Advertisement
২১ মার্চ ২০২৩
Jetty

বাঁশের জেটিঘাট, সমস্যায় বাসিন্দারা

পাথরপ্রতিমা ব্লকের দিগম্বরপুর পঞ্চায়েতের রামনগর আবাদ গ্রামের কাছে গদামথুরা পঞ্চমের জেটি ঘাটটি বহু বছর আগে তৈরি।

এখান দিয়েই যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র

এখান দিয়েই যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র

দিলীপ নস্কর
পাথরপ্রতিমা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:২৪
Share: Save:

বাঁশের মাচার নড়বড়ে জেটি ঘাটে নামা-ওঠার সময় একটু এদিক ওদিক হলেই নদীতে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে। আবার ভাটার সময় নদীর জল কমে গেলে যাত্রিবাহী নৌকা ঘাটে ঢুকতে পারে না। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ রাখতে হয় পারাপার। পাথরপ্রতিমার মৃদাঙ্গভাঙা নদীর গদামথুরা পঞ্চমের এই জেটি ঘাটটির বেহাল পরিকাঠামোর জন্য দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা।

Advertisement

পাথরপ্রতিমা ব্লকের দিগম্বরপুর পঞ্চায়েতের রামনগর আবাদ গ্রামের কাছে গদামথুরা পঞ্চমের জেটি ঘাটটি বহু বছর আগে তৈরি। শুরুতে বাঁধ থেকে প্রায় ৫০ মিটার লম্বা পাকা কংক্রিটের ঘাট নির্মাণ করা হয়েছিল। তারপর থেকে ওই ঘাটটি আর কোনও সংস্কার করা হয়নি। এখন ঘাটটি ভেঙেচুরে গিয়েছে। আবার ঘাটের সামনে বছরের পর বছর ধরে চর জমতে থাকায় যাত্রিবাহী নৌকা ঘাটে ঢুকতে পারে না। ফলে কংক্রিটের ঘাট থেকে সামনের দিকে প্রায় ২০০ মিটার বাঁশের মাচা বেঁধে নৌকার যাত্রীদের নামা-ওঠা করতে হচ্ছে। লম্বা বাঁশের মাচা হেঁটে যাওয়ার সময় টলমল করে। এক সঙ্গে দু’জন পাশাপাশি যেতে পারেন না। একটু এদিক-ওদিক হলেই নদীতে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

ভোর ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত নদী পারাপার হয়। কিন্ত ওই ঘাটে কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। সন্ধ্যা নামলেই যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। ঘাটের আশে পাশে নেই কোনও পানীয় জল বা শৌচালয়ের ব্যবস্থাও। ওই ঘাটের উল্টো দিকে মৃদঙ্গভাঙা নদীর ওপারে রয়েছে কেদারপুর ঘাট। ওই ঘাটটিরও উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা।

মৃদঙ্গভাঙায় কয়েক বছর ধরে চর জমতে শুরু করেছে। ফলে অমাবস্যা বা পূর্ণিমার কটালে ভাটার সময় জল কমে গেলেই নৌকা চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়। মাঝে মধ্যে ভাটা পড়ার আগে যাত্রী বোঝাই নৌকা ঘাটের কাছে এসে চরে আটকে যায়। ফলে ঘাটের অদূরে নৌকা নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অথচ ওই দুই ঘাট দিয়ে নিত্য পারাপার করেন লক্ষ্মীজনার্দনপুর পঞ্চায়েতের কেদারপুর, মহেশপুর, পূর্ব দ্বারিকাপুর ও হেড়ম্বগোপালপুর পঞ্চায়েতের পূর্ব সুরেন্দ্রনগর, কুয়েমুড়ি, দক্ষিণ কাশীনগর গ্রামের বহু বাসিন্দা। নিত্য প্রয়োজনে পাথরপ্রতিমা ব্লক, থানা, গ্রামীণ হাসপাতাল বা কলেজে আসতে হলে ওই নদী পার হতে হয়। এমনকী কাকদ্বীপ মহকুমা শহরে আসতে হয় ওই নদী পথ পার হয়েই। কেদারপুর গ্রামে একটি বড় হাইস্কুল রয়েছে। দূর দূরান্ত থেকে ওই স্কুলে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা আসেন।

Advertisement

এলাকার বাসিন্দা সুকদেব বেরা, কাশীনাথ মাইতিদের অভিযোগ, বেহাল ঘাটের কারণে ভয়ে ভয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। মুমূর্ষু রোগী নিয়ে ওঠানামা করা যায় না। জেটি ঘাটটি কংক্রিটের করার জন্য পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। তবে ফল হয়নি। পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে ওই জেটিঘাটে নৌকা পারাপারের কাজ করেন সোমনাথ দাস ও রাধাকৃষ্ণ দাস। তাঁদের অভিযোগ, বেহাল জেটি ঘাটটি কংক্রিটের করার জন্য কয়েক মাস আগে মাপজোক ও মাটি পরীক্ষা করে গিয়েছে। কিন্ত এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ঘাটের সমস্যা নিয়ে একাধিকবার পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতিতেও জানানো হয়েছে। পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ রাজ্জাক বলেন, “ওই ঘাটটি সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.