Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
ISF Leader Arrested

পুলিশকে মারধরের হুমকি, গ্রেফতার আইএসএফ নেতা

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার বিকেলে ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে সভা করে আইএসএফ। সেখানে মঞ্চ থেকে পুলিশকে মারধরের হুমকি দেন প্রাণগঞ্জ অঞ্চলের আইএসএফের অঞ্চল সভাপতি আসাদুল।

কোমরে দড়ি বেঁধে নিয়েa যাওয়া হচ্ছে আইএসএফ নেতা আসাদুলকে। ছবি: সামসুল হুদা

কোমরে দড়ি বেঁধে নিয়েa যাওয়া হচ্ছে আইএসএফ নেতা আসাদুলকে। ছবি: সামসুল হুদা

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাঙড়  শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২ ০৮:০৯
Share: Save:

পুলিশকে মারধরের হুমকি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আইএসএফ নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙড়ের পদ্মপুকুর গ্রাম থেকে ধরা পড়েন আসাদুল মোল্লা ওরফে যদু। তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, সরকারি অফিসারকে মারধর, হুমকি, এলাকায় গন্ডগোলের নেতৃত্ব দেওয়া সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার বিকেলে ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে সভা করে আইএসএফ। সেখানে মঞ্চ থেকে পুলিশকে মারধরের হুমকি দেন প্রাণগঞ্জ অঞ্চলের আইএসএফের অঞ্চল সভাপতি আসাদুল। পরে বক্তৃতা দিতে উঠে ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ চেয়ারম্যান নওশাদ সিদ্দিকী অবশ্য জানান, এ ধরনের বক্তব্য তাঁদের দল সমর্থন করে না।

সন্ধের দিকে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আসাদুলের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। রাতে বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। দিন পনেরো আগে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

আসাদুলের দাবি, পুলিশকে মারধরের হুমকি দেওয়া ভুল হয়েছিল। নওশাদ বলেন, ‘‘আমি ইতিমধ্যে ওই নেতার বিরুদ্ধে রাজ্য কমিটিকে জানিয়েছি। রাজ্য কমিটি খুব শীঘ্রই সংবিধান বহির্ভূত এবং দলের নিয়ম বহির্ভূত বক্তব্য রাখায় আসাদুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’ পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘‘এই গ্রেফতারির বিরোধিতা করব না। তবে শাসকদলের অনেক দাপুটে নেতাও বিভিন্ন সময়ে পুলিশকে বোমা মারার নিদান দিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধেও একই ধারায় মামলা রুজু করে গ্রেফতার করা হবে তো?’’

এ বিষয়ে রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম বলেন, ‘‘ভাঙড়ের মানুষ বুঝতে পারছেন, তাঁরা এমন অশিক্ষিতদের ভোট দিয়েছিলেন, যাঁরা আইনরক্ষককে মারধরের কথা বলেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে আইএসএফ এলাকায় গন্ডগোল পাকাতে মানুষকে খেপিয়ে তুলতে চাইছে। পুলিশ সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’’

এ দিকে, আইএসএফ নেতাকে গ্রেফতারের পরে কোমরে দড়ি পরিয়ে সবার সামনে দিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। নওশাদ বলেন, ‘‘আসাদুলের বিরুদ্ধে কোনও জঙ্গি কার্যকলাপ বা দেশবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ নেই। উনি এমন কোনও মারাত্মক অপরাধ করেননি যে কারণে প্রকাশ্য দিবালোকে সকলের সামনে দিয়ে কোমরে দড়ি পরিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হবে। আসাদুল বিরোধী রাজনীতি করেন বলে কি তাঁর সামাজিক সম্মান এ ভাবে ক্ষুণ্ণ করা যায়?’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যত দূর জানি, রাজনৈতিক কোনও নেতাকে যদি গ্রেফতার করা হয়, তা হলে তাঁর সামাজিক সম্মানের কথা ভেবে মুখে কাপড় পরিয়ে, হাত ধরে পুলিশ গাড়িতে তুলতে পারে। পুলিশ কোনও ভাবেই এ ভাবে তাঁর সামাজিক সম্মান নষ্ট করতে পারে না। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলব।’’

পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কী ধরনের অপরাধ, তার উপরে অনেকটাই নির্ভর করছে কোমরে, পায়ে দড়ি পরানো বা হাতকড়া ব্যবহার করা হবে কি না। যদি দেখা যায় অপরাধী খুবই ভয়ঙ্কর, পুলিশকে মেরে পালিয়ে যেতে পারে— তা হলে হাতকড়া পরানো যেতে পারে। যদি পুলিশ মনে করে, অভিযুক্ত পালিয়ে যেতে পারে, তা হলেও কোমরে বা পায়ে দড়ি পরানো যায়। তবে সে ক্ষেত্রে অ্যারেস্ট মেমোতে উল্লেখ করতে হবে, কী কারণে পায়ে বা কোমরে দড়ি পরানো হল।

আসাদুলের কোমরে দড়ি পরানো নিয়ে ভাঙড় থানার এক অফিসার বলেন, ‘‘এর আগেও দলবল নিয়ে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, ধাক্কাধাক্কি, মারধর করার অভিযোগ আছে ওঁর বিরুদ্ধে। এদিনও পুলিশকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যেতে পারেন ভেবে কোমরে দড়ি পরানো হয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ISF Bhangar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE