Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নাবালিকা-বিয়ে বন্ধ করতে এগিয়ে আসছেন দোকানিরা

নাবালিকা বিয়ে বন্ধ নিশ্চিত করতে এ বার আরও আঁটঘাট বেঁধে কাজ করতে চাইছে বনগাঁ ব্লক প্রশাসন। ব্লককে ‘বাল্যবিবাহ শূন্য ব্লক’ হিসেবে গড়ে তোলাই লক্ষ্য।

কর্মশালা: বনগাঁ ব্লকে যোগ দিয়েছেন সব স্তরের মানুষ। নিজস্ব চিত্র

কর্মশালা: বনগাঁ ব্লকে যোগ দিয়েছেন সব স্তরের মানুষ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪০
Share: Save:

নাবালিকা বিয়ের ঘটনা এ রাজ্যে আকছার ঘটে। এই সব বিয়ের খবর অনেক সময় প্রশাসনের কর্তাদের কানে পৌঁছয়ই না। আবার অনেক সময়েই প্রশাসন খবর পেয়ে বিয়ের আসরে পৌঁছে সেই বিয়ে বন্ধও করে।

নাবালিকা বিয়ে বন্ধ নিশ্চিত করতে এ বার আরও আঁটঘাট বেঁধে কাজ করতে চাইছে বনগাঁ ব্লক প্রশাসন। ব্লককে ‘বাল্যবিবাহ শূন্য ব্লক’ হিসেবে গড়ে তোলাই লক্ষ্য। এ সংক্রান্ত রূপরেখা তৈরি করতে শনিবার একটি কর্মশালার আয়োজন হল। বনগাঁ বিডিও অফিসের সভাকক্ষে এই কর্মশালায় মহকুমাশাসক, বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, পঞ্চায়েত প্রধান, হাসপাতালের সুপার, চাইল্ড লাইন ও পুলিশ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ডাকা হয়েছিল ব্লকের পুরোহিত ও কাজিদের। নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করতে তাঁদের কাজে লাগানোর ঘটনা রাজ্যের অন্যত্র হলেও বনগাঁ ব্লকে এই প্রথম।

এ দিনের কর্মশালায় উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি ছিল নাপিত, মাছ-মাংসের ব্যবসায়ী ও ডেকরেটর্স ব্যবসায়ীদের।

তাঁদের কেন ডাকা হল?

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের আয়োজনে এঁদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। তাঁদের কাছে বিয়ের খবর আগাম আসে। ফলে তাঁরা যদি সচেতন হন এবং কোনও ভাবে জেনে নিতে পারেন মেয়ের বয়স, তবে তাঁরাও পুলিশকে খবর দিতে পারবেন। ব্যবসায়ীরা সব রকমের সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন। কর্মশালায় হাজির এক কাজি বলেন, ‘‘বিবাহ বিচ্ছেদ করাতে গিয়ে ইদানীং দেখা যাচ্ছে, বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ নাবালিকা বিয়ে।’’

এক মাংস ব্যবসায়ী কর্মশালায় প্রস্তাব দেন, যাঁরা বিয়ের কার্ড ছাপানোর কাজ করেন, তাঁদেরও এই ধরনের কর্মশালায় যুক্ত করা হোক। এবং তাঁদের নির্দেশ দেওয়া থাক, কার্ড ছাপানোর সময়ে তাঁরা যেন অবশ্যই পাত্রপাত্রীর বয়সের প্রমাণপত্র দেখেন। প্রস্তাবটি মনে ধরেছে মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ‘‘এ দিনের কর্মশালা থেকে অপ্রত্যাশিত ভাবে মূল্যবান কিছু পরামর্শ আমরা পেয়েছি। সেগুলি কাজে লাগানো হবে। পঞ্চায়েত এলাকার ক্লাবগুলিকে নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও করা হবে। সকলে মিলে নাবালিকা বিয়ে বন্ধের জন্য চেষ্টা করা হবে।’’

গোটা কর্মকাণ্ডের পিছনে রয়েছেন বনগাঁর বিডিও সঞ্জয়কুমার গুছাইত। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত স্তরেও কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে।’’ মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করা গেলে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যাও কমানো সম্ভব হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Workshop Teenage Marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE