Advertisement
E-Paper

উস্তিতে বিজেপির কার্যালয় থেকে পদ্মের নেতার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার, নিখোঁজ ছিলেন সোমবার থেকে

উস্তি থানা এলাকায় বিজেপির দলীয় কার্যালয় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিজেপি নেতার রক্তাক্ত দেহ। তিনি মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া সেলের মিডিয়া কনভেনারের দায়িত্বে ছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ১০:২১
(বাঁ দিকে) উস্তিতে নিহত বিজেপি নেতা পৃথ্বীরাজ নস্কর। ঘটনাস্থলে পুলিশি তৎপরতা (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) উস্তিতে নিহত বিজেপি নেতা পৃথ্বীরাজ নস্কর। ঘটনাস্থলে পুলিশি তৎপরতা (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।

চার দিন নিখোঁজ থাকার পর বিজেপির দলীয় কার্যালয় থেকে উদ্ধার হল বিজেপি নেতার রক্তাক্ত দেহ। তিনি মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া সেলের মিডিয়া কনভেনারের দায়িত্বে ছিলেন। গত সোমবার রাত থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না বলে জানিয়েছে পরিবার। পুলিশ শুক্রবার দলীয় কার্যালয়ের ভিতর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করেছে। দেহটি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি থানার অন্তর্গত দ্বীপের মোড় এলাকার ঘটনা। মৃতের নাম পৃথ্বীরাজ নস্কর। কয়েক বছর আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তার পর থেকে সক্রিয় ভাবে দলের কাজ করতেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পৃথ্বীরাজের কাছে সব সময় তিনটি ফোন থাকত। রবিবার তাঁর বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান ছিল। বোনেদের কাছ থেকে ফোঁটা নিয়েছিলেন তিনি। তার পর সোমবার রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু আর ফেরেননি। তাঁর তিনটি ফোনেই বাড়ি থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ফোন বেজে যায়। পরিবারের অভিযোগ, ফোনটি কখনও চালু থাকছিল, কখনও তা বন্ধ করে রাখা হচ্ছিল। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে মৃতের পরিবার।

পৃথ্বীরাজের পরিবারের তরফে বৃহস্পতিবার উস্তি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। শুক্রবার রাতে পরিবারের সদস্যেরা জানতে পারেন, দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে তাঁর দেহ পড়ে আছে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তালা ভেঙে উদ্ধার করা হয় দেহ। তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে ডায়মন্ডহারবার পুলিশ মর্গে। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

কী কারণে এই হত্যা, কারা এর নেপথ্যে রয়েছেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্ত শুরু হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনও কারণ আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। মৃতের দাদা বলেন, ‘‘আমি বাড়িতে ছিলাম না। রাতে স্ত্রী আমাকে ফোন করে খবর দেয়, আমার ভাইকে খুন করা হয়েছে। আমি কিছু বলার মতো অবস্থায় নেই। কে বা কারা এই কাজ করেছে, আমার জানা নেই। যেখান থেকে ওর দেহ পাওয়া গিয়েছে, সেটি দলীয় কার্যালয় হলেও খুব একটা ব্যবহৃত হত না। বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল ওই ঘরে। আমরা খুনিদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’

এই ঘটনায় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের দিকে ইঙ্গিত করেছে তৃণমূল। এলাকার শাসকদলের যুবনেতা ইমরান হাসান বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের সময়ে ওদের হাতে প্রচুর টাকা এসেছিল। তার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা। বিজেপি খুনের রাজনীতি করে।’’ পাল্টা এই খুনের জন্য তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতা অশোক পুরকাইত বলেন, ‘‘চক্রান্ত করে এই হত্যা। পৃথ্বীরাজ সক্রিয় বিজেপি কর্মী ছিলেন। এখানকার সংগঠনে তাঁর বড় ভুমিকা ছিল। প্রশাসনের উপর আমাদের কোনও ভরসা নেই। বিজেপি করার অপরাধেই এই খুন।’’ দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিজেপি।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার নিহতের ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বালুরঘাট থেকে। তিনি জানান, নিহতের পরিবারের পাশে রয়েছে দল। সবরকম সাহায্য করা হবে তাঁদের। পরিবারের দাবি মেনে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত যাতে কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে করানো যায়, সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে, জানান সুকান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘পৃথ্বীরাজ অত্যন্ত নিরীহ ছিলেন। তাঁকে খুন করে দেহ পার্টি অফিসে রেখে যাওয়া হয়েছে। অথবা পার্টি অফিসের মধ্যেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। চার দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। ওঁর ভাইয়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলেছি। সঠিক তদন্ত চাইছি আমরা। দোষীদের গ্রেফতার করা হোক। খুনের নেপথ্যে তৃণমূলের হাত থাকতে পারে। পুলিশ কেন ফোনের লোকেশন দেখে ওঁকে খুঁজে বার করতে পারল না? পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ, বিশেষত দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশকে সম্পূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য ওই এলাকার পুলিশ অপদার্থ হয়ে রয়েছে। পার্টি নিহতের পরিবারের পাশে আছে। আর্থিক সাহায্যও করা হবে।’’

BJP Leader Murder Case South 24 Pargana BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy