Advertisement
E-Paper

আবার কি ভাসতে হবে, আতঙ্ক

কোটালে আবারও বাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হতে পারে, এই আশঙ্কায় এখনও ভাঙা ঘর বাঁধেননি মধুখালির বাসিন্দা মমতা ও ঝোড়ো গায়েন।

প্রসেনজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২০ ০৬:১৫
দিশাহারা: পিছনে পড়ে ঘরের ধ্বংসাবশেষ। ছেলেদের নিয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে অসহায় মা। নিজস্ব চিত্র

দিশাহারা: পিছনে পড়ে ঘরের ধ্বংসাবশেষ। ছেলেদের নিয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে অসহায় মা। নিজস্ব চিত্র

ঝড়ে বাঁধ ভেঙে সব ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। ঘর বলতে কিছুই নেই। শুধু ঘরের কঙ্কালটা দুমড়ে মুচড়ে পড়ে রয়েছে। ভাঙা নদীর বাঁধ এখনও সম্পূর্ণ মেরামত হয়নি, এর মধ্যেই পূর্ণিমার কোটালের জন্য নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে। কোটালে আবারও বাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হতে পারে, এই আশঙ্কায় এখনও ভাঙা ঘর বাঁধেননি মধুখালির বাসিন্দা মমতা ও ঝোড়ো গায়েন।

মধুখালি গ্রামে মাতলা নদীর পাড়ে ছোট্ট একটি ঘরে থাকতেন গায়েন দম্পতি। মাতলা নদীতে
মিন ধরেন মমতা। ঝোড়ো আশপাশের এলাকায় দিনমজুরের কাজ করেন। দিন তিনেক হল ঠিকাদারের ডাকে নদীবাঁধ সারাইয়ের কাজ করছেন। দুই ছেলে জয় ও রাজীব একজন পঞ্চম ও একজন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। মাস ছ’য়েক আগে বুলবুলে ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল। তালপাতা আর পলিথিনের ছাউনি দিয়ে মাস দু’য়েক কাটানোর পরে কোনওমতে ঘরে খড়ের ছাউনি দেন। এ বার আমপানের দাপটে পুরো ঘরটাই ভেঙে গিয়েছে। নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে ঘরে সামান্য যা কিছু ছিল সবই ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। মাথাগোঁজার ঠাঁই নেই। দুই সন্তানকে আগলে নদীর পাড়েই কোনও রকমে দিন কাটছে। রাতে থাকেন গ্রামের ভিতরে একটি দোকানের মেঝেতে। দিনে একবার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে রান্না করা খাবার আসে।

মমতা বলেন, ‘‘ঘর কি বাঁধব, বাঁধের যা অবস্থা এই পূর্ণিমার কোটালেই না আবার বাঁধ ভেঙে জল ঢোকে। বাঁশ, বস্তা দিয়ে বাঁধের ভাঙা অংশ সারানো হলেও জল আটকানো যাচ্ছে না। তৃতীয়া পর্যন্ত জল আরও বাড়বে। সাথে হাওয়া হলে আবার ভাঙবে বাঁধ, আবার ডুবব আমরা। তাই ইচ্ছে থাকলেও আর ঘর বাঁধিনি।” মমতার বড় ছেলে জয় বলে, ‘‘আমার আর ভাইয়ের বই, খাতা সব জলে ভেসে গিয়েছে। গায়ে যেটা পরে আছি, সেটা ছাড়া আর জামা, প্যান্টও নেই।” ঝোড়ো বলেন, “লকডাউন থেকে কোনও কাজ ছিল না। কোনও মতে মিন ধরে সংসার চলছিল। ঝড়ের পর থেকে আরও খারাপ অবস্থার মধ্যে পড়েছি। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। ছেলেদের মুখে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার তুলে দিতে পারছি না। ভাঙাচোরা জিনিসপত্র দিয়ে আবার যে ঘরটা বাঁধব সেই ভরসাও নেই, পাছে কোটালের জলে আবার সব ভেসে যায়।”

Cyclone Amphan Canning High Tide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy