—নিজস্ব চিত্র।
প্রায় ৪৮ ঘণ্টা হতে চলল, এখনও পুরোপুরি নেভানো গেল না দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের সুভাষগ্রামে প্লাস্টিক কারখানার আগুন। শনিবার রাতে ওই কারখানায় আগুন লেগেছিল। একে একে দমকলের ১৫টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও তা পুরোপুরি নেভানো যায়নি। রবির পর সোমবারও দেখা গেল, আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দমকল।
সুভাষগ্রামে বিদ্যুত দফতরের সাব-স্টেশনের উল্টো দিকে প্রায় বিঘে দুয়েক জমির উপর বছর দশেক আগে তৈরি হয় কারখানাটি। মূলত প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরি হয় সেখানে। শনিবার মহরমের জন্য বেশির ভাগ শ্রমিকেরই ছুটি ছিল। মেরেকেটে জনা ১৫ শ্রমিক ছিলেন কারখানায়। রাত ৮টা নাগাদ হঠাৎই ধোঁয়া দেখে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। এর পরেই ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে আগুন। দমকল সূত্রে খবর, দাহ্য প্লাস্টিক থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তার উপর একের পর এক রাসায়নিকের ড্রাম ফাটতে থাকায় বাড়তে থাকে আগুনের মাত্রাও। রবিবার সকালে কারখানার সামনে গিয়ে দেখা যায়, তখনও কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে অনেক জায়গা থেকে। সন্ধ্যা পর্যন্ত আগুন নেভানোর কাজ করেন দমকলকর্মীরা। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে রাতে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে রেখে দেওয়া হয়েছিল। দমকল সূত্রে খবর, সোমবারও কিছু কিছু ‘পকেটে’ আগুন রয়ে গিয়েছে। দমকলের এক আধিকারিক জানান, টিনের ভাঙা ছাউনির নীচে আগুনের উৎসের কাছে পৌঁছনো যাচ্ছে না। ভেঙে পড়া টিনের ছাউনি সরাতে মাটি সরানোর যন্ত্রও নিয়ে আসা হয়।
কারখানায় অন্তত সাড়ে ছ’শো শ্রমিক কাজ করতেন। তাঁদের মধ্যেই অনেকেই ওই এলাকার মানুষ। ভিন্রাজ্যেরও কিছু শ্রমিক কাজ করতেন সেখানে। কারখানা সূত্রেই খবর, প্রায় দু’-আড়াই হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কারখানার উপর নির্ভরশীল। সোমবারও বহু শ্রমিক কারখানার সামনে ভিড় করেন। আগামী দিনে কী ভাবে পেটের ভাত জুটবে, তা নিয়েই দুশ্চিন্তা তাঁদের। এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘জানি না, কবে আবার কারখানা মাথা তুলে দাঁড়াবে। আবার কবে কাজ শুরু হবে। এখন সংসার টানব কী করে, সেটাই ভাবছি।’’ শ্রমিকদের একাংশ জানান, তাঁরা কারখানাতেই থাকতেন। আশ্রয় হারিয়ে এখন তাঁদের এলাকার মন্দির-মাদ্রাসায় কোনও মতে রাত কাটাতে হচ্ছে। কারখানার ম্যানেজার কাঞ্জন ঘোষও বলেন, ‘‘শ্রমিকদের কী হবে, সেটাই এখন মূল চিন্তা!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy