহে ব্যারাকপুরের সাংসদের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।

আবারও বেসুরো অর্জুন সিংহ।

আবারও বেসুরো অর্জুন সিংহ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২২ ১৮:৫৯
Share: Save:

দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে সোমবার বৈঠক করার কথা ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের। তার ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে আবারও বেসুরো অর্জুন। এ বার সুর এতটাই চড়া যে অনেকে মনে করছেন ‘বিদ্রোহী’ হয়ে উঠছেন অর্জুন।
রাজ্য বিজেপির সংগঠন নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। উগরে দিয়েছেন ক্ষোভও। রাজ্যের পাটশিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে অর্জুনের। এই আবহে ব্যারাকপুরের সাংসদের সোমবারের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

• অজুর্নের ‘বহিরাগত’ আক্ষেপ


অর্জুনের আক্ষেপ, ‘‘আমি দলের সাংসদ হয়েছি। দলের সহ-সভাপতি রয়েছি। জানি না দলের কাজে কাল লাগব কি না। আজ পর্যন্ত পদে আছি। কাল যদি পদে না রাখে তো থাকব না। যাঁরা তৃণমূল থেকে গিয়েছেন তাঁদেরকে দলের কিছু লোক ভাবেন এরা ‘বহিরাগত।’ এটা তো কোনও নতুন ব্যাপার নয়। বঙ্গ বিজেপির কিছু লোক দলের ভাল চায় না। তাঁরা এ সব নিয়ে আলোচনা করেন, ভাবেন। আমরা এসেছিলাম মনপ্রাণ দিয়ে এই দলটাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। ২০১৯-এ ভোটের সময় বিজেপির এক জন ভাল নেতা বলেছিলেন, ‘মোদীজি তো ক্ষমতায় আসবেন। অর্জুন সিংহকে হারাতে হবে।’ আপনি আমাকে চেয়ার দিয়েছেন, কলম দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কালি নেই। তা হলে লাভটা কী আছে? ঢাল নেই, তলোয়ার নেই। নিধিরাম সর্দার।’’

• অর্জুনের নিশানায় বিজেপির ‘দলবাজি’


অর্জুনের বক্তব্য, ‘‘আপনাকে সভাপতি বানিয়ে দিলাম। কিন্তু আপনার কোনও ক্ষমতা নেই। সভাপতি আমি আর, দল সঞ্চালনা করবেন আপনি, তা তো হয় না। আমি জুটমিলের সংগঠনটা বুঝি। কিন্তু আমাকে করতে না দিয়ে আপনি যদি সংগঠন করেন তা হলে হবে? সে আপনি অন্য কোনও কাজ ভাল করতে পারেন। কিন্তু আপনি সংগঠন বুঝবেন না। যিনি যেটা বোঝেন তাঁকে সে ভাবে কাজে লাগালে ভাল হয়। এখানে নিজের গ্রুপ বানানোর চেষ্টা আছে। দলবাজি আছে। দল বড় হলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকে। সিপিএমে ছিল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ছিল না এটা বলা যাবে না। বুদ্ধবাবু-সুভাষবাবুর লড়াই থাকত। বর্ধমান লবির সঙ্গে অন্য লবির লড়াই থাকত। তৃণমূলেও আছে। কিন্তু ভোটের সময় এক হয়ে যায়, কিন্তু আমাদের দলে অন্য সময় দেখায় যে এক আছি। কিন্তু ভোটের সময় আলাদা হয়ে যায়। এমন রেগে যাবে কি ভোটই দিতে যান না। তা হলে মানুষ গুরুত্ব দেবে কেন?’’

• অর্জুনের ‘বেইমান’ তোপ

অর্জুন বলেন, ‘‘আপনি যদি ভোটের সময় দলের সঙ্গে বেইমানি করেন তা হলে আপনি এক নম্বর বেইমান। আমার ক্ষমতা থাকলে আপনাকে বিজেপির ধারে কাছে আসতে দিতাম না। ভোটের সময় আমি তৃণমূলের হয়ে ভোট করাব বা অন্য দল হয়ে যাব, এই ধরনের রাজনীতি আমি এখানে এসে দেখছি। এঁরা সকলেই চিহ্নিত। সকলেই জানাশোনা ব্যক্তি।’’

• অর্জুনের ‘সংগঠন-শিক্ষা’

অর্জুনের মতে, ‘‘দলের সব কিছু আছে। কিন্তু তার উপযোগিতা বাংলায় কতটা আছে? আমাদের সংগঠনকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কেউ নেই। এই সংগঠন উপযুক্ত ভাবে চালানো গেলে অন্য কোনও দল ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এটা আমি এক জন সংগঠনের লোক হয়ে বলছি। কিন্তু বুথভিত্তিক সংগঠন নেই। যা আছে তাতে জল মেশানো আছে। সংগঠনিক লোকদের ফ্রি হ্যান্ড দেওয়া উচিত। তাঁদের কাজ করতে দেওয়া উচিত।

• অর্জুনের সংগঠন দাওয়াই

অর্জুনের বক্তব্য, ‘‘এই সিস্টেমে সংগঠন চালানো মুশকিল নয়। কিন্তু ভোটে জেতা মুশকিল। আপনি ঘরে বসে সংগঠন চালাচ্ছেন। আপনি খুব খুশি। কিন্তু ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ দিয়ে সংগঠন চলে না। এখন তো তাই চলছে। কিছু লোক ভাবেন এটাই হল রাজনীতি। বাংলায় রাজনীতি করতে গেলে তৃণমূল স্তর থেকে করতে হবে। কিন্তু নেতৃত্ব সোশ্যাল মিডিয়ায় আটকে রয়েছেন। এটা সকলে বলেন। সারা বাংলা বলছে। যাঁরা বিরোধী তাঁরাও বলেন, সমর্থকরাও বলেন। একট ছবিকে চার বার পোস্ট করে সংগঠন চলে? এই প্রশ্ন উঠলে নিশ্চয়ই বলব। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করা উচিত। এতে সংগঠনের লোকজনের ছবি প্রকাশ্যে চলে আসে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arjun Singh BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE