Advertisement
E-Paper

ঘরকন্যা সামলে রক্ত দিতে এলেন আর্জিনা, আরশানারা

রক্তের আকাল চলছে দেখে মুখ্যমন্ত্রী থানায় থানায় রক্তদান শিবির করে রক্তের জোগান বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন।

সমীরণ দাস

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০৬:২৭
মানবিক: রক্ত দিচ্ছেন ওই মহিলারা। ছবি: সুমন সাহা

মানবিক: রক্ত দিচ্ছেন ওই মহিলারা। ছবি: সুমন সাহা

লকডাউনে রক্তদান শিবির বন্ধ বহু জায়গায়। ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের হাহাকার চলছে। রক্ত পেতে নাজেহাল হচ্ছে রোগীর পরিবার। লকডাউনের জেরে ক’দিন ধরে চলা এই পরিস্থিতির কথা বিলক্ষণ জানেন জয়নগরের হাছিমপুরের আর্জিনা, আরশানারা। এলাকায় পুলিশের তরফে রক্তদান শিবিরের আয়োজন হচ্ছে শুনেই তাই নাম লিখিয়ে দেন রক্তদাতার তালিকায়। রবিবার ঘরের কাজ সামলে বহড়ু বালিকা বিদ্যালয়ে আয়েজিত শিবিরে এসে রক্ত দিলেন তাঁরা।

এ রাজ্যের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গ্রামীণ মহিলাদের মধ্যে রক্তদানের হার পুরুষদের তুলনায় অনেকটাই কম। গ্রামের দুই সংখ্যালঘু পরিবারের মহিলাদের এই উদ্যোগ তাই বিশেষ নজর টানছে। আরশানাদের সঙ্গে আরও তিন পড়শি মহিলা এসেছিলেন রক্ত দিতে। কিন্তু শারীরিক কিছু সমস্যার কারণে তাঁরা শেষমেশ রক্ত দিতে পারেননি। কিন্তু তাঁদের এই মানসিকতাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন শিবিরের উদ্যোক্তারা।

রক্তের আকাল চলছে দেখে মুখ্যমন্ত্রী থানায় থানায় রক্তদান শিবির করে রক্তের জোগান বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন। বিভিন্ন থানা সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছে। জয়নগর থানার তরফে বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট শিবির করে রক্ত সংগ্রহ চলছে।

সোমবার বহড়ু বালিকা বিদ্যালয়ে রক্তদান শিবিরের আয়োজন হয়। পুলিশ জানায়, ভিড় এড়াতে আগে থেকে দিন ঘোষণা করে রক্তদানের জন্য মানুষকে আবেদন করতে বলা হচ্ছে। এই ভাবে প্রতিটি এলাকায় পঞ্চাশটি করে নাম নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের পুলিশের তরফে এসএমএস করে দেওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট দিনে সেই এসএমএস দেখিয়েই রক্ত দিয়ে যাচ্ছেন আগ্রহীরা। এর আগে এ ভাবেই এলাকায় তিনটি শিবির করেছে পুলিশ।

এ দিন ছিল চতুর্থ শিবির। ক’দিন আগে শিবিরের কথা ঘোষণা হতেই রক্ত দেওয়ার জন্য নাম লেখান আর্জিনা মোল্লা, নুর আরশানা মোল্লা, মুর্শিদা গাজি, সালমা গাজি ও মুমতাজ মণ্ডল নামে পাঁচ গৃহবধূ। তবে এ দিন রক্ত দিতে এলে শারীরিক পরীক্ষা করে তিনজনকে রক্ত দিতে বারণ করেন চিকিৎসকেরা। আর্জিনা ও আরশানার রক্ত নেওয়া হয়। রক্ত দিয়ে বছর তিরিশের দুই মহিলা বলেন, ‘‘টিভিতে দেখছি, অনেকে রক্ত পাচ্ছেন না। তাই এলাকায় রক্তদান শিবির হচ্ছে শুনে নাম লিখিয়ে দিই। এই পরিস্থিতিতে কারও সাহায্যে লাগতে পেরেছি ভেবেই ভাল লাগছে।’’

বহড়ু পঞ্চায়েতের প্রধান স্নেহাশিস নাইয়া বলেন, ‘‘রক্তদান শিবিরের কথা শুনে ওঁরা নিজের থেকেই রক্ত দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে নাম লেখান। এই পরিস্থিতিতে এঁদের এই প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়।’’

জয়নগর থানার আইসি অতনু সাঁতরার কথায়, ‘‘এর আগে আমাদের শিবিরে মহিলা কনস্টেবল-সহ অন্য মহিলারা রক্ত দিয়েছেন। কিন্তু আজ ঘর সংসার সামলানো গ্রামের মহিলারা যে ভাবে নিজেরা এগিয়ে এলেন, তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রত্যেকেই যদি নিজের নিজের ক্ষমতা মতো এই ভাবে সাহায্যের হাত বাড়াই, তা হলে অনেক সহজে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পার।

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy