ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘদিন পরে চালু হল ঠিকই, কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়ল সাগরের কিসান মান্ডি।
ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই আসতে চাইছেন না মান্ডিতে। গত কয়েক মাস ধরে মান্ডিতে একমাত্র পানের ব্যবসা শুরু হয়েছিল। কিন্তু আড়তদারদের সঙ্গে পুলিশের মনোমালিন্যের জন্য কিছু দিন হল তা-ও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কৃষিপণ্যের বেচাকেনার বাজারটি ফের নতুন করে কবে চালু হবে, তা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
মাস ছ’য়েক আগে রুদ্রনগরে কিসান মান্ডি শুরু হয়। প্রথমে বেশ কিছু খুচরো ও পাইকারি ব্যবসায়ী আগ্রহী হয়েছিলেন, উৎপাদিত পণ্য এখানে এনে বিক্রি করতে। কিন্তু ধীরে ধীরে উৎসাহ হারাতে থাকেন তাঁরা। তবে সপ্তাহে তিন দিন পানের বাজার বসত। কিন্তু তাঁরাও ইদানীং পুরনো জায়গায় ফিরে গিয়েছেন।
অভিনব সুন্দরবন পান বাজারের সভাপতি তপন বারিকের অভিযোগ, ‘‘বাজারের শেষে রাতে হিসেব নিকেশ করার সময়ে পুলিশ এসে আমাদের হেনস্থা করে। তারপর থেকেই প্রতিবাদে চৌরঙ্গিতে পুরনো পান বাজারে ফিরে গিয়েছেন আড়তদাররা।’’
যদিও পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, রাত হলেই মদের আসর বসছিল বাজারে। তা নিয়ে ধরপাকড় শুরু হওয়ায় এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ক্ষুব্ধ হয়েছেন। যদিও কোনও অভিযোগ বা মামলা এ নিয়ে হয়নি। সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা আশ্বাস দিয়েছেন, সামান্য ঝামেলা ছিল, তা দ্রুত মিটিয়ে নেওয়া হবে।
রোজকার পাইকারি বাজার নিয়ে পানের বাইরেও মূল সমস্যা রয়ে গিয়েছে। উচ্ছে, ঝিঙের মতো প্রচুর আনাজ উৎপাদন হয় সাগরে। মেদিনীপুর, কাকদ্বীপ থেকেও স্থানীয় বাজারগুলিতে আসেন প্রচুর পাইকারি বিক্রেতা। দূর-দূরান্ত থেকে প্রান্তিক কৃষকেরা কিসান মান্ডিতে না আসতে পারলেও পাইকারি বিক্রেতারা আসতেই পারেন। কিন্তু চৌরঙ্গি, রুদ্রনগরের কোনও পাইকারই আসতে চাইছেন না কিসান মান্ডিতে। ব্যবসায়ীদের দাবি, ব্লকের একমাত্র কিসান মান্ডিতে সমস্ত জায়গা থেকে বড় পাইকারদের আনার ব্যাপারে ব্লক প্রশাসন এবং বিধায়ক চেষ্টা করা সত্ত্বেও ফল হয়নি। মান্ডি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পাইকারি বাজার বসলেও সেখানে কেন আসতে চাইছেন না তাঁরা?
চৌরঙ্গির আনাজ পাইকার ভবশঙ্কর বেরা বলেন, ‘‘প্রথমে কিছু দিন গিয়েছিলাম। কিন্তু দেখলাম কৃষক এবং বড় পাইকাররাও বাজারে না এসে চৌরঙ্গি এবং রুদ্রনগরেই বাজার করছেন। বেচাকেনা না হলে আর সেখানে গিয়ে কী হবে?’’
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, চৌরঙ্গি এবং রুদ্রনগরের কয়েকটি খুচরো এবং পাইকারি বাজার একেবারে বন্ধ করে না দিলে কিসান মান্ডি নতুন করে চালু করতে সমস্যা হবে। তবে ভোট এগিয়ে আসছে বলে দুম করে স্থানীয় বাজারগুলি তুলে দিতেও চাইছে না শাসকদল। তাই সাগরের কিসান মান্ডি আপাতত চালু হওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিতই রয়ে যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy