Advertisement
E-Paper

স্মৃতিহারা অধীরের বাড়ি খুঁজে দিল হ্যাম রেডিও

ত্রিপুরা এবং কালীগঞ্জ। মাসখানেক চিকিৎসার পরে কেবলমাত্র এই দুটি জায়গার নাম বলতে পেরেছিলেন বছর পঞ্চান্নর মানুষটি। সেই সূত্র ধরেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তির বাড়ি খুঁজে দিল হ্যাম রেডিয়ো ক্লাব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৮
হাসপাতালে অধীর। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে অধীর। নিজস্ব চিত্র

ত্রিপুরা এবং কালীগঞ্জ। মাসখানেক চিকিৎসার পরে কেবলমাত্র এই দুটি জায়গার নাম বলতে পেরেছিলেন বছর পঞ্চান্নর মানুষটি। সেই সূত্র ধরেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তির বাড়ি খুঁজে দিল হ্যাম রেডিয়ো ক্লাব। দিন দুয়েকের মধ্যে তাঁকে নিতে ব্যারাকপুরে আসছেন অধীর জামাটিয়া নামের ওই ব্যক্তির বাড়ির লোকেরা। পুরোপুরি স্মৃতি ফিরে পাননি এখনও। তবে যেটুকু বলছেন, তাতে তাঁর উধাও হওয়ার কাহিনী যথেষ্ট রহস্যে ঘেরা।

কী করে হাসপাতালে পৌঁছলেন অধীর?

ব্যারাকপুরের বিএন বসু হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৯ সেপ্টেম্বর এক লরি চালক রক্তাক্ত অধীরকে অচৈতন্য অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করান। তিনি জানিয়েছিলেন, ভোরবেলা ধুলাগড়ে রাস্তার ধারে পড়েছিলেন। তিনি দেখতে পেয়ে তাঁকে তুলে আনেন তাঁকে।

চিকিৎসায় ক্রমে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। তবে স্মৃতি ফেরেনি অধীরের। আরও একটি প্রতিবন্ধকতা ছিল তাঁর ভাষা। বাংলা বোঝেন খুবই কম। হিন্দি বা ইংরাজি বোঝেনই না। কথা বলেন ত্রিপুরার আদিবাসীদের ভাষায়।

তার ফলে তাঁর সঙ্গে সেভাবে কথাই বলা যায়নি। তবে বাড়ির কথা বললে বুঝতে পারতেন। কিন্তু কিছু মনে করতে পারতেন না তিনি। মাসখানেক চিকিৎসার পরে দিন কয়েক আগে তিনি ত্রিপুরা এবং কালীগঞ্জ কলোনির নাম বলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানান হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যদের। তাঁরা বিষয়টি জানান ত্রিপুরার হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সদস্য বিশ্বজিৎ সাহাকে। তিনি সেখানকার রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যদের অধীরের ছবি-সহ বিষয়টি জানান। তাঁরাই জানতে পারেন দক্ষিণ ত্রিপুরার গোমতী জেলার কিলা থানা এলাকায় পড়ে কালীগঞ্জ কলোনি। সেই গ্রামে খোঁজ মেলে অধীরের বাড়ির।

বাড়িতে রয়েছেন অধীরের দুই দাদা ভক্তসাধন এবং চরণ। রয়েছেন তাঁর স্ত্রীও। হ্যাম রে়ডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিশ্বজিৎ আমাদের জানান, অধীরের মামা রামপদ জামাটিয়া গোমতীর বাগমা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক। তাঁর সঙ্গে আমি কথা বলি। তিনি বলেন অধীরবাবুকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা তিনি করবেন। তাঁকে বাড়ি ফেরানোর জন্য শুক্রবার তাঁর বাড়ির লোকেরা কলকাতা আসছেন।’’

অধীরের দাদা ভক্তসাধন জানান, হায়দরাবাদের একটি সংস্থায় কাজ করেন অধীর। এলাকার আরও কয়েকজন সেই সংস্থায় কাজ করেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর এলাকারই চার জনের সঙ্গে হায়দরাবাদের উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা।

তার পর থেকে আর তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি। দিন দু’য়েক পরেও তাঁর মোবাইলে যোগাযোগ করা যায়নি। তার পরেই তাঁরা হায়দরাবাদের সংস্থার অফিসে যোগাযোগ করেন। এলাকার যাঁরা সেখানে কাজ করেন যোগাযোগ করা হয় তাঁদের সঙ্গেও। কিন্তু তাঁরা জানান, পাঁচ জনের কেউই সেখানে যাননি। তার পরেই তাঁরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।

ঘটনার প্রায় ২৫ দিন পর অধীরকে ধুলাগড়ে পাওয়া যায়। তা হলে তিনি এতদিন ছিলেন কোথায়? সেখানে এলেনই বা কী করে? সে প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেননি তিনি। তিনি জানান, কেউ ভারী কিছু দিয়ে তাঁর মাথায় এবং পায়ে আঘাত করে। তার পরে তাঁর আর কিছু মনে নেই।

হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সদস্যদের মাধ্যমে ভিডিয়ো কলে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। কথা কম, দু’প্রান্তেই তখন—

শুধুই কান্না।

Ham Radio
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy