মেয়ের বিয়ের জন্য পোস্ট অফিসে ২ লক্ষ টাকা জমিয়েছিলেন স্বরূপনগরের মালঙ্গপাড়ার বাসিন্দা তপন মণ্ডল। টাকা তুলতে গেলে পোস্ট অফিসের কম্পিউটার খারাপ বলে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যান্ত্রিক গোলযোগ না মিটলে টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীরা তাঁকে জানিয়েছেন। এ দিকে, মেয়ের বিয়ের দিন এগিয়ে আসছে। টাকা না পেলে কী হবে, এই ভেবেই রাত দিন ঘুম হচ্ছে না তপনবাবুর।
শুধু তিনিই নন। এই সমস্যা এখন স্বরূপনগরের অনেকের। টাকা তুলতে গেলেই প্রায় দিন তাঁদের শুনতে হয়, কম্পিউটারে লিঙ্ক নেই। সে কারণে টাকা পয়সার লেনদেন বন্ধ। রাগ জমছিল মানুষের মধ্যে। মঙ্গলবার পোস্ট অফিসের এজেন্ট এবং গ্রাহকেরা দরজায় তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ গিয়ে বোঝালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পোস্টমাস্টার সুব্রত সরকার বলেন, ‘‘কর্মীর অভাবে কাজ বন্ধ রাখতে হয়। ডেটা এন্ট্রিতে ভুল থাকায় গ্রাহকদের হিসেবেও গণ্ডগোল হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি কোনও ব্যবস্থা না নেন, তা হলে ডাকঘর বন্ধই রাখতে হবে।’’
ডাকঘর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাকবাংলো, খাসপুর, মালঙ্গপাড়া, হঠাৎগঞ্জ, শাঁড়াপুল, নবাদকাটি-সহ অনেক এলাকার মানুষই এই ডাকঘরের উপরে নির্ভরশীল। ওই ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার-সহ কর্মী সংখ্যা ৩ জন। ডাককর্মীদের দাবি, ঠিক মতো প্রশিক্ষণ না দিয়েই কম্পিউটারে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ফলে গ্রাহকদের টাকার হিসেব গণ্ডগোল হচ্ছে। ঠিকমতো ব্যবহার করতে না পারায় সব তথ্যও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ দিন স্কুলশিক্ষক অমিয় কর বলেন, ‘‘দু’মাস হয়েছে এনএসসি-র মেয়াদ শেষ হয়েছে। অথচ এখনও টাকা পাইনি।’’ অনুপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডাকঘরে এনএসসি এবং পাস বই করতে গেলে কর্মীরা কম্পিউটারে গণ্ডগোল করছে। আমাদের সব ভুলভাল বলছে।’’ তা ছাড়া অনেকেই ডাকঘরে পেনশন তোলেন। তাঁরা আর পেনশন পাচ্ছেন না। বছর পঁচাত্তরের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘‘পেনশন তুলতে পারছি না। ওষুধ খাওয়ারও পয়সা নেই। কবে সব ঠিক হবে কে জানে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy