E-Paper

শান্তি বজায় রাখতে রাস্তায় টহল প্রবীণদের

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এলাকায় মারামারি, ভাঙচুর হয়েছিল। ওই বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিরোধীদের বহু ঘর-বাড়ি।

ঋষি চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৩ ০৮:২৬
ভোট চলাকালীন রাস্তায় পাহারা দিচ্ছেন এলাকার প্রবীনেরা ।

ভোট চলাকালীন রাস্তায় পাহারা দিচ্ছেন এলাকার প্রবীনেরা । — নিজস্ব চিত্র।

ভোটে অশান্তি ঠেকাতে পুলিশের পাশাপাশি রাস্তায় জমায়েত সরালেন গ্রামের প্রবীণ নাগরিকেরা। সর্বদল বৈঠক ডেকে তাঁরা আগেই জানিয়েছিলেন, অশান্তি করলে নেবেন। দত্তপুকুর থানার বারাসত ব্লক ১ ব্লকের কোটরা জাফরপুর এলাকায় সোমবার রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেল তাঁদের।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এলাকায় মারামারি, ভাঙচুর হয়েছিল। ওই বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিরোধীদের বহু ঘর-বাড়ি। শনিবার ভোটেও হিংসা ছড়ায়। পুলিশের দাবি, ওই দিন হামলায় ব্যালট বাক্স ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বারাসত ১ ব্লকের দু’টি বুথে সোমবার ফের ভোট নেওয়া হয়। শনিবার জাফরপুর নিম্মবুনিয়াদি বুথে ব্যালটে আইএসএফের প্রতীক না থাকায় উত্তেজিত হয়ে ওঠেন দলের কর্মীরা। বুথে ঢুকে ভাঙচুর করা হয় ব্যালট বাক্স। নষ্ট হয় ব্যালট পেপার। পাশের কিলিসপুর এপপি স্কুলের বুথে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বুথ দখল করে দেদার ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ তোলে আইএসএফ। নির্বাচন কমিশন ও নিরাপত্তা রক্ষীরা কোনও পদক্ষেপ না করায় তারা এখানেও ব্যালট বাক্স ভাঙচুর করে। পরে উত্তেজনা ছড়ায় জাফরপুর গ্রামে।

শনিবার রাতেই স্থানীয় মসজিদে নমাজের পরে এলাকার প্রবীণেরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন, সর্বদল বৈঠক করবেন। চটজলদি তৈরি হয ‘জাফরপুর শান্তি কমিটি।’ রবিবার শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে বসেন তাঁরা। সিদ্ধান্ত হয়, সোমবার ভোটে এলাকায় মারামারি করলে কমিটির লোকজনই হামলাকারীদের ধরে পুলিশে দেবেন। ভোটকেন্দ্রের চারপাশে পাহারা দেবেন প্রবীণেরাই। সরাবেন জটলা। সেই মতোই সোমবার সকাল থেকে রাস্তায় দাঁড়িতেই কড়া নজর রাখেন তাঁরা।

শান্তি কমিটির সদস্য মহম্মদ মোমিনুল হক বলেন, "আমরা এলাকায় অশান্তি হতে দেব না বলে রাস্তায় টহল দিচ্ছি। আমরা চাই, নিজের ভোট পছন্দের প্রার্থীকে দিন সকলে। কমিটির সদস্যেরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমর্থক। কিন্তু গ্রামে শান্তিরক্ষায় সকলে এককাট্টা হয়েছি।"

আইএসএফ প্রার্থী মারুফা বিবি বলেন, "শনিবারের ভোটে ব্যালটে আমার নাম ও প্রতীক না থাকায় কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ব্যালট বাক্স ফেলে দেন। এলাকার প্রবীণেরা কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আজ কোনও অশান্তি হয়নি।"তৃণমূল প্রার্থী রাজিয়া খাতুন বলেন, "আইএসএফ অশান্তি করেছিল দু’টি বুথেই। সে জন্য আবার ভোট হচ্ছে। গ্রামের প্রবীণেরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য ভাল উদ্যোগ নিয়েছেন।"

কিন্তু শনিবার ভোটের দিন এই উদ্যোগ নিলে তো ফের ভোট নেওয়ারই দরকার পড়ত না। কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘গোলমাল হবে, তা আমরা আঁচ করতে পারিনি। তবে ভবিষ্যতেও এ নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে সকলকে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 Barasat Election Violence Duttapukur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy