Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
BJP

BJP: এক সমীক্ষায় শেষ বিপ্লব-যুগ, বিজেপিতে মুখ্যমন্ত্রী পদ বড়ই নড়বড়ে, নজির অনেক

ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রী বদল নিয়ে চর্চা চললেও এটা নতুন কিছু নয় বিজেপিতে। রাজ্যে রাজ্যে বারবার মুখ্যমন্ত্রী বদল হয়েছে। নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতেও রয়েছে এমন অনেক নজির। হালফিলেই এমনটা ঘটেছে কর্নাটক, উত্তরাখণ্ডে। দিল্লিতে পাঁচ বছরের বিজেপি সরকারে তিন জন মুখ্যমন্ত্রী হন। উত্তরপ্রদেশেও দ্বিতীয়বার যোগী আদিত্যনাথকে মুখ করা হবে কি না তা নিয়েও গেরুয়া শিবিরে প্রশ্ন উঠেছিল। 

খুব কম বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীই পুরো মেয়াদ টিকেছেন।

খুব কম বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীই পুরো মেয়াদ টিকেছেন। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২২ ১৬:৫৪
Share: Save:

আচমকা বদলে গেল ত্রিপুরার রাজনৈতিক চিত্র। শনিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়লেন বিপ্লব দেব আর রবিবার সেই পদে শপথ নিয়ে নিয়েছেন রাজ্য সভাপতি মানিক সাহা। কিন্তু কেন?

বিজেপি সূত্রে খবর, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব একটি সমীক্ষা চালায় ত্রিপুরায়। আর তাতেই দেখা যায় বিপ্লবের নেতৃত্বে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে খুব ভাল ফল করা যাবে না। এর পরে আর অপেক্ষা করেননি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিপ্লবকে। যদিও দলেরই একাংশ বলছে, ত্রিপুরায় এখন বিরোধী শক্তি খুবই দুর্বল। ফলে আগামী বিধানসভা নির্বাচন খুব বেশি কঠিন হবে না। আর সত্যিই যদি রাজ্যে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া জোরালো হয়ে থাকে তবে এত কম সময়ে মানিক কি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন?

বিপ্লবকে সরিয়ে মানিককে মসনদে বসানোয় অবশ্য নতুন কিছু দেখছে না গেরুয়া শিবির। কারণ, এটা সকলেরই জানা যে বিজেপিতে মুখ্যমন্ত্রী আসন বড়ই নড়বড়ে। পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ করেছেন এমন মুখ্যমন্ত্রীর সংখ্যা নেহাতই কম। গুজরাতে নরেন্দ্র মোদী, উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ, রাজস্থানে বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া, হিমাচলে প্রেমকুমার ধুমল, ছত্তীসগড়ে রমন সিংহরা গোটা মেয়াদ বা তার বেশি সময় মুখ্যমন্ত্রী থাকলেও দিল্লি, গুজরাত, কর্ণাটক, উত্তরাখণ্ডে মাঝ পথে মুখ্যমন্ত্রী বদলের অনেক নজির রয়েছে। বসুন্ধরা ও যোগীকে প্রথম পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হতে সরিয়ে দেওয়ার জল্পনাও তৈরি হয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

কয়েকটি উদাহরণ দিলেই স্পষ্ট হবে বিজেপির নীতি। গুজরাতে কেশুভাই পটেল মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ২২১ দিন। ১৯৯৫ সালের ২১ অক্টোবর তাঁকে সরিয়ে আনা হয় সুরেশ মেহতাকে। আবার ২০০১ সালে কেশুভাই পটেলকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে আনা হয় মোদীকে। টানা প্রায় ১৩ বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকার পরে তিনি প্রধানমন্ত্রী হলে রাজ্যের দায়িত্ব পান আনন্দীবেন পটেল। কিন্তু তাঁকেও পুরো সময় না রেখে ২০১৭ সালে বিজেপি ভোটে লড়ে বিজয় রূপানিকে মুখ্যমন্ত্রী করে। এর পরে আবার ২০২১ সালে নতুন মুখ্যমন্ত্রী হন ভূপেন্দ্রভাই পটেল।

দিল্লিতে পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্য়ে দিল্লিকে তিনজন মুখ্যমন্ত্রী দেয় গেরুয়া শিবির। মদনলাল খুরানা, সাহিব সিংহ ভার্মা, সুষমা স্বরাজ। উত্তরাখণ্ডেও ২০১৬ থেকে ২০২২ পাঁচ বছরের বিজেপি সরকারে তিনজন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়াত, তীর্থ সিংহ রাওয়াত এবং পুষ্কর সিংহ ধামি। তবে ধামি দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন গত ২৩ মার্চ।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বদল দেখে গেরুয়া শিবিরে তেমন হইচই না থাকার কারণ কিছুদিন আগেই এমন নজির দেখা গিয়েছে কর্ণাটকে। ত্রিপুরার মতো দক্ষিণের এই রাজ্যেও বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা ২০২৩ সালে। সেখানেও মাত্র ২ বছর ২ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে। ২০২১ সালের ২৮ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন বাসবরাজ বোম্মাই। প্রসঙ্গত অতীতেও অল্প সময়ের জন্য তিন বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা। সেই তিন বারের মতো এ বারেও মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি তিনি।

আরও পড়ুন:
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Biplab Deb Manik Saha Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE