Advertisement
E-Paper

বিয়ে রুখতে ‘কন্যাশ্রী ক্লাব’

কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বুদ্ধদেব দাস বলেন, ‘‘বাল্যবিবাহ আটকানোর সঙ্গে সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে প্রচার এবং সচেতনতাও দরকার ছিল। তাই বিভিন্ন দফতর নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করার সঙ্গে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও এই নেটওয়ার্ককে আরও জোরদার করতেই এই প্রয়াস।’’

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ০৪:১০

রেখা কালিন্দী, বীণা কালিন্দীর উদাহরণ সামনে রেখে নাবালিকার বিয়ে আটকাতে সর্বত্রই সতর্ক হয়েছে প্রশাসন। মানুষের সচেতনতাও বাড়ছে। মেয়েরা নিজেরা কখনও নিজেদের বিয়ের খবর জানিয়ে দিচ্ছে থানায়। কখনও এলাকা থেকেও খবর যাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন-স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে। আটকানো যাচ্ছে নাবালিকা বিয়ে। পুলিশের ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ প্রকল্পও কাজে এসেছে। কিন্তু তারপরেও থেকে যাচ্ছে বিশাল ফাঁক। গাঁয়ে-গঞ্জে নাবালিকার বিয়ে এখনও পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি।

আর এ দিকে তাকিয়েই এ বার নতুন পরিকল্পনা করেছে কাকদ্বীপ ব্লক। তৈরি করা হচ্ছে ‘কন্যাশ্রী ক্লাব’।

কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বুদ্ধদেব দাস বলেন, ‘‘বাল্যবিবাহ আটকানোর সঙ্গে সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে প্রচার এবং সচেতনতাও দরকার ছিল। তাই বিভিন্ন দফতর নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করার সঙ্গে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও এই নেটওয়ার্ককে আরও জোরদার করতেই এই প্রয়াস।’’

ব্লকে শিশু সুরক্ষা অফিসার, পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিই এত দিন নাবালিকার বিয়ে বন্ধের উদ্যোগ করত, খবরাখবর দিত। এ বার স্কুলছাত্রী থেকে শুরু করে আশাকর্মী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীকেও যুক্ত করছে প্রশাসন।

কী ভাবে কাজ করবে কন্যাশ্রী ক্লাব?

জানা গিয়েছে, এলাকায় স্কুল পড়ুয়া কোনও নাবালিকার বিয়ে হলে সব থেকে আগে জানতে পারে সহপাঠিনীরা। তাই প্রতিটি ক্লাসের প্রতিটি সেকশন থেকে দু’জন করে মেয়ে নিয়ে একটি করে ‘কোর কমিটি’ গড়া হবে। কমিটির মাথায় থাকছেন ক্লাসটিচার এবং প্রধান শিক্ষকেরা। নাবালিকার বিয়ের খবর পেলে তারাই শিক্ষককে জানাবে, প্রাথমিক ভাবে প্রধান শিক্ষক মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলবেন। ইতিমধ্যেই কাকদ্বীপের কয়েকটি স্কুল এই কাজ শুরু করে দিয়েছে।

রবীন্দ্র পঞ্চায়েতের কুমারপুর-জহরপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক নির্মল পড়ুয়া সম্প্রতি একটি বিয়ে আটকেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে শীঘ্রই প্রতিটি সেকশনে ওই কমিটি গড়ার কাজ শুরু করছি।’’ একই কথা জানিয়েছেন কাকদ্বীপ শিশু শিক্ষায়তনের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ প্রামাণিকও।

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা এবং আশাকর্মীরাও যৌথ ভাবে মেয়েটির বাড়িতে যাবে বলে ঠিক হয়েছে। আঠারো বয়স না হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া ঠিক নয় বলে বোঝাবেন তাঁরা। এরপরেও যদি মেয়ের পরিবার মানতে না চান, তখন ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশ কর্তারা হাজির হবেন।

ব্লকের এক পুলিশ অফিসার বলেন, ‘‘আমরা চাইছি, মেয়ের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলার প্রক্রিয়াটা অনেক আগে থেকে শুরু হোক। তা না হলে, শেষ মুহূর্তে খবর পেয়ে বিয়ের আসরে গিয়ে বিয়ে ভাঙায় যেমন মানসিক ক্ষতি করতে পারে, তেমনই অভিভাবকদের আর্থিক ক্ষতিও হয়।’’

স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলিকেও এই কাজে যুক্ত করা হচ্ছে। প্রতি মাসে বিয়ের দিন দেখে আশা ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সচেতন করা হবে। কোথায় স্কুলছুট ছাত্রী রয়েছে, কেন রয়েছে এ সব হিসেব রাখা হবে। মাসের শেষে কতগুলি নাবালিকার বিয়ে আটকানো গেল, মূলত কী কারণে এই বিয়ে হচ্ছিল— এ সবের খতিয়ান ব্লক অফিসে জমা করতে হবে পঞ্চায়েতগুলিকে।

Kanyashree Minor Marriage কাকদ্বীপ কন্যাশ্রী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy