Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Didir Suraksha Kavach

‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে ব্রাত্য নেত্রী, বিতর্ক

রত্নার অভিযোগ, কর্মসূচির আগের দিন মন্ত্রী জানিয়ে দেন, তিনি খাবেন না। কোনও মতুয়া বাড়িতে খাবেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবড়া শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:০৭
Share: Save:

দিদির দূত কর্মসূচিতে ব্রাত্য রাখা হল হাবড়া ১ ব্লকের কুমড়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান রত্না বিশ্বাসকে। তিনি হাবড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতিও। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

শনিবার দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে দিদির দূত হিসাবে কুমড়া পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়েছিলেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মানুষের অভাব-অভিযোগ, সমস্যার কথা শুনেছেন। মন্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় নেতা, জনপ্রতিনিধিরা থাকলেও দেখা মেলেনি রত্নার।

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ রত্না। তিনি বলেন, ‘‘কুমড়ায় দিদির দূত কর্মসূচির রূপরেখা তৈরির সময়ে তৃণমূল ভবন থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আমাকে। সেই মতো মন্ত্রীর আমার বাড়িতে খাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উনি আমার বাড়িতে খাননি।’’

রত্নার অভিযোগ, কর্মসূচির আগের দিন মন্ত্রী জানিয়ে দেন, তিনি খাবেন না। কোনও মতুয়া বাড়িতে খাবেন। রত্না আরও বলেন, ‘‘কর্মসূচিতে প্রথমে আমাকে থাকতে বলা হলেও পরে বলা হয়েছিল, না থাকতে। আমি থাকলে নাকি সমস্যা হবে।’’

নিজেকে মতুয়া বলে দাবি করে রত্না অভিযোগ করেন, ইদানীং এলাকায় তাঁকে নানা ভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা হচ্ছে।

জ্যোতিপ্রিয় পরে বলেন, ‘‘আমি ওঁকে থাকতে নিষেধ করেছিলাম, এ কথা কোনও প্রমাণ উনি দেখাতে পারবেন কি?’’

তৃণমূলের একটি সূত্র অবশ্য জানাচ্ছে, রত্নার বিরুদ্ধে জনমানসে ক্ষোভ আছে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এর আগে। জ্যোতিপ্রিয়ও বলেন, ‘‘শনিবার কুমড়া পঞ্চায়েতের যে ৯টি এলাকায় গিয়েছিলাম, সব জায়গা থেকে রত্নার বিরুদ্ধে মানুষ অভিযোগ করেছেন। মনে হয় না দল আর তাঁকে ডাকবে।’’

রত্না অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটের পরে রত্নাকে কুমড়া পঞ্চায়েতের প্রধান করা হয়েছিল।

পরবর্তী সময়ে দলের বাকি সদস্যেরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। ভোটাভুটিতে রত্না পরাজিত হন। প্রধান পদ হারান।

হাবড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের অজিত সাহা বলেন, ‘‘কুমড়া এলাকায় দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব যে কর্মসূচি তৈরি করে দিয়েছিলেন, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়েছে। শনিবার আমি অসুস্থ ছিলাম। তা সত্বেও দলের ঘোষিত কর্মসূচিতে গিয়েছিলাম। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তো আমাকে ফোন করে ডাকেননি। দল করতে হলে রত্না হোক বা অন্য কেউ— দলের কর্মসূচিতে যেতে হয়। কেউ তাঁকে কোণঠাসা করছেন না।’’

গোটা বিষয় নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। হাবড়ার বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘তৃণমূলের তো উপর থেকে নীচ পর্যন্ত সবই দুর্নীতিগ্রস্ত। রত্নাকে না ডাকা ওদের গোষ্ঠীকোন্দলের ফল। তদন্ত করলে হয় তো দেখা যাবে, রত্নাই সঠিক। বাকিরা দুর্নীতিতে যুক্ত!’’

রবিবার জ্যোতিপ্রিয় দিদির দূত হয়ে গিয়েছিলেন গাইঘাটা ব্লকের ফুলসরা পঞ্চায়েত এলাকায়। সরকারি প্রকল্প বিলি নিয়ে সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের সাম্প্রতিক যে মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে, তা সমর্থন করেন না বলে এ দিন জানান জ্যোতিপ্রিয়। ফুলসরায় গ্রামবাসীদের সামনে বক্তৃতা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কোনও লোকের রং দেখা যাবে না। গরিব মানুষের একটাই রং, তিনি গরিব। তাঁকে খাবার দিতে হবে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে তৃণমূল কোনও রং দেখে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Didir Suraksha Kavach habra municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE