ফ্রেজারগঞ্জে নদীবাঁধের কাজ থমকে আছে। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
বছর দু’য়েক আগে ইয়াসের ধাক্কায় প্রচুর বাঁধ ভেঙেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন নদী ও সমুদ্র উপকূলে। অভিযোগ, এত দিন কেটে গেলেও অনেক জায়গায় এখনও বাঁধ মেরামত হয়নি। বিপদ মাথায় নিয়েই দিন কাটাচ্ছেন নদীপারের বাসিন্দারা।
নামখানা ব্লকে বহু জায়গায় বাঁধে ভেঙে জল ঢুকেছিল। সম্প্রতি এলাকা ঘুরে দেখা গেল, একাধিক জায়গায় বাঁধ সংস্কার হয়নি। সমুদ্রঘেঁষা ফ্রেজারগঞ্জে ফ্রেজার সাহেবের বাড়ির কাছে প্রায় ৮০০ মিটার এলাকা জুড়ে এখনও বাঁধ তৈরি হয়নি। বঙ্গোপসাগর ও চিনাই নদীর মোহনায় অবস্থিত নামখানার পাতিবুনিয়া গ্রামেও নদীবাঁধ বেহাল। কিছু অংশে বাঁধের কাজ হলেও বাকি রয়েছে অনেকটাই। নারায়ণগঞ্জে চিনাই নদীর বাঁধের প্রায় ১৩০০ মিটার অংশ বেহাল পড়ে আছে। দুর্যোগের পরে সে ভাবে বাঁধের কাজ শুরুই হয়নি বলে অভিযোগ।
ইয়াসে তছনছ হয়ে গিয়েছিল নদী ও সমুদ্র তীরবর্তী এই সব এলাকা। বাঁধ ভেঙে ভেসে গিয়েছিল ঘর-বাড়ি। জলে ডুবেছিল চাষের জমি। একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন এলাকার মানুষ। কিন্তু বাঁধ ভাঙার আতঙ্ক এখনও তাড়া করে বেড়ায়। বাসিন্দারা অনেকে জানালেন, এই পরিস্থিতিতে শক্তপোক্ত বাঁধ তৈরি হলে তা-ও কিছুটা ভরসা পাওয়া যেত। কিন্তু বার বার প্রতিশ্রুতি মিললেও, বাঁধ সংস্কারের কাজ হয়নি। আবার কবে বাঁধ ভেঙে সর্বস্ব ভেসে যাবে, সেই আশঙ্কায় দিন কাটছে অনেকের।
পাতিবুনিয়ার বাসিন্দা আরতি মণ্ডল বলেন, “বছর কুড়ি আগে একটা বাড়ি কিনেছিলাম। এখন তা আর নেই। সব ভেসে গিয়েছে। এখন দূরের দিকে আবার বাড়ি করেছি। ইয়াসের পর থেকে এখানে বাঁধের কাজ হয়নি। জানি না কী হবে। ভোটের সময়ে নেতারা এসে ভোট দিতে বলেন। হুমকিও দেওয়া হয়। ভয়ে ভয়ে ভোটটা দিতে যাই। কিন্তু সামান্য পরিষেবাটুকু না পেলে ভোট দিয়ে কী লাভ!”নারায়ণগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা অশোক প্রধানের কথায়, “দুর্যোগ এলে মালপত্র, মেশিন নিয়ে এসে কাজ দেখানো হয়। তারপর আর কিছুই হয় না। ভোটের সময়ে নেতাদের দেখা মেলে। নানা রকম প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সে সব আর পূরণ হয় না। ভাল ভাবে থাকতে না পারলে ভোট দিতে যাব কেন!”
নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্পনা মালি মণ্ডল বলেন, “একশো দিনের কাজের টাকা না মেলায় বাঁধ মেরামতি করা যায়নি। ধাপে ধাপে সেচ দফতর থেকে মেরামতির কাজ করা হচ্ছে। ফ্রেজারগঞ্জে ৮০০ মিটার বাঁধের কাজ আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হবে। নারায়ণগঞ্জ ও পাতিবুনিয়া এলাকায়ও বাঁধের কাজ শুরু হবে তাড়াতাড়ি।”
কাকদ্বীপ মহকুমার সেচ দফতরের আধিকারিক সুরজিৎ দাস বলেন, “ফ্রেজারগঞ্জের ওই ৮০০ মিটার বাঁধের কাজের জন্য কোনও অর্থ এখনও পর্যন্ত বরাদ্দ হয়নি। তাই কাজ শুরু করতে পারিনি। অর্থ বরাদ্দ হলে কাজ শুরু হয়ে যাবে। ইয়াসের পর থেকে অনেক জায়গায় কাজ করা যায়নি অর্থের অভাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy