Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভাঙা কালভার্টের জেরে জলমগ্ন

রাস্তার মাঝে বিশাল এক কালভার্ট দীর্ঘদিন ধরে ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে। কালভার্টটি পুরোপুরি মেরামতি না হওয়ায় দু’টি পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রামের জল বেরোতে পারছে না। তার জেরে কয়েকশো বিঘা আনাজের জমি জলে ডুবে রয়েছে। এমনই অবস্থা দেগঙ্গার চৌরাশি ও আমুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকায়।

থই-থই: ঘরের মধ্যেই জল। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

থই-থই: ঘরের মধ্যেই জল। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০৮:১০
Share: Save:

রাস্তার মাঝে বিশাল এক কালভার্ট দীর্ঘদিন ধরে ভেঙেচুরে পড়ে রয়েছে। কালভার্টটি পুরোপুরি মেরামতি না হওয়ায় দু’টি পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রামের জল বেরোতে পারছে না। তার জেরে কয়েকশো বিঘা আনাজের জমি জলে ডুবে রয়েছে। এমনই অবস্থা দেগঙ্গার চৌরাশি ও আমুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকায়।

রাস্তাঘাটেও কোমর-সমান জল। ঘরের মধ্যে জলবন্দি হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে জল নিকাশির ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। না হলে নিজেরাই রাস্তা কেটে জল বের করতে নামবেন বলে হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার চৌরাশি পঞ্চায়েতের মাটিকুমড়ো গ্রামের মধ্যে দিয়ে যাওয়া বেড়াচাঁপা পৃথিবা রোডের মাঝে একটি কালভার্ট মাসকয়েক আগে ভেঙে পড়ে। তা মেরামতির দাবিতে রাস্তা কেটে বিক্ষোভে নামেন গ্রামবাসীরা। খবরটি প্রকাশিত হওয়ায় পর প্রশাসন তা মেরামতির উদ্যোগ নিলেও আজও তা সম্পূর্ণ হয়নি। কয়েকদিনের অতি বর্ষণেই আমুলিয়া ও চৌরাশি পঞ্চায়েতের মাটিকুমড়া, দক্ষিণমাঠ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ওই সব এলাকা ছাপিয়ে জল ঢোকে গ্রামের ঘরবাড়ির মধ্যেও।

এ দিন গিয়ে দেখা গেল, পেঁপে, কাঁকরোল, পটল, বরবটি ও ওল চাষের জমি ডুবে রয়েছে জলে। স্থানীয় কৃষক এমদাদুল মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। দু’দিনের বৃষ্টিতেই সব জমি জলের নীচে। এই জল না নামলে আমন চাষ হবে না। আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সবাই।’’ কাসেম আলি বলেন, ‘‘একটি কালভার্ট মেরামতিতে প্রশাসন তিন মাস লাগিয়ে দিল। বর্ষার আগে এটি মেরামতি হলে এত ক্ষতি হত না।’’

ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, বেশ কয়েকটি বাড়ির মধ্যে জল ঢুকেছে। ছাগলের বাচ্চা কোলে নিয়ে তক্তার উপর বসে দিন কাটাচ্ছেন মানুষ। ফতেমাবিবি বলেন, ‘‘আঁচের চুল্লিতে জল ঢুকে পড়েছে, রান্না বন্ধ। কী খাব জানি না। এমন বৃষ্টি আগেও হয়েছে তবে ঘরের মধ্যে এই পরিস্থিতি আগে হয়নি। ভাঙা কালভার্ট বর্ষার আগেই মেরামতি হলে এমন দশা হত না।’’

এ দিন কৃষিজমির ফসল বাঁচাতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন স্থানীয় মানুষজন। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে ওই জমা জল বার করতে রাস্তা কাটারও হুমকি দেন তাঁরা। পরে প্রশাসন কালভার্টের বন্ধ মুখ কেটে জল বার করার আশ্বাস দেয়। দেগঙ্গা ব্লক কৃষি আধিকারিক জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘‘দু’দিনের বৃষ্টিতে কৃষিজমিতে কতটা জল দাঁড়িয়েছে, কী কী ফসলের ক্ষতি হয়েছে, তা জানতে দফতরের কর্মীরা পরিদর্শনে বেরিয়েছেন। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরে তা জেলায় পাঠানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Logged Culvert
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE