Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বিচারকের অপেক্ষায় কাকদ্বীপ আদালত

নিজের জায়গা-জমির ভাগ বুঝে নিতে শরিকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন কাকদ্বীপের বাসিন্দা শ্রীপতি সামন্ত। মামলা চালাতে মাঝে মধ্যেই তাঁকে কাকদ্বীপ থেকে ডায়মন্ড হারবারে আসতে হচ্ছে। কারণ কাকদ্বীপ দেওয়ানি আদালতে বেশি মূল্যের সম্পত্তির মামলার শুনানি হচ্ছে না।

শান্তশ্রী মজুমদার
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৯
Share: Save:

নিজের জায়গা-জমির ভাগ বুঝে নিতে শরিকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন কাকদ্বীপের বাসিন্দা শ্রীপতি সামন্ত। মামলা চালাতে মাঝে মধ্যেই তাঁকে কাকদ্বীপ থেকে ডায়মন্ড হারবারে আসতে হচ্ছে। কারণ কাকদ্বীপ দেওয়ানি আদালতে বেশি মূল্যের সম্পত্তির মামলার শুনানি হচ্ছে না। এই সমস্যায় জেরবার কাকদ্বীপের আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা।

৬০ হাজার টাকার উপরে জমিজমা, বসতবাড়ি, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র বা আর্থিক ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত কোনও মামলা হলেই তার বিচার আর কাকদ্বীপে হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবস্থায় ক্ষুব্ধ বিচারপ্রার্থীরা। শ্রীপতিবাবুর কথায়, ‘‘আমাদের এখানে এত বড় আদালত রয়েছে। সেখানে নানা রকমের বিচার হচ্ছে। কিন্তু সেখানে বেশি মূল্যের সম্পত্তির মামলার শুনানি হয় না। এই অদ্ভূত ব্যবস্থার জন্য সাধারণ মানুষকে হেনস্থা হতে হচ্ছে।’’ ডায়মন্ড হারবারে এই মামলার জন্য সঠিক আইনজীবী না পাওয়া গেলে আবার আলিপুরে ছুটতে হচ্ছে অনেক বিচার প্রার্থীকেই।

মহকুমা শহর কাকদ্বীপে এখন জমির মূল্য, বসতবাড়ির মূল্য অনেক। কোথাও কোথাও জমির দাম ৫০ লক্ষ টাকা শতক ছাড়িয়েছে। পুলিশ জেলার ৯টি থানা এলাকাতেই মাত্র ৬০ হাজার টাকার মামলা আর পাওয়াই যায় না বললেই চলে। ওই অঙ্কের বেশি মূল্যের মামলার শুনানির ভার রয়েছে দেওয়ানি বিচারক সিনিয়ার ডিভিশনের উপরে। সেই পদটি ডায়মন্ড হারবারে আছে। কিন্তু কাকদ্বীপে নেই। তাই নিত্য এই ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে সকলকে। কাকদ্বীপের আইনজীবী মনোজ পান্ডা বলেন, ‘‘এর আগে যখন প্রধান বিচারপতি এসেছিলেন তাঁর কাছেও আইনজীবীরা বিষয়টি তুলেছিলেন। শুধু পরিকাঠামোর অভাবে আমাদের মক্কেল হারাতে হচ্ছে।’’

কাকদ্বীপ বার অ্যাসোশিয়েশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়েও বার বার দরবার করা হয়েছে জেলা বিচারকের কাছে। বারের সম্পাদক দেবপ্রকাশ জানা বলেন, ‘‘অনেক বার আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সিনিয়ার সিভিল বিচারক নিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের ‘আদালত তৈরি’ কমিটি এই সিদ্ধান্ত নেয়। সেখানেও দীর্ঘ দিন বিষয়টি ঝুলে রয়েছে।’’ জানা গিয়েছে, হাইকোর্টের ওই কমিটিতে বিষয়টি পৌঁছলেও মিটিং না হওয়ার জন্য অনিশ্চিত হয়ে রয়েছে কাকদ্বীপ আদালতে সিনিয়র সিভিল বিচারক নিয়োগের বিষয়টি।

ল’ক্লার্কদের একটি অংশ জানাচ্ছে, কাকদ্বীপের চারটি ব্লক থেকেই পার্টিশন মামলা, টাকা ধার নিয়ে শোধ না দেওয়া সংক্রান্ত মামলা এবং নন জুডিশিয়াল বায়নানামা, রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত বহু মামলা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Court Judge Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE