Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

মুক্তির স্বাদ মিলল, বলছেন অনেকেই

কবে ফিরে  আসবে খোলামেলা, স্বাভাবিক দিনগুলি— কোভিড টিকাকরণের প্রথম দিন থেকে শুরু হয়ে গেল সেই আলোচনা। শুরু হল স্বপ্ন দেখা।

প্রক্রিয়া: বাঁ দিকে, ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে চলছে টিকাকরণ। ডান দিকে, টিকা নেওয়ার পরে আধ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হল ওঁদের। হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। ছবি দু’টি তুলেছেন দিলীপ নস্কর ও সুজিত দুয়ারি।

প্রক্রিয়া: বাঁ দিকে, ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে চলছে টিকাকরণ। ডান দিকে, টিকা নেওয়ার পরে আধ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হল ওঁদের। হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। ছবি দু’টি তুলেছেন দিলীপ নস্কর ও সুজিত দুয়ারি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:২৫
Share: Save:

কবে ফিরে আসবে খোলামেলা, স্বাভাবিক দিনগুলি— কোভিড টিকাকরণের প্রথম দিন থেকে শুরু হয়ে গেল সেই আলোচনা। শুরু হল স্বপ্ন দেখা।

শনিবার ছিল টিকাকরণের প্রথম দিন। সকাল থেকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে হইচই ব্যাপার। নীল-সাদা বেলুন, ফুল, পোস্টারে সাজানো হয়েছিল হাসপাতাল চত্বর। সকালে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু হয়। প্রথম ভ্যাকসিন নেন হাসপাতালের সাফাইকর্মী দেবব্রত রায়। বললেন, ‘‘প্রথমে ভয় লাগলেও, এখন আর ভয় নেই। দীর্ঘ কয়েক মাস করোনার আতঙ্কে কাটানোর পরে ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকটাই নিশ্চিন্ত হলাম।’’

বসিরহাট জেলা হাসপাতাল-সহ মিনাখাঁ, টাকি, হাড়োয়া এবং বাদুড়িয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। বসিরহাট জেলা হাসপাতালে এ দিন প্রতিষেধক নেন স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নির্মাল্য রায়। দেবব্রত বলেন, ‘‘সকলে নির্ভয়ে ভ্যাকসিন নিতে পারেন। যাঁরা ভ্যাকসিন নিচ্ছেন, তাঁদের কোনও অসুবিধা হলে আমরা দেখব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এত দিন যেন কারাগারে বন্দি ছিলেন মানুষ। আজ ভ্যাকসিন নিয়ে মুক্তির স্বাদ পেলেন। এই ভাল লাগার অনুভূতি একেবারেই অন্য রকম।’’

বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলা সূত্রের খবর, প্রথম পর্বে বসিরহাটে ভ্যাকসিনের ১৩,৫০০ ডোজ এসেছে। প্রথম দিনে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ প্রায় তিনশো মানুষ প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ নিয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ ২৮ দিনের মাথায় নিতে হবে।

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো এ দিন প্রথমে প্রতিষেধক নেন। সুপার বলেন, “প্রতিষেধক নেওয়ার পরে কোনও শারীরিক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন একশোজনকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে।

হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালেও প্রথম দিনে একশোজনকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, বারাসত স্বাস্থ্য জেলায় ১১টি এবং বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলায় ৫টি জায়গা মিলিয়ে উত্তর ২৪ পরগনায় এ দিন ১৬টি জায়গায় টিকা দেওয়া হয়েছে। বনগাঁ ও গাইঘাটা ব্লকে এ দিন টিকাকরণের কাজ হয়নি। হিঙ্গলগঞ্জেও টিকা দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্লকগুলিতে পরে টিকাকরণ হবে।

এ দিন প্রতিষেধক দেওয়া হয় ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও। সহকারী অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘আজ একশো জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের টিকা দেওয়া হবে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, টিকা নেওয়ার পরে সামান্য জ্বর আসতে পারে। সেই মতো আমরা প্রস্তুত আছি।’’

ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলা সূত্রের খবর, ৮টি সেন্টারে দশ হাজার টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। এ দিন টিকা নেন ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক চপলকুমার পান্ডা। তিনি জানান, “দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হল। কোনও কষ্ট হয়নি। জ্বর বা অন্য উপসর্গও নেই।” বারুইপুর, ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে শনিবার সকাল থেকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল, কুলতলি ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন ব্লক হাসপাতালগুলিতেও ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE