Advertisement
E-Paper

বিসর্জনের জৌলুস কমেছে ইছামতীতে 

ইছামতী নদীতে ভাসানের এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করেন বহু মানুষ। এ দিন এ পার-ও পার বাংলার মানুষের কথোপকথন, শুভেচ্ছা বিনিময় চলে ইছামতীর বুকে নৌকো থেকে।

নির্মল বসু 

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৩৩
ইছামতীতে ভাসানের সময়ে তোলা নিজস্ব চিত্র

ইছামতীতে ভাসানের সময়ে তোলা নিজস্ব চিত্র

জোড়া নৌকোর মাঝে বসানো প্রতিমা। চারদিকে অসংখ্য মানুষের ভিড়। প্রতিমা বিসর্জন দিতে ব্যস্ত দুই বাংলার মানুষ। টাকিতে ভাসানের এই পরিচিত চিত্র ক্রমশ বদলে যাচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনের কড়াকড়িতে ইছামতীতে ভাসানের উৎসাহ কমছে বলে মনে করেন পর্যটকদের অনেকেই।

ইছামতী নদীতে ভাসানের এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করেন বহু মানুষ। এ দিন এ পার-ও পার বাংলার মানুষের কথোপকথন, শুভেচ্ছা বিনিময় চলে ইছামতীর বুকে নৌকো থেকে। আকাশের বুকে সন্ধ্যা তারা ফুটতেই ‘মা তুমি আবার এসো’ বলে শুরু হয় প্রতিমা নিরঞ্জন। জোড়া নৌকো সরে যায়। প্রতিমা জলের গভীরে তলিয়ে যায়।

২০১৩ সালে টাকিতে বিসর্জনের দিন বাংলাদেশি বজরার সঙ্গে যাত্রিবোঝাই ভারতীয় নৌকোর ধাক্কা লেগে জলে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল ভারতীয় গবেষকের। সে বার ভাসানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার মানুষ বেআইনি ভাবে ঢুকে পড়েছিল এ পারে। তা নিয়ে সোচ্চার হন টাকির মানুষ। বসিরহাট মহকুমার টাকির অন্য পারে বাংলাদেশের শ্রীপুর, পারুলিয়া, ভাতসালা, শাকরা, দেভাটা, ঘলঘলে গ্রাম। এক সময়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মানুষ দেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে জাতি-ধর্ম ভুলে দুর্গা ভাসানে ইছামতীর বুকে নৌকো নিয়ে ভেসে বেড়াতেন। ফুল-মিষ্টি ছুড়ে পরিচয় বিনিময় করতেন। যা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসত টাকিতে।

তবে কয়েক বছর আগের ঘটনায় নড়ে বসে প্রশাসন। ঠিক হয় যে যার জলসীমার মধ্যে থাকবে। ফলে বিজয়া দশমীর উৎসবে খানিকটা হলেও ভাটা পড়ে।

এ বারও দশমীর দিন ভারত-বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে থেকেই দুই বাংলার মানুষ একে অন্যকে টফি, ফল বিলি করেছেন। টাকির দিকে কয়েকটি প্রতিমা এবং অনেক যাত্রিবাহী নৌকোর দেখা মিললেও বাংলাদেশের দিকে তেমনটা ছিল না। কয়েকটি যাত্রিনৌকো ছিল মাত্র।

টাকিতে ইছামতীর মাঝ বরাবর বিএসএফের জওয়ান এবং পাড়ে পাহারায় ছিল পুলিশ। নদীর মাঝ বরাবর সীমানা ভাগ করে ছিল নৌকো, লঞ্চ, বিএসএফের জাহাজ। দর্শনার্থীদের নৌকোয় উড়ছিল দেশের পতাকা। তা দেখতে স্বামী নিখিল জৈনকে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান। জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী, পুলিশ, প্রশাসনের কর্তা-সহ টাকি ও বাদুড়িয়ার পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায়, তুষার সিংহ। সোমনাথ বলেন, ‘‘অন্য বারের তুলনায় এ বার নদীতে বেশি নৌকো নেমেছিল। পাড়ে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার মানুষ প্রতিমা নিরঞ্জন দেখেছেন। সীমান্ত রেখা মেনে দু’দেশের মানুষ আনন্দ করেছেন।’’

তবে দর্শনার্থীরা অন্য কথা বলছেন। কলকাতা থেকে আসা ঝর্না ভৌমিক, রতন শিকদার, রামকমল চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘নদীর বুকে জোড়া নৌকোর মাঝে প্রতিমার বিসর্জন এবং প্রতিবেশী দু’দেশের মানুষের মিলন দেখতে টাকিতে ছুটে আসা। প্রশাসনের কড়াকড়িতে এ বার নিরঞ্জনের জৌলুস কম।’’

Immersion Durga Puja 2019 Ichhamati River
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy