Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
municipal election

Bangaon Municipality: ওই ভাবে ভোট করিয়ে ভুল করেছি! ২০১৫ সালের জন্য ক্ষমা চাইলেন বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রশাসক

সম্প্রতি একটি সভা থেকে ২০১৫ সালের নির্বাচন সংক্রান্ত কথা বলেছেন শঙ্কর আঢ্য। জেলা নেতৃত্বের নির্দেশেই তিনি এ কাজ করেছিলেন বলে দাবি তাঁর।

বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসক শঙ্কর আঢ্য।

বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসক শঙ্কর আঢ্য। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২১ ১৩:১০
Share: Save:

২০১৫ সালের পুরনির্বাচনে বনগাঁর একটি ওয়ার্ডে কী ভাবে তৃণমূলকে তিনি জিতিয়েছিলেন, তা স্বীকার করে নিলেন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসক শঙ্কর আঢ্য। সম্প্রতি মিলনপল্লি এলাকায় একটি সভা থেকে ২০১৫ সালের নির্বাচন সংক্রান্ত কথা বলেছেন শঙ্কর। সেই কাজের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। বক্তব্যের ওই ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে। তার পর থেকে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর।

ওই সভায় শঙ্কর যা বলেছেন, তাতে বকলমে রিগিংয়ের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। জেলা নেতৃত্বের নির্দেশেই তিনি এ কাজ তিনি করেছিলেন বলে দাবি করেছেন। শঙ্কর ওই সভায় বলেছেন, ‘‘আমি জীবনে যদি কোনও রাজনৈতিক ভুল করে থাকি, তাহলে তা করেছি ২০১৫ সালের পুরভোটের সময়। যদিও সেই ভুল নিজের ইচ্ছায় নয়, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কথায় করেছিলাম। বামফ্রন্ট অধ্যুষিত এলাকায় সকাল সকাল ভোট হচ্ছিল। হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় ছুটে গিয়েছিলাম বনগাঁ হাইস্কুলে। আমিও প্রার্থী ছিলাম ওই নির্বাচনে। তবুও জেলার প্রিয় মন্ত্রীর নির্দেশে ছুটে গিয়েছিলাম সেখানে। নিজে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোট করিয়েছিলাম। সে দিন ভুল করেছিলাম। ক্ষমা চাইছি। ক্ষমা চাওয়া অপরাধ নয়।’’ নাম না নিলেও তৎকালীন জেলাসভাপতি এবং খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশে কথায় শঙ্কর বলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি জ্যোতিপ্রিয়।

পুরভোট নিয়ে শঙ্করের এই মন্তব্যের সঙ্গে সহমত নন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের বনগাঁ সংসদীয় জেলা সভাপতি আলোরানি সরকার বলেছেন, ‘‘ক্ষমা চাওয়া অপরাধ নয়। ভালই করেছেন। তবে যে ভাবে কারও নির্দেশের কথা বলেছেন তা ঠিক নয়। অন্য কাউকে দোষারোপ করে গর্হিত কাজ করেছেন। ২০১৫ সালের ভোটে কী হয়েছে বলতে পারব না। আমি তিন মাস হল এসেছি। তবে আগামী দিনের নির্বাচন সুষ্ঠ ভাবে করাবো। কোনও রিগিং চলবে না।’’ ২০১৫ সালে বনগাঁর ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন মৌসুমী চক্রবর্তী। তিনিও শঙ্করের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে সারা রাজ্যের মানুষ ভোট দেয়। বনগাঁতেও তার ব্যতিক্রম হয় না। ২০১৫ সালেও তাই হয়েছিল।’’ জেতার জন্য তাঁর রিগিয়ের দরকার নেই বলে দাবি মৌসুমীর। তিনি বলেছেন, ‘‘কে কোথায় কী বলল তা আমার জানা নেই। আমি এই পাড়ার মেয়ে। এই পাড়ার বউ। এখানকার সকলের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক আছে। মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেছিলেন।’’

শঙ্করের এই মন্তব্যের পর তৃণমূলকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বনগাঁর বিজেপি নেতা দেবদাস মণ্ডল বলেছেন, ‘‘এদের ভগবান যেমন ক্ষমা করবে না। বনগাঁর মানুষও ক্ষমা করবে না। বনগাঁর মানুষের সুখশান্তি কেড়ে নিয়েছে। ২০১৫ সালে নিজেও জিতেছিলেন রিগিং করে। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডও জিতিয়েছিলেন রিগিং করে। নিজেই এ কথা স্বীকার করেছেন। আগামী সময়ে ভোটে বনগাঁর মানুষ এই অন্যায়ের জবাব দেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

municipal election Bangaon municipality chairman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE