Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Class

Online class: অনলাইনে টানা ক্লাসই কি বাড়াচ্ছে মোবাইল-আসক্তি

অনেক সময়ে অভিভাবকদের চোখ এড়িয়ে ক্লাস না করেই গেম খেলা চলছে। ইদানীং অনেক গেম খেলতে টাকা খরচ করতে হচ্ছে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

সমীরণ দাস 
শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২১ ০৫:৫০
Share: Save:

অনলাইন গেম খেলতে গিয়ে মায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছিল বছর তেরোর নাবালক। জানতে পেরে বকুনি দিয়েছিলেন মা। তার জেরেই শেষপর্যন্ত আত্মহত্যার পথে বেছে নেয় ছেলেটি। শুক্রবার মধ্যপ্রদেশের ছতরপুর জেলার এই ঘটনায় চমকে গিয়েছে গোটা দেশ। গেমের নেশা কম বয়সে কতটা বিপদ ডেকে আনতে পারে, তা ভেবেই আশঙ্কিত অভিভাবকেরা।

মাস কয়েক আগে মন্দিরবাজার থানা এলাকায় অনলাইন গেম খেলা এবং সেই সংক্রান্ত লেনদেন নিয়ে গোলমালের জেরে খুন হতে হয়েছিল এক নাবালককে। সেই ঘটনায় আরও দুই নাবালক এবং একজন সদ্য আঠারো পেরোনো তরুণকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত দুই নাবালক এখনও জুভেনাইল হোমে। আঠারো পেরোনো তরুণের ঠাঁই হয়েছে জেল হেফাজতে।

করোনা সংক্রমণের জেরে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ রয়েছে। কার্যত ঘরবন্দি শিশু-কিশোরেরা। এই পরিস্থিতিতে মোবাইল গেমের নেশা বাড়ছে কিনা, সেই প্রশ্ন উঠছে। অভিভাবকেরা অনেকে জানান, স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাস হচ্ছে। তার ফলে বাচ্চার হাতে ফোন দিতেই হচ্ছে। এমনকী, এত দিন স্মার্ট ফোন ছিল না, এমন অনেক পরিবার বাচ্চার ক্লাসের কথা ভেবে স্মার্ট ফোন কিনেছে। নিতে হচ্ছে ইন্টারনেট সংযোগও। আর এই অনলাইন ক্লাস করতে গিয়েই বাড়ছে মোবাইল ব্যবহারের অভ্যাস। ক্লাসের আগে-পরে গেম বা অন্য কিছুতে আসক্ত হয়ে পড়ছে পড়ুয়ারা। অনেক সময়ে অভিভাবকদের চোখ এড়িয়ে ক্লাস না করেই গেম খেলা চলছে। ইদানীং অনেক গেম খেলতে টাকা খরচ করতে হচ্ছে। সেটা করতে গিয়েই ঘটে যাচ্ছে ছতরপুর বা মন্দিরবাজারের মতো ঘটনা।

জয়নগরের বাসিন্দা ইকতিয়ার আহমেদ বলেন, “আমি একেবারেই বাচ্চাদের হাতে মোবাইল দেওয়ার পক্ষপাতী নই। বড় মেয়ের ক্ষেত্রে কলেজে ওঠার আগে মোবাইল দিইনি। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, অনলাইন ক্লাসের জন্য মোবাইল দিতেই হচ্ছে। এর জেরেই ছোট দুই মেয়ে ক্রমশ মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। ক্লাসের আগে-পরে গেম খেলা, ইউটিউব ঘাঁটা চলছেই। বুঝতে পারলেও কার্যত কিছু করার নেই।”

স্কুল বন্ধ থাকার জেরে যে মোবাইল আসক্তি বাড়ছে, তা মেনে নিচ্ছেন জয়নগর সার্কেলের স্কুল পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু ঘোষও।

তাঁর কথায়, “স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলছুট এবং নাবালিকা বিয়ে রুখতে আমরা নানা ব্যবস্থা নিচ্ছি। গ্রামে গ্রামে নজরদারি চালানো হচ্ছে। আর সেটা করতে গিয়েই আমরা বুঝতে পারছি, মোবাইল আসক্তিটা প্রবল ভাবে চলে এসেছে স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে। এটা খুবই খারাপ লক্ষ্মণ। এটা থেকে কী ভাবে পড়ুয়াদের বের করে আনা যায়, আমাদের সকলকে তা নিয়ে ভাবতে হবে।”

বাচ্চাদের অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে বিপদ দেখছেন চিকিৎসকেরাও। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অর্ণব দত্ত বলেন, “এটা মারাত্মক প্রবণতা। অতিরিক্ত আসক্তি শিশুটির স্বাভাবিক জীবন শেষ করে দিতে পারে। বাবা-মায়েদের খুব ভাল ভাবে নজর রাখতে হবে। সমস্যা গুরুতর মনে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus Online Class
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE