Advertisement
E-Paper

ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি, ঝুঁকি বাড়াচ্ছে গার্ডরেল

দুর্ঘটনার শিকার প্রশাসনের কর্তারাও। দিন কয়েক আগেই নদিয়ার রেজিস্ট্রেশন নম্বরে পুলিশ লেখা একটি গাড়ি কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে গার্ডরেলে ধাক্কা মেরে রাস্তা থেকে নেমে যায়।

বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২৪
যত্রযত্র: এ ভাবেই রাস্তার পাশে পড়ে থাকে গার্ডরেল। —নিজস্ব চিত্র।

যত্রযত্র: এ ভাবেই রাস্তার পাশে পড়ে থাকে গার্ডরেল। —নিজস্ব চিত্র।

মোটরবাইকে ব্রেক কষতে কষতেই নীল রঙা গার্ডরেলটায় সজোরে ধাক্কা খেয়ে রাস্তার ধারে কুল গাছের ঝোপে উল্টে গিয়েছিলেন দমদমের তরুণ বিশ্বাস। অরুণাচলপ্রদেশ থেকে মোটরবাইক চালিয়ে ফিরছিলেন বছর পঞ্চাশের দক্ষ ‘রাইডার’। গোটা পথে কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি, নিজের এলাকায় ফিরতেই যে এমন কাণ্ড ঘটবে, তা ভাবতে পারেননি। বেশি রাত হওয়ায় রাস্তাও সুনসান। শেষ পর্যন্ত এক লরিচালক গাড়ি থামিয়ে তাঁর পায়ের উপরে পড়া ভারী মোটরবাইকটি তোলেন।

প্রবল গতিতে যাওয়া মোটরবাইক ও গাড়ির দুর্ঘটনা এড়াতে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের হাইওয়েগুলিতে গার্ডরেল বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল পুজোর আগেই। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দুই লেনের হওয়ায় দু’-একটি জায়গা ছাড়া গার্ডরেল বসানোর তেমন প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু বি টি রোড এবং কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে গার্ডরেল অনেক বেশি। বি টি রোডও দুই লেন হয়ে যাওয়ায় এবং পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকায় গার্ডরেলগুলি দেখতে পাওয়া গেলেও কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে কয়েকটি মোড় ছাড়া কোথাও ভাল ভাবে গার্ডরেল দেখা যায় না। কারণ, সর্বত্র আলোই নেই। তার উপরে রাস্তাতেও রয়েছে এলোমেলো বাঁক। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত এই বাঁকগুলিতে। দিনে সিভিক পুলিশ বিভিন্ন মোড়ে ও দুর্ঘটনাপ্রবণ অঞ্চলগুলিতে দাঁড়িয়ে থাকলেও রাতে গার্ডরেলই নিরাপত্তা দিতে পারে বলে মনে করেছিলেন পুলিশকর্তারা। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। প্রতি দিন সকালে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে দেখতে পাওয়া যায়, কিছু দূর অন্তর উল্টে রয়েছে গার্ডরেল এবং ছড়িয়ে আছে কাচের টুকরো। অন্ধকারে সামান্য দূরত্ব থেকেও বহু চালকের চোখে পড়ে না নীল সাদা গার্ডরেলগুলি। কোথাও কোথাও এই গার্ডরেলে হলুদ রিফ্লেক্টর কয়েক টুকরো এলোমেলো করে লাগানো আছে। কোথাও আবার লাল গোলাকার বা ত্রিভূজ রিফ্লেক্টরে লেখা হয়েছে ‘গো স্লো’। কিন্তু রিফ্লেক্টর গার্ডরেলের মাঝখানে থাকায় বাকি লোহার অংশটুকু দেখতে না পাওয়াতেই দুর্ঘটনা ঘটছে। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের দু’ধার থেকে গাছ কেটে নেওয়ায় দিনের বেলা চড়া রোদে বাঁক ঘোরার পরেই চোখে রোদ পড়ায় মুহূর্তের জন্য দিশাহারা অবস্থা হয় মোটরবাইক বা গাড়ির চালকদের। দুর্ঘটনা ঘটে তখনও। পুজোর পর থেকেই আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় রাতে ধোঁয়াশা হচ্ছিল রাস্তায়। এখন আবার দিনে গরম এবং রাতে ঠান্ডা পড়া শুরু করতেই কুয়াশাও হচ্ছে। এই সময়টা দুর্ঘটনা বাড়ার আশঙ্কা বেশি থাকে বলে বহু চালক ফগ ল্যাম্প ব্যবহার করেন। কিন্তু তাতেও গার্ডরেল নজরে আসছে না বলেই অভিযোগ।

দুর্ঘটনার শিকার প্রশাসনের কর্তারাও। দিন কয়েক আগেই নদিয়ার রেজিস্ট্রেশন নম্বরে পুলিশ লেখা একটি গাড়ি কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে গার্ডরেলে ধাক্কা মেরে রাস্তা থেকে নেমে যায়। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামীও বলেন, ‘‘গার্ডরেলগুলি গাড়ির আলোয় বোঝা না যাওয়ায় সময়ে অসুবিধা হয়। কমিশনারেটের কর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলব।’’ ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি ট্র্যাফিক বলেন, ‘‘অবিলম্বে জোরালো রিফ্লেক্টর লাগানোর ব্যবস্থা করছি গার্ডরেলগুলিতে।’’

Guardrails Road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy