Advertisement
E-Paper

গর্তে পড়ে স্যালাইনের চ্যানেল খুলে রক্তারক্তি

বর্ষা এলে রাস্তা ভাঙবে, এই অভিজ্ঞতা প্রতি বছরের। আবার বৃষ্টির জল মাথায় নিয়ে রাস্তায় তাপ্পি মারতেও দেখা যায়। মাস ঘুরতে না ঘুরতে সে সব উঠে গিয়ে শুরু হয় ধুলোর অত্যাচার। দুই জেলার গুরুত্বপূর্ণ কিছু রাস্তার হাল ঘুরে দেখল আনন্দবাজার।

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২০ ০৩:৫৪
রায়দিঘি থেকে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর পর্যন্ত রাস্তার এমন দশা। নিজস্ব চিত্র

রায়দিঘি থেকে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর পর্যন্ত রাস্তার এমন দশা। নিজস্ব চিত্র

পিচের চিহ্ন প্রায় নেই বললেই চলে। গোটাটাই খানাখন্দে ভরা। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, রাস্তার যা অবস্থা, তাতে হেঁটে যাতায়াত করাও সমস্যা। এমনই পরিস্থিতি রায়দিঘি থেকে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর পর্যন্ত প্রায় ২২ কিলোমিটার রাস্তার। রোজই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা লেগে আছে। দিন পনেরো আগে এই পথে খটির বাজার মোড়ে গাড়ি গাড্ডায় পড়ায় ট্রেকারের ছাদ থেকে পড়ে এক নাবালকের মৃত্যু হয়। অভিযোগ, তবু হুঁশ ফিরছে না প্রশাসনের।

ডায়মন্ড হারবার-রায়দিঘি রোডের এই অংশটির অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ। বড় বড় গর্ত বর্ষার জলে ডোবার চেহারা নিয়েছে। ছোট গাড়ি গর্ত পার হতে গিয়ে হামেশাই উল্টে পড়ছে। গাড়ির চাকা পড়ে বিকল হয়ে যাচ্ছে। মাঝ রাস্তায় বিকল হয়ে যাওয়া গাড়ি আটকে যানজট তৈরি হচ্ছে প্রায় রোজই। কোথাও কোথাও স্থানীয় ভাবে খানাখন্দগুলি ইট পেতে মেরামত করে দেওয়া হয়েছিল। অনেক দিন হয়ে যাওয়ায় সেই ইট উঠে জায়গাগুলি আরও বিপজ্জনক হয়ে গিয়েছে। তার উপর বৃষ্টির জল জমে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক। রাস্তায় অধিকাংশ জায়গায় আলো না থাকায় সন্ধের পরে এই পথে যাতায়াত রীতিমতো বিভীষিকা হয়ে উঠেছে নিত্যযাত্রীদের কাছে। সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বাইক আরোহীদের।

স্থানীয় মানুষের কাছে রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই রাস্তা দিয়ে সারা দিনে ৩২টি বেসরকারি রুটের মিনিবাস চলে। এ ছাড়া, কয়েকশো টোটো, অটো, ট্রেকার চলাচল করে। রায়দিঘির মথুরাপুর ২ ব্লক এলাকার বাসিন্দাদের নানা প্রয়োজনে ডায়মন্ড হারবার শহরে আসতে এই পথ ধরেই। রায়দিঘির গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে ‘রেফার’ হওয়া রোগীকে এই পথেই অ্যাম্বুল্যান্স বা গাড়িতে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। স্যালাইন লাগিয়ে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার পথে অ্যাম্বুল্যান্স গর্তে পড়ে রক্তারক্তি কাণ্ডও হয়েছে বলে জানালেন ভুক্তভোগী অনেকে। রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতালের এক নিশ্চয়যানের চালক জানান, খারাপ রাস্তার ফলে অ্যাম্বুল্যান্সে একাধিক গর্ভবতী মহিলার বাচ্চা প্রসব হয়ে গিয়েছে। অসুস্থ বৃদ্ধকে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে গাড়ির ঝাঁকুনি সহ্য করতে না পেরে মারা গিয়েছেন, এমন ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বনাথ প্রামাণিক, রূপকুমার দাসদের অভিযোগ, “দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তাটির এই অবস্থা। একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে। নানা প্রয়োজনে আমাদের ডায়মন্ড হারবার শহরে যেতে হয়। ডায়মন্ড হারবার থেকেও অনেকে রায়দিঘি আসেন। খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। আত্মীয়-স্বজনেরা যাতায়াত ছেড়ে দিয়েছেন এ কারণে। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে অনেক অবরোধ-বিক্ষোভ হয়েছে। প্রশাসন এসে সারানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেও সুরাহা হয়নি।”

মথুরাপুর ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বাপুলি বলেন, “ওই রাস্তা নতুন করে তৈরির জন্য পূর্ত দফতর থেকে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।” মথুরাপুর ২ বিডিও রিজওয়ান আহমেদ বলেন, “রাস্তার বিষয়ে পূর্ত দফতরকে জানানো হয়েছে।”

Roads Raidighi South Bishnupur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy