বাবা-মায়ের সঙ্গে বিশ্বজিৎ। নিজস্ব চিত্র।
টানা কয়েক দিন ধরে হাঁড়ি চড়েনি বনগাঁর জয়পুরের দেবনাথ পরিবারে। দরিদ্র পরিবারে সংসারের টাকা বাঁচিয়ে আগে বড়দিনে বাড়িতে কেক আসত। কিন্তু এ বার সে সব বন্ধ।
প্রৌঢ় সুকুমার দেবনাথের ছেলে বছর তিরিশের বিশ্বজিতের দু’টি কিডনিই বিকল হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকেরা বলে দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। কিন্তু সে তো অনেক টাকার ব্যাপার! নানা পরীক্ষা ও ওষুধ কেনার জন্য ইতিমধ্যেই খরচ হয়ে গিয়েছে লক্ষাধিক টাকা। পেশায় বাসনের ফেরিওয়ালা সুকুমারবাবু এখন ছেলের প্রাণ রক্ষায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছুটে চলেছেন হাসপাতাল থেকে নানা সরকারি দফতরে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় দু’টি ক্লাব, স্থানীয় মানুষ ও পুরসভা থেকে আর্থিক সাহায্য করেছে তাঁদের। পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য আশ্বাস জানালেন, ইতিমধ্যেই পুরসভার পক্ষ থেকে পরিবারটিকে কিছু আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও করা হবে। কিন্তু প্রয়োজনীয় কিডনি এখনও মেলেনি।
দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তীর্ণ বিশ্বজিৎ গৃহশিক্ষকতা করতেন। সংসারে প্রাচুর্য না থাকলেও অন্ন-জলের অভাব ছিল না। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ঘাড়ে যন্ত্রণা ও উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা দেখা দেয় বিশ্বজিতের। এসএসকেএম হাসপাতালের বহির্বিভাগে দেখানোর পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে ভর্তি হতে বলেন। মাসখানেক ভর্তি থাকার পরে পরীক্ষায় ধরা পড়ে, একটি কিডনি অকেজো। কিন্তু তারপরে অন্য কিডনিতেও সমস্যা ধরা পড়ে। এখন দু’টি কিডনিই বিশেষ কাজ করছে না। সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালেসিস চলছে। সেই টাকা দিতে দিতে ফুরিয়ে আসছে দেবনাথ পরিবারের জমানো পুঁজি।
ছেলেকে বাঁচাতে নিজেদের কিডনি দিতে চেয়েছিলেন বিশ্বজিতের বাবা-মা। কিন্তু প্রয়োজনীয় পরীক্ষার পরে জানা যায়, তাঁদের কিডনি নিতে পারবেন না বিশ্বজিৎ।
দেবনাথ দম্পতির আক্ষেপ, ‘‘চোখের সামনে ছেলের এমন অবস্থা আর সহ্য করা যাচ্ছে না। জানি না, কোন পরিণতির দিকে এগিয়ে চলেছে ও।’’
—বিশ্বজিতের সঙ্গে যোগাযোগ: ৯৬৪১৫৪৩৪২০।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy