E-Paper

চলতি মাসেই শিলান্যাস সাগরে সেতুর

কয়েক দিন আগেই সংস্থার প্রতিনিধিরা কাকদ্বীপ লট ৮ ও সাগরের কচুবেড়িয়া এলাকায় ঘুরে দেখেছেন।

সমরেশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৩৭
কপিল মুনির আশ্রমে ভক্তদের ভিড়।

কপিল মুনির আশ্রমে ভক্তদের ভিড়। ফাইল চিত্র।

অবশেষে শুরু হতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত গঙ্গাসাগর সেতুর নির্মাণ কাজ। চলতি মাসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেতুর শিলান্যাস করতে পারেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

সাগরে মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে সেতুর দাবি দীর্ঘ দিনের। প্রশাসন সূত্রের খবর, বহু দিন দরপত্র সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে ছিল কাজ। তবে ইতিমধ্যে পূর্ত দফতরের তৎপরতায় নির্মাণকারী সংস্থা নির্বাচন হয়ে গেছে। দায়িত্ব পেয়েছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো (এল অ্যান্ড টি)।

কয়েক দিন আগেই সংস্থার প্রতিনিধিরা কাকদ্বীপ লট ৮ ও সাগরের কচুবেড়িয়া এলাকায় ঘুরে দেখেছেন। কোথায় কোথায় শিবির তৈরি হবে তা ঠিক হয়েছে। ধান কাটার কাজ শেষ হলেই শিবির নির্মাণ শুরু হবে বলে সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে। সেতুর জন্য প্রয়োজনীয় মাটি পরীক্ষার কাজও ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, উভয় দিকে জমি কেনার কাজ প্রায় নব্বই শতাংশ শেষ। পাঁচ-ছ’জন জমিদাতা জমি দিতে ইচ্ছুক হলেও কাগজপত্র সংক্রান্ত কিছু সমস্যার কারণে তাঁদের ক্ষতিপূরণ এখনও মেটানো সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুতই সেই সমস্যা মিটবে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন। গত বছর বাজেটে সেতু নির্মাণের জন্য বরাদ্দ ছিল প্রায় ১৪৩৯ কোটি টাকা। মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘর থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রকল্পের আর্থিক বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭০০ কোটি। এ বছর গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সেতুর শিলান্যাস করবেন বলেও জানিয়েছেন।

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, বাজেট বাড়ার কারণ বাজারদরের পরিবর্তন। তাঁর দাবি, কাজ শুরুর ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা নেই। ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণের কাজও প্রায় শেষ। কাকদ্বীপে ৭.৯৫ একর এবং কচুবেড়িয়ায় ৫.০১ একর মিলিয়ে ১২.৯৭ একর জমি কেনা হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচে। দেড়শো জনেরও বেশি জমিদাতার ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা হয়েছে, অনেকে ক্ষতিপূরণও পেয়ে গিয়েছেন।

প্রস্তাবিত সেতুটি হবে প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ। থাকবে ২১টি থাম, যার ১৯টিই দাঁড়াবে মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে। ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, এটি এশিয়ার অন্যতম নজিরবিহীন স্থাপত্য হতে চলেছে। সেতু তৈরি হলে সাগরদ্বীপে পৌঁছতে আর ট্রলার-ভেসেলের উপর নির্ভর করতে হবে না। মূল ভূখণ্ড থেকে সরাসরি গাড়ি নিয়ে সাগরদ্বীপে পৌঁছনো যাবে। ফলে প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলায় আসা লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর সুবিধা হবে। এখন মুড়িগঙ্গা নদী পেরোতে ভেসেলে সময় লাগে ৪৫ মিনিট, সেতু হলে তা কমে দাঁড়াবে ৪-৫ মিনিটে।

এলাকার বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, “কেন্দ্র প্রতিশ্রুতি রাখেনি, তাই রাজ্যই উদ্যোগী হয়েছে। সেতু হলে পর্যটন ও বাণিজ্যে নতুন জোয়ার আসবে। এখন শুধু মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাসের অপেক্ষা। কাজ শুরু হলে চার বছরের মধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের মানচিত্রে বদল আনবে এই সেতু। সাগরদ্বীপ বাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন দ্রুত বাস্তবায়িত হবে।”

সাগরের বিডিও কানাইয়াকুমার রায় বলেন, “কয়েক জন জমিদাতার কাগজ সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, তা দ্রুতই মিটে যাবে। গঙ্গাসাগর মেলার পরে পুরোদমে কাজ শুরু হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

sagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy