Advertisement
E-Paper

পালিয়ে জঙ্গলে রাত কাটান ‘দামাল’ জামাল, শাশুড়িকে ফোন আর মুখোশই ‘কাল’ হল সোনারপুরের সর্দারের

গ্রেফতারির আশঙ্কায় ভুগছিলেন সোনারপুরের জামালউদ্দিন সর্দার। তাই মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ি ছেড়েছিলেন। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে পাঁচিল টপকে নিজেদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান জামালের স্ত্রী এবং ছেলে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৪ ১১:০৮
জামালউদ্দিন সর্দার।

জামালউদ্দিন সর্দার। —ফাইল চিত্র।

করোনা পর্ব মিটে যাওয়ার পর গ্রামাঞ্চলে আর মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায় না কাউকে। কিন্তু বাসন্তী হাইওয়ের উপর মাস্ক পরে দাঁড়ানোই ‘কাল’ হল সোনারপুরকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত জামালউদ্দিন সর্দারের। মুখোশের জন্য ধরা পড়লেন পুলিশের জালে। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, মাস ছয়েক অন্যত্র গা-ঢাকা দেওয়ার ছক ছিল জামালের। কিন্তু স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে চিন্তা হচ্ছিল। তাঁদের ‘নিরাপদে’ কোথাও রাখতে চেয়েছিলেন। সেই ছক কষতে গিয়েই পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন শিকলে বেঁধে মহিলাকে পেটানোয় অভিযুক্ত জামাল।

তিন দিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পর শুক্রবার বাসন্তী হাইওয়ে থেকে সোনারপুরের দিকে যাওয়ার রাস্তা থেকে গ্রেফতার হন জামাল। পুলিশ সূত্রে খবর, একের পর এক গ্রামবাসী তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলা শুরু করতেই গ্রেফতারির আশঙ্কায় ভুগছিলেন তিনি। তাই মঙ্গলবার দুপুরেই বাড়ি ছেড়েছিলেন। সন্ধ্যার দিকে পাঁচিল টপকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান জামালের স্ত্রী এবং ছেলেও। ওই দিনটিতে ঘুটিয়ারি শরিফ এলাকায় শ্বশুরবাড়ির কাছে কোথাও থাকার পরিকল্পনা ছিল জামালের। কিন্তু পুলিশের ভয়ে সেই সাহস করতে পারেননি। এ দিক-ও দিক ঘুরে জঙ্গলের মধ্যে রাতটা কাটান জামাল। দিনের আলো ফুটতেই মাস্ক মুখে দিয়ে ঘুটিয়ারি স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে সোনারপুরের উপর দিয়েই বিধাননগর স্টেশনে নামেন। এক পরিচিতের কাছে যান তিনি। বুধবার সেখানেই কাটান। এর মধ্যে সংবাদমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে একের পর এক খবর সম্প্রচার হতে দেখে এক বার আত্মসমর্পণের কথাও ভেবেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সোনারপুর থানার কাছে মিলনপল্লি এলাকাতেও চলে এসেছিলেন। কিন্তু, জামালের আইনজীবী তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে বারণ করেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, আইনজীবীর বারণ শুনে আবার এলাকা ছাড়েন জামাল। তার মধ্যে নিজের ফোন পরিবর্তন করে নিয়েছেন। কিনেছিলেন নতুন সিম। মাস ছয়েক অন্যত্র চলে যাওয়ার ছক কষে ফেলেন। চিন্তা হচ্ছিল স্ত্রী-সন্তানের জন্য। তাঁদের ‘নিরাপদ আশ্রয়ে’ রাখার কথা ভেবে শাশুড়িকে ফোন করে ফেলেন জামাল। তাতেই নিজের বিপদ বাড়ান। তক্কে তক্কে ছিল পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামালের এক শ্যালককে সোনারপুর থানায় তুলে আনে তারা। এর পর আর কাউকেই সাহস করে ফোন করতে পারছিলেন না সোনারপুরের ‘দামাল’ জামাল। বৃহস্পতিবার তিনি রাত কাটান ডানকুনি এলাকায় এক পরিচিতের বাড়িতে। শুক্রবার স্ত্রী-সন্তানকে একটি জায়গায় রেখে নিজেও আত্মগোপনের চেষ্টায় ছিলেন। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান জামাল।

জামালকে ধরতে একটি দল তৈরি করেছিল সোনারপুর থানার পুলিশ। তার নেতৃত্বে ছিলেন আইসি আশিস দাস। তাঁরাই শেষ পর্যন্ত জামালকে ধরেন। বারুইপুর পুলিশ জেলার স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের সঙ্গে আরও একটি দল দিনভর তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল। জামালের গ্রেফতারির নিয়ে বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি বলেন, ‘‘আমরা জামালকে নিজেদের হেফাজতে নেব। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে। শনিবারই অফিযুক্তকে আদালতে তোলা হচ্ছে।’’

Jamal Uddin Sardar Sonarpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy