Advertisement
E-Paper

এইচআইভি আক্রান্তকে রান্নায় বাধা

বছর তিনেক আগে এইচআইভি সংক্রমণের কথা জানাজানি হওয়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে কার্যত বের করে দেওয়া হচ্ছিল এক তরুণীকে।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:০৬
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বছর তিনেক আগে এইচআইভি সংক্রমণের কথা জানাজানি হওয়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে কার্যত বের করে দেওয়া হচ্ছিল এক তরুণীকে। তাঁর শাশুড়িকে আবার গ্রামের মন্দিরে পুজো দিতে নিষেধ করে দেন পাড়া-পড়শিরা। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কোনও মতে সমস্যা সামাল দেওয়া গিয়েছিল সে সময়ে। এ বার স্কুলের মিড ডে মিলে রান্নার দায়িত্ব পেয়েও হাতছাড়া হতে বসেছে মহিলার। তিনি যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত, সেখানকারই অনেকের বক্তব্য, মহিলার হাতের রান্না খেলে ছেলেমেয়েদের সংক্রমণ ছড়াতে পারে! এই যুক্তি মেনে নিচ্ছেন অভিভাবকদের বড় অংশ। এই পরিস্থিতিতে ফের গ্রামে গিয়ে মানুষকে এইচআইভি নিয়ে সচেতন করার কর্মসূচি নিল প্রশাসন ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি কতটা শুধরাবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

ঘটনাটি গাইঘাটার গ্রামের। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘অভিভাবকেরা ওই মহিলার রান্না করা খাবার বাচ্চাদের খাওয়াবেন না জানিয়েছেন। অভিভাবকদের কথা আমাকে শুনতে হচ্ছে।’’

গাইঘাটার বিডিও বিব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। মহিলাকে রান্না করতে বাধা দেওয়া ঠিক নয়।’’ গাইঘাটার বিএমওএইচ সুজন গায়েন বলেন, ‘‘এডস ছোঁয়াচে রোগ নয়। এইচআইভি আক্রান্তের সঙ্গে থাকা-খাওয়া স্বাভাবিক ভাবেই করা যায়। ওই এলাকায় সচেতনতা শিবির করা হবে।’’

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তরুণীর এইআইভি ধরা পড়ে। সে কথা গ্রামে জানাজানি হয়ে যায়। বছর দু’য়েক আগের ওই ঘটনার পর থেকে স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগই নেই তরুণীর। ওই যুবক বাড়িতেও ফেরে না। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাড়িতে শ্বশুরবাড়িতে ঠাঁই মিললেও কার্যত সেখানেও খুব স্বস্তিতে নেই তরুণী। এ বার মিড ডে মিলে তাঁর হাত থেকে রান্নার দায়িত্ব সরিয়ে নেওয়ায় আরও ভেঙে পড়েছেন।

এইচআইভি নিয়ে কাজ করা সংগঠনের সভাপতি সমীর বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা গ্রামে গিয়ে সাধ্য মতো বুঝিয়েছি যে এই রোগ ছোঁয়াচে নয়। কোনও আক্রান্তের হাতের রান্না খেলে অন্য কারও তা থেকে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা নেই। আমাদের মনে হয়েছে বিষয়টি অনেকে বুঝেছেন। কিন্তু তবু অনেকে আবার ওই মহিলাকে রান্না করতে দিতে চাইছেন না। গোটা বিষয়টি প্রশাসনের কর্তাদের জানানো হচ্ছে। তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’

আক্রান্ত মহিলার কথায়, ‘‘আমি চাই, মাথা উঁচু করে সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে।’’

Gaighata HIV Patient Mid Day Meal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy