Advertisement
E-Paper

Kali Puja 2021: বাজি শুধু নয়, পুজোর রাতে মুখও পুড়ল পুলিশ-প্রশাসনের

কিন্তু হলে কী হবে, কালীপুজোর সন্ধে ঘনাতেই বাজির রোশনাইয়ে ছেয়ে গেল দুই জেলার বহু এলাকার আকাশ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২১ ০৮:৪২
নিয়ম-ভেঙে: কালীপুজোর রাতে হাতে হাতে ঘুরল বাজি। এতদিন ধরে পুলিশ-প্রশাসনের অভিযান তবে কী কাজে এল না , প্রশ্ন তুলছেন সচেতন নাগরিকেরা।

নিয়ম-ভেঙে: কালীপুজোর রাতে হাতে হাতে ঘুরল বাজি। এতদিন ধরে পুলিশ-প্রশাসনের অভিযান তবে কী কাজে এল না , প্রশ্ন তুলছেন সচেতন নাগরিকেরা। জয়নগরে তোলা নিজস্ব চিত্র।

সন্ধে নামতেই মাথা নিচু করে বসে ‘ছাত্র।’ বললেন, ‘‘আমরা কিন্তু চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু মানুষ নিজে সচেতন না হলে এ জিনিস আটকানো শুধু আমাদের কাজ নয়।’’

কথা হচ্ছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের এক কর্তার সঙ্গে। থানায় বসে বলছিলেন, গত কয়েকদিনের অভিজ্ঞতার কথা। জানালেন, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক চেষ্টা করেছিলেন বাজি বাজেয়াপ্ত করার। ধরপাকড়ও কিছু কম হয়নি।

কিন্তু হলে কী হবে, কালীপুজোর সন্ধে ঘনাতেই বাজির রোশনাইয়ে ছেয়ে গেল দুই জেলার বহু এলাকার আকাশ। অলিগলি থেকে ভেসে এল বাজি-পটকার শব্দ। পথের ধারে দেখা গেল ছোটরাও রং মশাল, তুবড়ি জ্বালাতে নেমে পড়েছে। সঙ্গে বাবা-মায়েরাও আছেন। জানেন না, বাজি পোড়ানো বন্ধ এ বার? একগাল হেসে এক অভিভাবক বললেন, ‘‘বচ্ছরকার দিন, একটু রং মশালই তো দিয়েছি বাচ্চাটার হাতে।’’ কিন্তু এ কি সবুজবাজি? প্রশ্নের উত্তরে আমতা আমতা করলেন তিনি। বললেন, ‘‘খুঁজেছিলাম জানেন। কিন্তু বাজারে সবুজ বাজি কি, কেউ জানেই না দেখলাম। এক দোকানি সবুজ রঙের একটা প্যাকেট হাতে ধরিয়ে বললেন, এটাই মনে হয় সবুজ বাজি।’’

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জুড়ে প্রচুর শব্দবাজি, আতশবাজি ফেটেছে। আদালত নির্ধারিত রাত ৮টা-থেকে ১০টার নিয়মবিধি কেউ জানেন বলেও মনে হল না। সন্ধে নামতেই শুরু হল বাজির উৎসব। ক্যানিংয়ে সন্ধ্যা হতেই চার দিক থেকে বাজি ফাটার আওয়াজ পাওয়া গিয়েছে। অন্যবারের মতো এ বার পুজোর আগে থেকে বাজারে বাজারে বাজির দোকান তেমন চোখে পড়েনি। তবে বৃহস্পতিবার সকালে ক্যানিং, বাসন্তী ও গোসাবার বিভিন্ন এলাকায় বাজির দোকান বসতে দেখা যায়। গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহর এলাকায় বাজির দাপট ছিল বেশি। এ দিন ক্যানিংয়ের তালতলা এলাকা থেকে প্রায় আড়াই হাজার শব্দবাজি আটক করেছে পুলিশ।

বাজি নিয়ে অভিযান চলেছে ডায়মন্ড হারবারেও। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শব্দবাজি মজুত রাখার অভিযোগে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরেও লাগাতার ধরপাকড় চলে।

উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় সন্ধে থেকে শব্দবাজি ফেটেছে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে বাজির দাপট। এ দিকে, গাইঘাটা থানার পুলিশ বুধবার রাতে স্থানীয় বাজার থেকে ৯ কেজি শব্দবাজি আটক করে। বাজি বিক্রির অভিযোগে বিষ্ণুগোপাল সাহা নামে এক কারবারিকে গ্রেফতারও করা হয়। বাগদা থেকেও নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রির অভিযোগে প্রশান্ত রায় ও অভিজিৎ মণ্ডল নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রশান্তর কাছ থেকে ২৫ প্যাকেট চকলেট বোম ও অভিজিতের কাছ থেকে ৫০ প্যাকেট চকলেট বোম উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার রাতে মিনাখাঁ থানার পুলিশ মালঞ্চ বাজারে হানা দিয়ে মানবেন্দ্রনাথ পাল, রাকেশ দাস ও চন্দন দাসকে শব্দবাজি বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ২০ কেজি শব্দবাজি। বসিরহাট থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে হারান কুণ্ডু নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে প্রায় ৮০ কিলো শব্দবাজি উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয় তাকে। ন্যাজাট থানার পুলিশ কালীনগর বাজারে হানা দিয়ে প্রায় ১০ কেজি শব্দবাজি উদ্ধার করেছে। মাটিয়া, সন্দেশখালি, বাদুড়িয়া, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, হাড়োয়া থানার পুলিশও বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৫০ কেজি শব্দ বাজি উদ্ধার করেছে। হাসনাবাদ থানার ভেবিয়া বাজারে শব্দবাজি উদ্ধার করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের হাতে আক্রান্ত হয় পুলিশ। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কিন্তু এত সবের পরেও বাজি এত এল কোথা থেকে? ক্যানিংয়ের এক ব্যবসায়ীর যুক্তি, কারখানায় বাজি তৈরি হয়েছে কম। কিন্তু গতবারের অবিক্রিত বাজি থেকে গিয়েছে। সে সবই বিক্রি হয়েছে চোরাগোপ্তা।

তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় বাজির দাপট কম বলে জানাচ্ছেন দুই জেলার বাসিন্দারা। সেটুকুই সান্ত্বনা পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক পুলিশ কর্তা বললেন, ‘‘ভাল পরীক্ষা দিয়েও তো ছাত্ররা ফেল করে। আমাদের অবস্থা হয়েছে খানিকটা সে রকমই।’’

Kali Puja 2021 Firecrackers jaynagar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy