রাবণের চিতার মতো কয়েক দিন ধরে ধিকিধিকি আগুন জ্বলেই চলেছে ভাগাড়ে। বিষাক্ত ধোঁয়ায় ঢাকছে এলাকা। কামারহাটি পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাঞ্জা ভিলা এলাকার এই সমস্যার কথা জানেন পুরকর্তারাও। কিন্তু সমাধান তাঁরা বার করতে পারছেন না। কারণ, বাইরে থেকে আগুন দেখা যাচ্ছে না। শুধু জোরে হাওয়া দিলে ধোঁয়া বেরোচ্ছে।
পুরসভা আপাতত একটি গভীর নলকূপ বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অল্প আগুন ধরলেই যাতে জল দেওয়া যায়। চিকিৎসকদের মতে, এই ধোঁয়ায় মিশে থাকে কার্বন মনোক্সাইড, হাই়ড্রোজেন সালফাইড, সালফার-ডাই-অক্সাইডের মতো গ্যাস। থাকে হাইড্রোকার্বনও। ধোঁয়ায় ভুগছেন এলাকাবাসী ও একটি স্কুলের পড়ুয়ারা। ক্লাসঘরের জানলা দিয়ে ধোঁয়া ঢুকে পড়ছে। প্রচণ্ড কাশির সঙ্গে পড়ুয়াদের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। কারও বমিও হচ্ছে।
পুরপ্রধান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘সমস্যা মারাত্মক। কিন্তু বিকল্প ভাগাড় তৈরির জমি না পাওয়া পর্যন্ত সমস্যাও মিটবে না।’’ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘ উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন পুরসভারই বিকল্প ভাগাড় তৈরির ক্ষেত্রে জমির সমস্যা রয়েছে। তবে চার পাঁচটি পুরসভা মিলে একটি জায়গা দেখে বিকল্প ভাগাড় গড়লে সমস্যা অনেকটাই মিটবে।’’
পাঞ্জা ভিলা-র ওই ভাগাড়ের পাশেই সব্জিবাগান কলোনি এবং উল্টো দিকে সরস্বতী স্কুল। ফেব্রুয়ারির শেষে এক রাতে আগুন লাগে ভাগাড়ে। দমকল আগুন নেভালেও এখনও ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বাতাসে ছড়াচ্ছে প্রাণঘাতী বিষ। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বিমল সাহার কথায়, ‘‘ওই গ্যাসে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। দীর্ঘদিনের আবর্জনা জমাট বেঁধে গিয়েছে। ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহেশপ্রসাদ সিংহ বলেন, ‘‘এ ভাবে কত দিন চলবে, জানি না।’’ চিকিৎসকদের মতে, ওই গ্যাস দীর্ঘ দিন ধরে শরীরে ঢুকলে হাঁপানি-সহ শ্বাসনালী ও ফুসফুসের রোগ হতে পারে। পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, শুধু কামারহাটি নয়, আরও বহু ভাগাড়ের একই অবস্থা।