Advertisement
০১ মে ২০২৪
Hospital Bed

হাসপাতালে শয্যা নেই, আশঙ্কায় চিকিৎসকেরা

পুজোর বাকি আর ১০ দিন। এই অবস্থায় বাজারে ভিড় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মুখে হাসি ফোটালেও চিকিৎসকেরা সর্বনাশের ছবি দেখছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৪৭
Share: Save:

দু’মাসের বেশি টানা লকডাউনের পরে জুন মাসের প্রথম দিন থেকে শুরু হল আনলক-১ পর্ব। ঠিক সে দিন উত্তর ২৪ পরগনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৫৩ জন। মোট অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ৪২০ জন। আর সে দিন জেলায় আক্রান্ত হয়েছিলেন মোট ১৮ জন। সেই সময় গড়ে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল কুড়ি জন।

পয়লা জুলাই থেকে আনলক-২ পর্বের শুরু। তত দিনে জেলা জুড়ে লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। সে দিন জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩০৮৬ জন। আতঙ্ক ছড়াচ্ছিল দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। গড়ে দেড়শোরও বেশি মানুষ রোজ আক্রান্ত হচ্ছিলেন। আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নতুন করে জেলায় ১৪ দিনের লকডাউন জারি করে জেলা প্রশাসন।

কিন্তু সংক্রমণে আর বাঁধ দেওয়া যায়নি। অগাস্ট মাসের ১ তারিখে সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৭৩৯। সে দিন আক্রান্ত হন ৬০৮ জন। অর্থাৎ এক মাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে ১২ হাজারেরও বেশি। এক মাসে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধি তফাত প্রায় সাড়ে চার শো। তার পর থেকে প্রতি মাসে প্রায় ২০ হাজার করে বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যা।

এ মাসের প্রথম দিন জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫২ হাজার ১৪৫ জন। সে দিনের সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৬৪৬ জন। তার পর থেকে সংক্রমিতের সংখ্যা ক্রমশ ঊর্ধ্বগামী। এরই মধ্যে পুজোর বাদ্যি বাজতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিনে সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধি কপালে ভাঁজ ফেলেছে স্বাস্থ্য কর্তাদের। এখনই এই অবস্থা হলে পুজোর পর কী অপেক্ষা করে আছে, তা ভেবেই দিশেহারা অবস্থা তাঁদের।

অথচ সেপ্টেম্বরই কিছুটা আশার আলো দেখিয়েছিল। অগাস্টের শেষ দিকে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা সাতশো ছাড়িয়েছিল। ৩ সেপ্টেম্বর আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৩১। কিন্তু পরের দিন আক্রান্তের সংখ্যা কমে ৫৭২-এ নামে। ১৮ সেপ্টেম্বর সেই সংখ্যা ছিল ৫০১। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে তা ফের বাড়তে শুরু করে। গত ১০ দিন ধরে তা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ছ’শোর ঘর ছাড়িয়ে তা প্রায় আটশো ছুঁতে চলেছে।

পুজোর বাকি আর ১০ দিন। এই অবস্থায় বাজারে ভিড় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মুখে হাসি ফোটালেও চিকিৎসকেরা সর্বনাশের ছবি দেখছেন। এই মুহূর্তে জেলার কোনও কোভিড হাসপাতালে শয্যা নেই। কলকাতার হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়ছে কোভিড রোগী। একটা শয্যার জন্য এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটছেন রোগীর পরিজনেরা। চিকিৎসকেরা বলছেন, পুজোর পরে সংক্রমিতের দৈনিক সংখ্যা কোথায় গিয়ে থামবে, তা ধারণা করাও মুশকিল।

চিকিৎসকেরা বলছেন, উপসর্গহীন রোগীরাই চিন্তা বাড়াচ্ছেন। বাজার-হাট থেকে দোকান— সর্বত্র অবাধে ঘুরছেন তাঁরা। তাঁদের সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হচ্ছেন অন্যেরা। তাঁদের অনেকেই জটিল রোগে ভুগছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে কোভিড প্রকৃতই চিন্তার। এক চিকিৎসক বলছেন, “বাড়িতে থেকে অনেকেই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। সেটা দেখে অনেকেই বেপরোয়া হয়ে ঘুরছেন। কিন্তু, তাঁরা বুঝছেন না যে, এটা করে তাঁরা প্রিয়জনদের বিপদ ডেকে আনছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 Coronavirus Hospital Bed
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE