বারাসতের কাছারি ময়দানে সিপিএমের সভা। —নিজস্ব চিত্র।
এক যুগ আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে প্রথম আসরে নেমেছিলেন তিনি। শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত ঘিরে যখন রাজ্যে শোরগোল, সেই সময়ে ‘অন্ধকার ভেদ’ করতে এবং সরকার বদল করতে মানুষকে এগিয়ে আসার ডাক দিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী এবং সিপিএম নেতা গৌতম দেব। বারাসতে বুধবার ভিড়ে ঠাসা সমাবেশে গৌতমের লিখিত বার্তা পড়ে শোনান সিপিএম নেতা পলাশ দাস।
প্রশাসন প্রথমে অনুমতি দিয়েও প্রত্যাহার করেছিল। আদালতের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত বারাসতে সভা করেছে সিপিএম। কাছারি ময়দানে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের ডাকে সেই সমাবেশে ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। উজ্জীবিত সিপিএম নেতৃত্ব সেই মঞ্চ থেকে তৃণমূল ও বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন।
চড়া রোদে এ দিন সিপিএমের সভা শুরুর আগেই ভরে গিয়েছিল মাঠ। সাম্প্রতিক অতীতে ওই ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা হয়েছে। গরম সহ্য করতে না পেরে আশেপাশে গাছের নীচে এবং জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় বসে পড়েন জেলার নানা প্রান্ত থেকে আসা বাম কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের অনেকেই এসেছিলেন দীর্ঘ দিন পরে গৌতমের বক্তৃতা শোনার জন্য। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ড্স’ সংস্থার কথা ১০ বছর আগে প্রথম সামনে এনেছিলেন গৌতমই। এখন দুর্নীতির তদন্তে যা চর্চিত হচ্ছে। অসুস্থতার কারণে গৌতম অবশ্য সভায় হাজির হতে পারেননি। তবে চিঠি পাঠিয়ে তিনি সভায় বার্তা দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘নিয়ম মেনে আমরা আবেদন করেছিলাম। রাজ্য সরকার সব রকম চেষ্টা করেছিল সভা বাতিলের জন্য। আমরা বলেছিলাম, সভা এখানেই হবে! দেশের বর্তমান বিভেদ রাজনীতি আটকাতে সিপিএমকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হবে। সেটা আপনাদেরই সঠিক ভাবে পালন করতে হবে’। রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ এনে চিঠিতে গৌতমের বত্তব্য, ‘কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি নেতারা চাইলেও তৃণমূলের এই অন্ধকার ভেদ করতে পারবেন না! এদের ক্ষমতা থেকে সরাতেই হবে’।
সমাবেশে ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী, মানস মুখোপাধ্যায়, তন্ময় ভট্টাচার্য, প্রাক্তন সাংসদ তড়িৎ তোপদার প্রমুখ। অবাধ ও সুষ্ঠু পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে সেলিমের হুঁশিয়ারি, ‘‘অনেক রক্ত ঝরেছে। আমরা তৃণমূলকে বলছি, এর পরে যদি আবার খুনের রাজনীতি করতে চান, তা হলে বাংলার রং নীল সাদা হবে না। লাল হয়ে যাবে! খুনের রং লাল।’’ রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘শূন্যে নেমে ওঁদের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে! বিজেপির সুরে কথা বলে এখন ওদের সাহায্য করতে নেমেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy