অবরুদ্ধ। ছবি: শান্তনু হালদার।
মাস পয়লা হলেই টাকার জন্য হাহাকার মাত্রা ছাড়াবে, এই আশঙ্কাটা ছিলই। হাবরায় টাকা না পেয়ে শুক্রবার যশোর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান কিছু মানুষ। রেল অবরোধও করা হয়। তাঁদের উষ্মার কারণ, সরকারি প্রকল্পে বাড়ি বানানোর জন্য প্রথম পর্যায়ের টাকা পেলেও পরবর্তী পর্যায়ের টাকা তুলতে পারছেন না ব্যাঙ্ক থেকে। ফলে বাড়ি তৈরির কাজও এগোচ্ছে না।
কইপুকুরের বাসিন্দা গোপাল প্রামাণিক সরকারি প্রকল্পে পাকা বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির ৬৮ হাজার টাকা পেয়ে কিছু দিন আগে পুরনো বাড়ি ভেঙে সেখানে কাজ শুরু করে দেন। পুরনো বাড়ি ভেঙে ফেলায় সপরিবার এখন থাকছেন তাঁবুর নীচে। সম্প্রতি বাড়ি তৈরির জন্য দ্বিতীয় কিস্তির ১ লক্ষ টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এসে পড়ে আছে। কিন্তু তিনি ব্যাঙ্ক থেকে তুলতে পারছেন না। বাড়ি তৈরির কাজও থমকে। এলাকার হাজারখানেক উপভোক্তার এই অবস্থা।
পুরসভা সূত্রের খবর, ‘হাউজ ফর অল’ প্রকল্পে পাকা বাড়ি তৈরির জন্য হাবরা পুরসভা এলাকার মোট ১৩৩১টি পরিবার ইতিমধ্যেই কেউ প্রথম কিস্তির, কেউ আবার দ্বিতীয় কিস্তির টাকাও পেয়ে গিয়েছেন। ৩৪৮টি পরিবার প্রথম কিস্তির ৬৮ হাজার করে টাকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় কিস্তির ১ লক্ষ টাকাও ঢুকে গিয়েছে অ্যাকাউন্টে। কিন্তু ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা তুলতে না পেরে হতাশ সকলে। ৯৭৩টি পরিবারের পাকা বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির টাকা অ্যাকাউন্টে এসেছে বলে জেনেছেন। সেই টাকাও তুলতে পারছেন না কেউ।
সকলেই পড়েছেন মহা ফাঁপরে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য এক একটি পরিবার কিস্তিতে মোট ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা করে পাবে। তারমধ্যে ২৫ হাজার টাকা দেবেন উপভোক্তা নিজে। বাকিটা রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার দিচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, প্রতিটি পরিবারের জিরো ব্যালান্সে অ্যাকাউন্ট করা আছে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে।
কিন্তু পরিবারগুলির অভিযোগ, ব্যাঙ্কে গেলে বলা হচ্ছে, তাদের মাসে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। কিন্তু তাতে তো বাড়ি তৈরির কাজ হবে না। তা ছাড়া, কারও আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। নানা প্রয়োজনে টাকার দরকার হয়। এক সঙ্গে টাকা না পেলে ওই টাকা অন্য সাংসারিক প্রয়োজনে খরচ হয়ে যেতে পারে।
ব্যাঙ্কে গিয়ে বাড়ির তৈরির সরকারি টাকা না পেয়ে ওই সব মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রথমে ওই ব্যাঙ্কের সামনে যশোর রোড অবরোধ করেন তাঁরা। সঙ্গে যোগ দেন সাধারণ মানুষও। পরে টাকার দাবিতে সড়ক ও রেল অবরোধ হয় স্থানীয় ১ নম্বর রেলগেট ও ২ নম্বর রেলগেট এলাকায়। বেলা ১টা নাগাদ অবরোধ ওঠে। পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘এটা ঠিক যে টাকা না পেয়ে গরিব মানুষ বাড়ি তৈরির কাজ করতে পারছেন না। আমরা ওই ব্যাঙ্কের শাখায় যোগাযোগ করেছিলাম। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন, তাঁরা ওই টাকা দেওয়ার বিষয়টি বিশেষ কেস হিসাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিবেচনা করে দেখার প্রস্তাব পাঠাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy