E-Paper

পর্যটকদের জন্য তৈরি হওয়া পথের সাথী এখন ধানের গুদাম

সুন্দরবনের পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে ২০১৮ সালে বাসন্তী ব্লকেও তৈরি হয়েছিল একটি পথের সাথী।

প্রসেনজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৫ ০৭:৫৫
আমঝাড়া মোড়ে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা পথের সাথী।

আমঝাড়া মোড়ে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা পথের সাথী। নিজস্ব চিত্র।

২০১৮ সালে রাজ্য সরকারের আবাসন দফতরের তত্ত্বাবধানে পথের সাথী প্রকল্পের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যস্ত রাজ্য সড়ক এবং জাতীয় সড়কের ধারে একগুচ্ছ মোটেল বা পান্থশালা তৈরির উদ্যোগ করা হয়। বর্তমানে ২৩টি জেলার সব ক’টিতেই গড়ে উঠেছে এই প্রকল্প।

কিন্তু এর মধ্যে বাসন্তী ব্লকের আমঝাড়া মোড়ে অবস্থিত পথের সাথীটি বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। সংস্কারের অভাবে দিনের পর দিন নষ্ট হয়ে পড়া এই পথের সাথীটি বর্তমানে রাজ্য কৃষি ও বিপণন দফতরের ধান রাখার গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

বিদেশের নানা জায়গায় পান্থশালা এবং মোটেলের দেখা মেলে। যাঁরা গাড়ি চালিয়ে অনেক দূর যান, তাঁদের জন্যই এমন ব্যবস্থা। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পথচলতি মানুষের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন। বর্তমানে রাজ্যের ২৩টি জেলায় ৬৫টি পথের সাথী রয়েছে। মূলত, পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার পথে পথের সাথীগুলিকে গড়ে তোলা হয়েছিল। এখানে এক দিকে যেমন বিশ্রামের ঘর রয়েছে, তেমনই শৌচাগার ও খাবারের ব্যবস্থাও রয়েছে। এগুলিকে সঠিক ভাবে পরিচালনার জন্য কোথাও কোথাও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোথাও বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে পরিচালনার দায়িত্ব।

সুন্দরবনের পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে ২০১৮ সালে বাসন্তী ব্লকেও তৈরি হয়েছিল একটি পথের সাথী। কিন্তু তৈরির পর থেকে সে ভাবে এটি পরিচালনা করা হয়নি বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে পর্যটকদের। ২০২০ সালে আমপান সুন্দরবনের উপরে আছড়ে পড়লে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পান্থশালাটি। পথের সাথীর ছাউনি উড়িয়ে নিয়ে যায় ঝড়। কার্যত তারপর থেকেই অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে এটি। বছরের পর বছর কেটে গেলেও মেরামত করার কোনও উদ্যোগ সরকারি ভাবে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

এলাকার বাসিন্দা নবিরআলি সর্দার, মানিক মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘এটি কোনও দিনই ঠিক মতো চলল না। এখানে পর্যটকেরা আসবেন, থাকবেন, এলাকার অর্থনীতির উন্নতি হবে বলে অনেকেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু কিছুই হল না। গত ছ’সাত বছর ধরে বন্ধ। এটিকে সারানোর কোনও উদ্যোগ দেখি না। এখন চাষিদের ধান রাখা হয় এখানে। এখান থেকেই ব্লকের চাষিদের ধান কেনাবেচা হয়।’’

বাসন্তীর বিডিও সঞ্জীব সরকার বলেন, ‘‘আমপানের সময়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল পথের সাথীর। এটিকে সংস্কারের দাবি জানিয়ে একাধিক বার জেলাকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু এখনও সংস্কারের কাজের নির্দেশ আসেনি।’’

পথের সাথী বন্ধ হয়ে থাকায় ক্ষুব্ধ পর্যটক ও পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মানুষজনও। পর্যটন ব্যবসায়ী সুনির্মল রায়, শচীন দাসেরা বলেন, ‘‘দূরদূরান্ত থেকে অনেক পর্যটক আসেন, যাঁদের ক্যানিং, বাসন্তীতে রাত্রিযাপন করতে হয় সুন্দরবন ভ্রমণে যাওয়া বা আসার পথে। ক্যানিংয়ে পথের সাথীটি চললেও বাসন্তীর পথের সাথী অচল। ফলে সমস্যায় পড়তে হয় পর্যটকদের। এটিকে দ্রুত মেরামতি করা হলে পর্যটকদের সুবিধা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

basanti

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy