Advertisement
E-Paper

চাষের খরচ তুলতে হিমশিম অবস্থা

বাজারে ফুলকপির চাহিদা থাকলেও চাষিরা টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠছে দিকে দিকে। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ফুলকপি চাষেরও একই অবস্থা। দক্ষিণ ২৪ ভাঙড়ে ছবিটা আলাদা কিছু নয়।

সামসুল হুদা

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০৫
মহম্মদ আনোয়ার আলি (পানপুকুর)

মহম্মদ আনোয়ার আলি (পানপুকুর)

এক বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করতে আনোয়ার আলির খরচ পড়েছিল প্রায় সাড়ে ২৭ হাজার টাকা। ফসল বেচে পেয়েছেন ৩০ হাজার। বাকি আরও দু’বিঘা জমিতে ফুলকপি আছে তাঁর। কিন্তু সে সব বিক্রি করেও খুব একটা লাভ হবে বলে আর আশা করছেন না ভাঙড়ের পানাপুকুর গ্রামের চাষি আনোয়ার।

বাজারে ফুলকপির চাহিদা থাকলেও চাষিরা টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠছে দিকে দিকে। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ফুলকপি চাষেরও একই অবস্থা। দক্ষিণ ২৪ ভাঙড়ে ছবিটা আলাদা কিছু নয়।

চাষিরা জানালেন, মরসুমের শুরুতে বাজারে ফুলকপির দাম ছিল ৪০-৪৫ টাকা প্রতি পিস। মাঝে হঠাৎ কপির বাজার নেমে গিয়ে ৩-৪ টাকা হয়ে যায়। আবার বাজার উঠতে শুরু করেছে। এখন বাজারে ফুলকপির দাম ১২-১৪ টাকা প্রতি পিস। সেই কপি ফড়ে বা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ৫-৬ টাকায় বিক্রি করছেন চাষিরা। কাঁঠালিয়া গ্রামের আকচির মোল্লা বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে ফুলকপি চাষ করে লাভের মুখ দেখেছিলাম। এ বার খরচের টাকাটা উঠতেই দম বেরিয়ে যাচ্ছে।’’

কেন এমন পরিস্থিতি?

ভাঙড়ের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, প্রথম দিকে ফুলকপির ফলন ভাল হয়েছিল। বাজারে দামও ভাল ছিল। কিন্তু অকাল বৃষ্টিতে অনেক কপি নষ্ট হয়ে যায়। অনেকে ওই সময়ে পচনের ভয়ে খরচ তুলতে ফুলকপি কম দামে বিক্রি করে দেন। বাজারও হঠাৎ করে পড়ে যায়। বৃষ্টিতে ফুলকপি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরে অনেকে আবার নতুন করে কপি চাষ করেছেন। সেই সব কপি আর কিছু দিনের মধ্যে বাজারে উঠবে। তবে ফের কপির ফলন ভাল হয়েছে। ফলে চাষিরা দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।

ভাঙড় ২ ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে কিছু কপি নষ্ট হয়েছে ঠিকই, তবে এ বার ফলনও ভাল হয়েছে। চাষিরা দাম পাচ্ছেন না, এমন অভিযোগ আমরা পাইনি।’’ কিন্তু চাষিদের অভিজ্ঞতা তো অন্য কথা বলছে। বিষয়টি নিয়ে ব্লক কৃষি আধিকারিককে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন কেটে দেন।

লঙ্কাচাষিদের অবস্থাও তথৈবচ। কাঁঠালিয়া গ্রামের ছায়রা বিবি ১০ কাঠা জমি লিজে নিয়ে লঙ্কা চাষ করেছেন। খরচ পড়েছে ২০ হাজার ৬০০ টাকা। সামান্য কিছু লঙ্কা উঠেছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা ১৬ টাকা কেজি লঙ্কা নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ, বাজারে সেই লঙ্কা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা প্রতি কেজি দরে। এমন চলতে থাকলে ফসলের খরচটুকু উঠবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন ছায়রা।

আনাজ চাষিরা মনে করছেন, যে ভাবে দিন দিন সার দাম, বীজ বা অন্যান্য কৃষি সরঞ্জামের দাম বাড়ছে, সেই তুলনায় বাজারে সব্জির দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এমন চলতে থাকলে আনাজ চাষে আগ্রহ হারাবেন অনেকেই, মনে করছেন চাষিদের একাংশ।

Bhangar Cauliflower Price
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy