Advertisement
E-Paper

শহর-লাগোয়া ভাঙড় এখনও সেই তিমিরেই

বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা, ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আরাবুল ইসলামদের নানা প্রশ্নের মুখে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে। 

সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ০১:৪৪
n পাকাপোল থেকে কাঁঠালিয়া পর্যন্ত রাস্তার পরিস্থিতি। নিজস্ব চিত্র

n পাকাপোল থেকে কাঁঠালিয়া পর্যন্ত রাস্তার পরিস্থিতি। নিজস্ব চিত্র

নিউটাউন লাগোয়া ভাঙড় বিধানসভা এলাকা। দীর্ঘ দিন ধরে এখানে সে ভাবে কোনও উন্নয়ন চোখে পড়ে না বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। রাস্তাঘাট, পানীয় জল, স্বাস্থ্য নিয়ে অভিযোগ ভুরি ভুরি। সম্প্রতি ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে বেরিয়ে অনুন্নয়ন নিয়ে মানুষের ক্ষোভের আঁচ পাচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা। বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা, ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আরাবুল ইসলামদের নানা প্রশ্নের মুখে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে।


মঙ্গলবার রাতে ভাঙড় ২ ব্লকের বামনঘাটা পঞ্চায়েতের কোঁচপুকুরে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন রেজ্জাক। সেখানে মন্ত্রীর সামনে এলাকার রাস্তাঘাট-সহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন গ্রামের মানুষ। মন্ত্রীকে শুনতে হয়, ‘‘আপনি তো বলেছিলেন, এলাকার উন্নয়ন করবেন। কিন্তু কোথাও তো কিছু হচ্ছে না।’’ রেজ্জাক জবাব দেন, ‘‘আমি বলেছিলাম, ব্যাটে-বলে হলে ছক্কা মারব। কিন্তু তা হচ্ছে না। এখানে ভাঙড়ের সব নেতাদের এক সঙ্গে থাকার কথা ছিল। কিন্তু সকলে আসেননি। আপনারা তা দেখতে পাচ্ছেন।’’

রেজ্জাক পরে বলেন, ‘‘ভাঙড়ের রাস্তাঘাট-সহ বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। আমি রাস্তাঘাট নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি।’’ স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে ভাঙড় ২ ব্লকের পাকাপোল বাজার থেকে কাঁঠালিয়া পর্যন্ত রাস্তাটি বেহাল। শোনপুর-হাতিশালা পর্যন্ত খালপাড়ের রাস্তাটিও সংস্কারের অভাবে ভাঙাচোরা। বহু মানুষ এই সব পথে নিউটাউন-সহ শহর কলকাতায় যাতায়াত করেন। তিনটি রুটের বাস-সহ বিভিন্ন যানবাহন চলে। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও যাতায়াত করেন। তাঁরা রাস্তা সংস্কারের দাবিতে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। বাস মালিকেরাও বেশ কিছু দিন গাড়ি বন্ধ রেখে রাস্তা সংস্কারের দাবি তোলেন। কিন্তু তারপরেও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সংস্কার হয়নি। শুধু রাস্তা সংস্কারই নয়, ভাঙড় বিধানসভার বিভিন্ন এলাকায় আর্সেনিকের প্রভাব রয়েছে। আর্সেনিক-মুক্ত পরিস্রুত পানীয় জলের দাবি এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের। কিন্তু ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয় জলের ব্যবস্থা আজও হয়নি। এ সব নিয়েই মানুষের ক্ষোভ শুনতে হচ্ছে রেজ্জাক, আরাবুলদের।

স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস মণ্ডল, রাজু তরফদার বলেন, ‘‘কলকাতার কাছেই ভাঙড়। অথচ এখানে রাস্তাঘাটের এই হাল। পাশের ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা এলাকায় সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে নানা পরিষেবা মিলছে। কিন্তু বাম আমলেও ভাঙড় যে তিমিরে ছিল, আজও সেই অবস্থাতেই।’’

এ বিষয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, ‘‘ভাঙড় কলকাতার কাছে হলেও এলাকায় অনুন্নয়ন স্পষ্ট। পানীয় জল, রাস্তাঘাট-সহ বিভিন্ন বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। মানুষের স্বার্থেই এলাকার উন্নয়ন করতে হবে। না হলে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেবেন।’’ বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি কালিদাস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভাঙড়ের মানুষকে দীর্ঘ দিন ধরে বোকা বানিয়ে রাখা হয়েছে। এই এলাকার কোনও উন্নয়ন যেমন বাম আমলে হয়নি, তেমনই এই সরকারও কিছু করেনি। তবে মানুষ আগের থেকে অনেক সচেতন হয়েছেন। তাঁরা নেতাদের সামনে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন।’’

ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি ওহিদুল ইসলাম রাস্তাঘাট নিয়ে সমস্যার কথা মানছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের হয় তো কিছু ক্ষোভ আছে। রাস্তাঘাটগুলি যাতে দ্রুত সংস্কার করা হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করছি, বর্ষার পরে কাজ শুরু হবে।’’

Didike Bolo TMC Abdur Razzak Molla Arabul Islam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy