Advertisement
E-Paper

একুশের মঞ্চে মিলনের সুর দুই বাংলার মানুষের

শেষ হলেও যেন ঠিক মতো শেষ হতো না এত বছর। প্রতি বছর ভাষা দিবসে পেট্রাপোল এবং বেনাপোলে সীমান্তে আলাদা করে অনুষ্ঠান করত ভারত ও বাংলাদেশ। সেখানে মিছিল, গান হতো। ভিড়ও উপচে পড়ত। কিন্তু দিনের শেষে কোথাও যেন ফাঁক থেকে যেত।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য ও সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:০৩
আবেগ। বাংলাদেশ থেকে আসা তরুণীরা সাজিয়ে নিচ্ছেন নিজেদের। নো ম্যানস ল্যান্ডে দুই বাংলার মানুষের ভিড়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

আবেগ। বাংলাদেশ থেকে আসা তরুণীরা সাজিয়ে নিচ্ছেন নিজেদের। নো ম্যানস ল্যান্ডে দুই বাংলার মানুষের ভিড়। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

শেষ হলেও যেন ঠিক মতো শেষ হতো না এত বছর।

প্রতি বছর ভাষা দিবসে পেট্রাপোল এবং বেনাপোলে সীমান্তে আলাদা করে অনুষ্ঠান করত ভারত ও বাংলাদেশ। সেখানে মিছিল, গান হতো। ভিড়ও উপচে পড়ত। কিন্তু দিনের শেষে কোথাও যেন ফাঁক থেকে যেত।

এ বার বদলে গেল সেই ছবি।

কাঁটাতারের বাধা সরিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ এ বার যৌথ অনুষ্ঠান করলেন দুই বাংলার শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরা। আয়োজক ছিল দুই বাংলার যৌথ মঞ্চ ‘অমর একুশে দুই বাংলা’।

সুরটা অবশ্য বাঁধা হয়েছিল একুশের আগের রাতেই। সোমবার বনগাঁয় মোমবাতি মিছিল শেষে ভাষা শহিদদের স্মারক বেদিকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন অনেকে। মঞ্চ বেঁধে অনুষ্ঠান হয়। এত দিন শুধু একুশে ফেব্রুয়ারি, ভাষা দিবসের দিনেই অনুষ্ঠান হতো। এ বার বদলে গেল সব কিছু। সোমবার রাতেই এ দেশে চলে আসেন বাংলাদেশের অনেক শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক। মঙ্গলবার শুরু থেকেই তাঁরা ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন। এ দিন বেনাপোল ও পেট্রাপোল সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে যৌথ মঞ্চ বানানো হয়। সেই মঞ্চের নাম দেওয়া হয়েছিল, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একুশে মঞ্চ’। বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন অনেক পড়ুয়া। তাঁদের কারও হাতে ছিল বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, কারও গাল রাঙানো ছিল সেই পতাকার রঙে। মাথায় ছিল ‘অমর একুশে’ লেখা ফেট্টি।

এ দিন বাংলাদেশ থেকে রং-তুলি নিয়ে আসা সরিফুল নামে এক বছর পঁচিশের যুবক অনেকের গাল রাঙিয়ে দিচ্ছিলেন লাল-সবুজ রঙে। ছিলেন বৃদ্ধা তারাদেবী। তাঁর বাড়িও বাংলাদেশে। তিনি জানালেন, ভিক্ষা করে দিন চলে। কিন্তু একুশের দিনে দুই বাংলা এক সঙ্গে অনুষ্ঠান করছে শুনে তিনি ভিক্ষা ছেড়ে চলে এসেছিলেন। এ দিন গান করেন বাংলাদেশের ফুরশিদ আলম, রথীন্দ্রনাথ রায়, এই বাংলার গানের দল মাদল, বাউল শিল্পী কার্তিক দাস বাউল প্রমুখ। চিত্রশিল্পী সুশান্ত সরকার ছবি আঁকলেন মঞ্চের নীচে। পরে তিনি সেই ছবি তুলে দেন অনুষ্ঠানের অন্যতম অতিথি বাংলাদেশের বেনাপোলের মেয়র আশরাফুল আলম লিটনের হাতে।

এ দিন বাংলাদেশের বেনাপোল এবং ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে রক্তদান শিবির হয়। অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য-সহ অনেকে। ভাস্করবাবু বলেন, ‘‘অন্য বছরও ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে আসি। এ বারও এলাম। তবে দুই বাংলা এক সঙ্গে অনুষ্ঠান করায় এ বার আবেগ অনেক বেশি।’’ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কথায়, ‘‘এই উদ্যোগের ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।’’

Petrapole India-Bangladesh International mother language day
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy