E-Paper

মাস পয়লায় পুজোর বাজার, ভাল-মন্দ মিশিয়ে কাটল রবিবার

দুর্গাপুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। মাস পয়লায় প্রথম রবিবার কেমন হল ব্যবসাপত্র, খোঁজ নিলেন আমাদের প্রতিবেদকেরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৫৭

মাস পয়লা এ বার রবিবার পড়ায় অনেকে মাইনে পাননি। বোনাসও আসেনি হাতে। তার উপরে দিনভর থেকে থেকে আকাশ কালো করে বৃষ্টি নেমেছে। তার মধ্যেও দুই জেলার কোথাও কোথাও বাজারে-দোকানে কিছু ভিড় চোখে পড়েছে। তবে মাছি মারতেও দেখা গেল অনেক বিক্রেতাকে।

বনগাঁ শহরে যশোর রোডের দু’পাশে বড়-ছোট পোশাকের দোকানগুলিতে এ দিন ভিড় চোখে পড়েছে। ট বাজার এলাকায় পোশাকের দোকানের মালিক বাপন সাহা বলেন, “গত শুক্রবার থেকে পুজোর বাজার জমতে শুরু করেছে। করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে এ বার পুজোয় বেচাকেনা ভালই হবে বলে মনে হচ্ছে। গত বছরও পুজোর এত দিন আগে বাজার শুরু হয়নি।” বিউটি পার্লার মালিক মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, দিন কয়েক আগে থেকেই মহিলারা পার্লারে আসছেন। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য অনেকে বেরোতে পারেননি বলেও জানা যাচ্ছে। তাঁর আশা, পুজোর সাজগোজের বাজার এ বার ভালই জমবে।

হাসনাবাদের ব্যবসায়ী জগদীশ সাহা অবশ্য জানালেন, ক্রেতার সংখ্যা এখনও কম। হিঙ্গলগঞ্জ বাজারের এক ব্যবসায়ী মানস নাথের কথায় বলেন, “ব্যবসা এখনও মন্দা। মানুষের হাতে টাকা-পয়সা নেই, তাই বিক্রিও অল্প হচ্ছে।” মালঞ্চ এলাকার বস্ত্র ব্যবসায়ী ইলতুৎমিস সর্দার বলেন, “ব্যবসায় কঠিন প্রতিযোগিতা এসে গিয়েছে। অনলাইনে বহু মানুষ জামাকাপড় কিনছেন। মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা মাথায় রেখে পুজোর সময়ে কম দামের পোশাকের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা। আমাদেরও সে সব মাথায় রাখতে হচ্ছে।”

রবিবার সকালে অবশ্য ভিড় চোখে পড়েছে দেগঙ্গা, আমডাঙা, বারাসত ১ ব্লকের বিভিন্ন বাজারে। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি উপেক্ষা করেই চলেছে কেনাকাটা। তবে গ্রামীণ এলাকার মহিলাদের জেলাসদর বারাসতে এসে কেনাকাটা করার আগ্রহ বেশি। বারাসতের পোশাক, জুতোর দোকানে ভিড় ছিল ভালই। তবে বারাসত-সংলগ্ন ব্লকগুলির বহু ব্যবসায়ীর দাবি, স্থানীয় বাজারের বদলে বারাসতের বাজার থেকে কেনাকাটার চাহিদা বেড়েছে। দেগঙ্গার ব্যবসায়ী মনোজ মণ্ডল বলেন, “বারাসতের বড় দোকানের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিপণীতে পোশাকের বেশি সম্ভার রয়েছে। স্থানীয় ছোট দোকানে বিপুল পরিমাণ মজুত রাখা সম্ভব নয়। মধ্যবিত্তেরা বারাসতেই কেনাকাটা করছেন বেশি। এলাকার তুলনামূলক নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষেরা স্থানীয় দোকান থেকে কেনাকাটা করছেন।” আমডাঙার লতিকা বিশ্বাস বলেন, “কেনাকাটা করলে বারাসতেই আসি। অল্প দূরত্বের মধ্যেই সব ব্র্যান্ডের জিনিস পেয়ে যাই।”

অক্টোবর মাস পড়তেই পুজোর বাজার জমতে শুরু করেছে ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবায়। রবিবার ভিড় দেখা গেল বহু দোকানে। ক্যানিংয়ের বস্ত্র ব্যবসায়ী সৌরভ মণ্ডল বলেন, “গত কয়েক দিন সে ভাবে বিক্রি হয়নি। তবে রবিবার সকাল থেকে বাজারে মানুষের ভিড় বেড়েছে। এ দিন থেকেই মনে হচ্ছে পুজোর বাজার শুরু হল। আশা করি এ বছর সকলের ব্যবসা ভালই হবে।”

কাকদ্বীপ বাজারে অবশ্য তেমন ভিড়ভাট্টা চোখে পড়ল না। শপিং মলও কার্যত ফাঁকা। টানা দু’দিনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনেকে বেরোতে পারেননি। গ্রামে একশো দিনের কাজ না থাকলেও এ বছর মাছচাষ আশানুরূপ হয়েছে বলে জানালেন অনেকে। মূলত কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানা ও ফ্রেজারগঞ্জ এলাকায় মৎস্যজীবীদের বসবাস বেশি। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, দুর্যোগ থাকায় এ ক’দিন জামাকাপড়ের বিক্রি কমেছে। ভিন্ন মত, সাগর রুদ্রনগর বাজার এলাকার ব্যবসায়ী দিব্যেন্দু মাইতির। তিনি জানান, বৃষ্টি হলেও জামাকাপড়ের বিক্রি তেমন কমেনি। এ বছর পুজোর অনেক আগে থেকেই ভাল বিক্রি শুরু হয়েছে। আশা করছি, আরও ভাল ব্যবসা হবে।

ব্যবসায়ী মহলের অনেকেরই মতে, চাকুরীজীবীদের ভিড় যথারীতি হবে দোকানে দোকানে। তবে মূল্যবৃদ্ধির বাজারে প্রান্তিক মানুষজন কতটা কেনাকাটা করবেন, তা নিয়ে সংশয় এ বার থাকছেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2023

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy