Advertisement
E-Paper

২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেলেন দম্পতি

চব্বিশ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে মারা গেলেন আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত এক দম্পতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০৪:৫৮

চব্বিশ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধানে মারা গেলেন আর্সেনিক দূষণে আক্রান্ত এক দম্পতি।

সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়িতেই মারা যান গাইঘাটা ব্লকের বাসিন্দা বলরাম দাস (৬৫)। পরিবারের সদস্যেরা সেই শোক সামলে ওঠার আগেই মঙ্গলবার ভোরে মারা গেলেন বলরামের স্ত্রী বিমলা (৫৫)। ঘটনাটি গাইঘাটা ব্লকের বিষ্ণুপুর মাঠপাড়া এলাকার। দম্পতির মৃত্যুর ঘটনার পরে এলাকার অন্য আর্সেনিক দূষণের জেরে অসুস্থেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘সরকার আমাদের চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যবস্থা না করলে মারা পড়ব আমরা।’’

‘আর্সেনিক দূষণ প্রতিরোধ কমিটি’র রাজ্য সম্পাদক অশোক দাস বলেন, ‘‘বলরাম ও বিমলা দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে আর্সেনিক দূষণের ফলে অসুস্থ ছিলেন।’’ পরিবার সূত্রে জানা গেল, অতীতে খেতমজুরি করতেন বলরাম। অসুস্থতার কারণে কয়েক মাস কাজকর্ম ইদানীং বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। হাঁটা-চলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন। বিমলা আগে মাঠ থেকে ফুল তোলার কাজ করতেন। অসুস্থতার কারণে তিনিও বেশ কিছু দিন ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন। বলরামের একমাত্র ছেলে গোবিন্দ খেতমজুরি করে কোনও রকমে সংসার চালান।

আর্সেনিক দূষণ প্রতিরোধ কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতে বলরামরা বাড়ির সাধারণ কলের জলই পানীয় হিসেবে ব্যবহার করতেন। সেই জলে আর্সেনিকের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি ছিল। ওই জলের জন্যই তাঁদের শরীরে বাসা বাঁধছিল রোগ। আর্সেনিক সম্পর্কে প্রথম দিকে কোনও সচেতনতাই তাঁদের ছিল না। অশোক বলেন, ‘‘আর্সেনিক রোগীকে ওষুধের পাশাপাশি প্রোটিন ও ভিটামিনযুক্ত খবার খেতে হয়। যা বলরামের মতো গরিবের পক্ষে সম্ভব ছিল না।’’ কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ক’দিন আগেই ওই এলাকার বিশ্বনাথ দাস নামে আর এক ব্যক্তিরও আর্সেনিক দূষণের জেরে মৃত্যু হয়েছে।

বিষ্ণুপুর এলাকায় এখনও প্রায় একশো মানুষ আর্সেনিক দূষণের ফলে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর দিন গুনছেন। তাঁদেরই একজন যুগল দাস। আগে চাষবাস করতেন। অসুস্থতার কারণে এখন তা বন্ধ। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়ির পানীয় জল খেয়েই শরীরে আর্সেনিকের বিষ ঢোকে। এখন সপ্তাহে এক হাজার টাকার ওষুধ খেতে হয়। ধারদেনা করে কোনও রকমে চালাচ্ছি। জানি না কতদিন ওষুধ কিনে খেতে পারব। সরকার ব্যবস্থা না করলে মৃত্যু ছাড়া পথ নেই।’’ গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ধ্যানেশনারায়ণ গুহ বলেন, ‘‘আমরা আর্সেনিক দূষণে অসুস্থদের তালিকা প্রস্তুত করছি। সরকারি ভাবে তাঁদের চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যবস্থা করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পক্ষ থেকে আর্সেনিক, আয়রন ও ব্যাকটেরিয়া-মুক্ত বিশুদ্ধ পানীয় জলের প্ল্যান্ট অবশ্য বসানো হয়েছে। এলাকার মানুষ এখন সেই জলই ব্যবহার করছেন।

Pollution Death Environment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy