Advertisement
E-Paper

পড়তে চেয়েছিলেন, নারাজ শ্বশুরবাড়ি, মিলল তরুণীর দেহ

কলেজে প্রথম বর্ষে পড়তে পড়তে বিয়ে হয়েছিল তরুণীর। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজনের একটাই কথা, ‘বাড়ির বৌয়ের অত লেখাপড়া করে কাজ নেই।’ এই নিয়ে চলত অশান্তি। শেষমেশ হাবড়ার হায়দারবেলিয়ার তরুণী পাপিয়া অধিকারীর (২৬) ঝুলন্ত দেহ মিলল শ্বশুরবাড়ি থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০২:২১
পাপিয়া অধিকারী

পাপিয়া অধিকারী

কলেজে প্রথম বর্ষে পড়তে পড়তে বিয়ে হয়েছিল তরুণীর। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজনের একটাই কথা, ‘বাড়ির বৌয়ের অত লেখাপড়া করে কাজ নেই।’

এই নিয়ে চলত অশান্তি। তরুণীর মেয়ে যে স্কুলে পড়ত, সেখানকার কর্তৃপক্ষ তাঁকে বাচ্চাদের পড়ানোর দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও আপত্তি শ্বশুরবাড়ির। বাড়ির বৌ চাকরি করবে! শুনে যেন মাথায় বাজ পড়েছিল স্বামী-শ্বশুরের।

শেষমেশ হাবড়ার হায়দারবেলিয়ার তরুণী পাপিয়া অধিকারীর (২৬) ঝুলন্ত দেহ মিলল শ্বশুরবাড়ি থেকে। পুলিশ জানতে পেরেছে, মঙ্গলবার বেলা ১২টা নাগাদ পাপিয়ার স্বামী বিশ্বজিৎ শ্বশুরকে ফোনে জানান, তাঁদের মেয়ে গলায় দড়ি দিয়েছে। খবর পেয়ে পড়িমড়ি মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে ছোটেন তাঁর বাবা গোপাল সমাদ্দার ও অন্যান্য আত্মীয়েরা। গোপালের দাবি, তাঁদের বলা হয়, মেয়েকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, মারা গিয়েছে মেয়ে। সদ্য সন্তানহারা বাবার দাবি, পাপিয়ার পিঠে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। হাবড়া থানায় মেয়ের স্বামী, শাশুড়ি-সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছেন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।

পুলিশ জানায়, ২০১০ সালে ঘোলা থানার মহেন্দ্রনগরের বাসিন্দা পাপিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় হায়দারবেলিয়ার বিশ্বজিতের। সে পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। মৃতের বাপের বাড়ির দাবি, বিয়েতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের দাবি মতো নগদ টাকা, সোনার গয়না, আসবাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একটা আলনা পরে দেওয়া হবে বলায় বিয়ের দিন তাঁদের বাড়িতে খেতে চায়নি বিশ্বজিৎ, জানালেন পাপিয়ার দাদা প্রীতম। তাঁর আক্ষেপ, আমাদের তখনই বোঝা উচিত ছিল, কোন বাড়িতে যাচ্ছে বোন।’’ সেই রাতেই অবশ্য আলনা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে জানান তিনি। অভিযোগ, বিয়ের কয়েক দিন পর থেকে আরও পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পাপিয়ার উপরে নির্যাতন শুরু করেন। প্রীতম বলেন, ‘‘বোন কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পরে বিয়ে হয়। ও চেয়েছিল, পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজনের তাতে আপত্তি ছিল। যা নিয়ে বোনের উপরে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন বেড়ে গিয়েছিল।’’

গোপাল বলেন, ‘‘মেয়েকে মোবাইল ব্যবহার করতে দেওয়া হত না। আমাদের সঙ্গে কথা বলতে বাধা দেওয়া হত। শেষে ওরা মেয়েকে মেরেই ফেলল।’’

Suicide Education Habra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy