Advertisement
১১ মে ২০২৪
অবশেষে অফলাইনে
Schools

School reopening: সকলকে ক্লাসে আনাই এখন চ্যালেঞ্জ

আর পাঁচটা দিনটা মতো সত্যিই ছিল না মঙ্গলবার দিনটা। স্কুল চত্বর ফের ভরে গেল ছেলেমেয়েদের কোলাহলে।

বিদ্যাং-দেহি: ক্লাসে ঢোকার আগে প্রণাম। মঙ্গলবার দত্তপুকুর মহেশ বিদ্যাপীঠে ছবিটি তুলেছেন সুদীপ ঘোষ।

বিদ্যাং-দেহি: ক্লাসে ঢোকার আগে প্রণাম। মঙ্গলবার দত্তপুকুর মহেশ বিদ্যাপীঠে ছবিটি তুলেছেন সুদীপ ঘোষ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৪৬
Share: Save:

ঠেলে-গুঁতিয়ে স্নান-খাওয়ায় পাঠাতে হয়নি আজ মেয়েকে। একগাল হেসে স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে সেই গল্পই করছিলেন বনগাঁর বাসিন্দা অনিমা পাত্র। বললেন, ‘‘কাল রাতে মেয়ে ভাল করে ঘুমোতেই পারেনি। কখন স্কুলে যাবে, সেই উত্তেজনায়। আগে হলে স্কুলে পাঠাতে কী ঠ্যালাঠেলেই না করতে হত!’’

আর পাঁচটা দিনটা মতো সত্যিই ছিল না মঙ্গলবার দিনটা। স্কুল চত্বর ফের ভরে গেল ছেলেমেয়েদের কোলাহলে। তার আগের কয়েকটা দিন ছিল সাজ সাজ রব। চেয়ার-বেঞ্চ সারাই থেকে শুরু করে মাস্ক-স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা করা, কোথায় কে কী ভাবে বসবে তার বন্দোবস্ত— সে সব নিয়ে মাথার ঘাম পায়ে পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের। তবে শুরুর দিনটিতে সব ভালয় ভালয় উতরে গিয়েছে দুই জেলার স্কুলগুলিতে। কোথাও কোথাও অবশ্য প্রথম দিন একশো শতাংশ হাজিরা ছিল না। যারা এল না, সেই সব ছেলেমেয়েদের কী হল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে খোঁজখবর। জানা যাচ্ছে, কিছু স্কুলছুট আছে তাদের মধ্যে। কেউ ভিন্‌ রাজ্যে চলে গিয়েছে কাজ নিয়ে। পড়া ছেড়েছে কেউ পারিবারিক কারণেও।

তবে যারা এসেছে এ দিন, ক্লাস খোলার আনন্দ তাদের চোখেমুখে ফুটে ওঠে। খুশি শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। তবে বার বার দূরত্ববিধি, স্বাস্থ্যবিধি মানতে ছেলেমেয়েদের শাসন করতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। কোথাও কোথাও ছাত্রছাত্রীদের হাতে উপহার তুলে দেন শিক্ষকেরা। ক্যানিংয়ের ডেভিড সেশুন হাইস্কুলে পড়ুয়াদের ফুল ও পেন দেওয়া হয়েছে। ক্যানিং দ্বারিকানাথ বালিকা বিদ্যালয়েও পড়ুয়াদের হাতে পেন তুলে দেন শিক্ষিকারা। ভাঙড় হাইস্কুলে দীর্ঘদিন পরে দেখা হওয়ায় পড়ুয়ারা একে-অন্যকে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। সেলফি তোলার ধুম পড়ে যায় নানা জায়গায়। ছবি তোলার সময়ে মাস্ক নামাতেই অবশ্য রে রে করে ছুটে এসেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ‘‘স্যার ছবিটা তুলে নিয়েই মাস্ক পরে ফেলছি’’— একগাল হেসে এমন সরল উত্তরের সামনে কড়া হতে পারেননি বড়রা।

দূরত্ববিধি মানতে এক বেঞ্চে দু’জন, তারপরের বেঞ্চে একজন, এ ভাবে বসানোর কথা বলা হয়েছে। তবে বেঞ্চ কম থাকায় অনেক স্কুলে তা সম্ভব হয়নি। দুই জেলার গ্রামীণ এলাকার বেশ কিছু স্কুলে এ দিন উপস্থিতির হার কম ছিল। যোগেশগঞ্জ উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে যেমন নবম থেকে দ্বাদশ মিলিয়ে ৮০০ পড়ুয়ার মধ্যে মাত্র ২৩০ জন উপস্থিত ছিল এ দিন। বনগাঁ মহকুমার কয়েকটি স্কুলে উপস্থিতির হার ছিল মাত্র ২০ শতাংশ। স্কুল চালু হওয়ায় মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের আশঙ্কা কিছুটা কমল। ভাঙড় হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী শাহনাজ পরভীন, তিতলি মণ্ডলরা জানায়, অনলাইন ক্লাস চললেও প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের সুযোগ ছিল না। সংক্রমণ না বাড়ে— স্বাস্থ্য দফতর, প্রশাসনের কপালে আপাতত ভাঁজ না মিলালেও ছেলেমেয়েদের মধ্যে ক্লাসে ফেরার আনন্দ এদিন সর্বত্রই চোখে পড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Schools Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE