Advertisement
E-Paper

ভুয়ো আইপিএস ও তার সঙ্গিনী গ্রেফতার

নীল বাতি লাগানো গাড়ি চালিয়ে এসেছিল এক যুবক। সঙ্গে সুবেশা তরুণী। হোটেলে পরিচয় দেয় স্বামী-স্ত্রী হিসাবে। আরও বলে, ওই যুবক ক্রাইম ব্রাঞ্চের আইপিএস অফিসার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৬ ০১:০৮
ধৃত অভীক ও অমিত্রা। ছবি: দিলীপ নস্কর।

ধৃত অভীক ও অমিত্রা। ছবি: দিলীপ নস্কর।

নীল বাতি লাগানো গাড়ি চালিয়ে এসেছিল এক যুবক। সঙ্গে সুবেশা তরুণী। হোটেলে পরিচয় দেয় স্বামী-স্ত্রী হিসাবে। আরও বলে, ওই যুবক ক্রাইম ব্রাঞ্চের আইপিএস অফিসার। হোটেলে নানা দুর্নীতি চলছে বলে খবর আছে তার কাছে। তাই সরেজমিনে আসা। পরে অবশ্য জানা গিয়েছে, ওই যুবকের পরিচয় ভুয়ো। গ্রেফতার করা হয়েছে অভীক মিত্র নামে বছর তিরিশের যুবককে। ধরা পড়েছে তার স্ত্রী বলে পরিচয় দেওয়া অমিত্রাও।

ঘটনাটি ডায়মন্ড হারবারের। ধৃতদের বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবার আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ ওই দম্পতির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিজে থেকে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

এ দিন ঘটনার তদন্তে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পশ্চিম) চন্দ্রশেখর বর্ধন। তিনি বলেন, ‘‘বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে ওই দম্পত্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই যুবক ভুয়ো পরিচয়পত্র দেখিয়েছিল, জেরায় তা স্বীকারও করেছে। ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার বলে পরিচয় দিয়েছিল নিজেকে। চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা তোলা সংক্রান্ত কিছু নথিপত্রও উদ্ধার হয়েছে তার কাছ থেকে। বিস্তারিত তদন্ত চলছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনারপুরের গড়িয়া গার্ডেনস-এর একটি আবাসনে থাকে ওই দম্পত্তি। বুধবার বেলা দেড়টা নাগাদ ডায়মন্ড হারবারের হোটেলটিতে আসে তারা। ওই হোটেলের ম্যানেজারকে অভীক বলে, সে ব্যারাকপুর ক্রাইম ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। হোটেলে একটি ঘর নেন ওই তরুণ-তরুণী। পরে এই হোটেলে বেআইনি কাজ চলছে বলে দাবি করে অভীক। পুলিশ ডেকে তল্লাশি চালানোর হুমকি দেয়।

সে কথা শুনে প্রথমটায় থতমত খেয়ে গিয়েছিলেন ম্যানেজার। পরে অভীকই প্রস্তাব দেয়, ৫ লক্ষ টাকা দিলে সব ‘মিটমাট’ হয়ে যাবে। এই কথায় সন্দেহ হয় ম্যানেজার ও হোটেল কর্মীদের। তাঁরা গোপনে খবর দেন ডায়মন্ড হারবার থানায়।

পুলিশ গিয়ে অভীক ও তার সঙ্গিনী জেরা করার পরে কথাবার্তায় অসঙ্গতি পায়। গ্রেফতার করা হয় তাদের। ধৃতদের কাছে থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ল্যাপটপ, কয়েকটি মোবাইল ফোন, ও ভুয়ো চাকরি সংক্রান্ত বেশ কিছু কাগজপত্র। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে নীলবাতি লাগানো গাড়িটিও।

পুলিশের জেরায় ওই অভীক ও অমিত্রা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী হিসাবেই পরিচয় দিয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই দম্পতি জানিয়েছে, তাদের আদি বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে। স্কুলে পড়াশোনার সময় থেকে দু’জনের প্রেম। ২০১২ সালে বিয়েও করে তারা। বিয়ের সময়েও শ্বশুরের কাছে ভুয়ো আইপিএস পরিচয় দিয়েছিল অভীক। বিভিন্ন জায়গার আইপিএস পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা তুলত সে। স্নাতক দম্পতির মূল রোজগারের পথ সেটাই। পুলিশ তদন্তে জেনেছে, চলতি বছরের মার্চ মাসেও ভুয়ো পরিচয় দিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরে গ্রেফতার হয়েছিল অভীক। মাসখানেক জেলও খাটে।

চাকরির টোপ দিয়ে টাকা তোলার কাজে অভীকের সঙ্গে কোনও চক্রের যোগাযোগ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বর্ধমানে কিছু চাকরি-সংক্রান্ত ভুয়ো নথিপত্র মিলেছে তার কাছ থেকে। ডায়মন্ড হারবারের আইসি গৌতম মিত্র জানান, জেরার শুরুতেও চোটপাট ছিল দেখার মতো। বার বার নিজেকে পুলিশ আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিচ্ছিল। কিন্তু একটা সময়ে জেরায় ভেঙে পড়ে।

IPS couple
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy